শিরোনাম :
ঈদের আগে জাল নোট ঝুঁকি, সতর্ক করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে সমস্ত ব্যাংকগুলোর ওপর জারী করা কেন্দ্র এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ঈদের আগে নোট জালকারী চক্রের ‘অপতৎপরতা’ বাড়ে এবং তার জন্য কিছু ব্যবস্থা নিতে হবে।
একই সাথে কীভাবে জাল নোট সহজে চেনা যায় – সে সম্পর্কেও নির্দেশনাগুলো নতুন করে মনে করিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কীভাবে চেনা যাবে জাল নোট?
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, সাধারণ মানুষজন যাতে সহজে জাল নোট সনাক্ত করতে পারে তার জন্য তারা নানাধরনের সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাচ্ছেন।
বিভিন্ন ব্যাংক ব্রাঞ্চের ভেতরে ছাড়াও, পুরো রোজার সময় বিভিন্ন বিভাগীয় শহরের ব্যস্ত মোড়ে বড় স্ক্রিনে সন্ধ্যায় এ সম্পর্কিত ভিডিও দেখানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এগুলো দেখে মানুষ কীভাবে জাল জোট সনাক্ত করতে পারবে?
কেন্দ্রীয় ব্যাংক মানুষজনকে সাধারণ কিছু ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করছে। যেমন:
– ২০ টাকা এবং তদূর্ধ্ব মূল্যমানের আসল নোটের ওপরের প্রতিচ্ছবি, লেখা মূল্যমান এবং নকশার ওপর হাত বুলালে তা অমসৃণ, খসখসে লাগবে। জাল নোটে তেমন বোধ হবেনা ।
– ১০ টাকা এবং তদূর্ধ্ব মূল্যমানের নোটের ওপর নিরাপত্তা সুতো সেলাইয়ের মতো ফোঁড়া থাকে। এছাড়া, আলোর বিপরীতে ধরলের বাঘের মাথার জলছাপ স্পষ্ট দেখা যায়। জা লনোটের সুতা বা জলছাপ এত সূক্ষ্ম থাকেনা।
– আসল নোটে রং পরিবর্তনশীল কালি ব্যবহার করা হয়। ২০০০ সাল থেকে মুদ্রিত ৫০০ টাকার নোটের সামনের পিঠের ওপরের বাঁ দিকের কোণার ওপরের অংশ নাড়াচাড়া করলে রং পরিবর্তন হতে থাকে। সবুজ থেকে সোনালী আবার সবুজ হতে থকে। জাল নোটে এই রং পরিবর্তন হয়না।
ব্যাংগুলোকেও বলা হয়েছে- গ্রাহকদের কাছে থেকে টাকা নেওয়া এবং দেওয়ার আগে ভালো করে নোটগুলো পরীক্ষা করতে হবে।
নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন এটিএম মেশিনে টাকা ঢোকানোর আগে জাল নোট সনাক্তকারী মেশিন দিয়ে নোটগুলো অবশ্যই পরীক্ষা করা হয়। ব্যাংকের শাখাগুলোতে টিভি মনিটরে জাল নোট সনাক্তকরণ সম্পর্কে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তৈরি ভিডিও প্রদর্শন করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, এই নির্দেশনা “অতীব জরুরী।”
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কারেন্সি ব্যবস্থাপনা বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার সুলতান মাসুদ আহমেদ বলেন, জাল নোটের সমস্যা বাংলাদেশে এখনও প্রকট সমস্যা হয়ে ওঠেনি, তবে দুই ঈদের আগে জাল নোট চক্রের তৎপরতা বাড়ে। বিশেষ করে বড় নোটগুলো যেমন ৫০০ এবং ১০০০ টাকা মূল্যমানের জাল নোট চালানোর চেষ্টা করা হয়।
“সে জন্যই এই সতর্কতা, গত ক’বছর ধরেই আমরা এই সতর্কতা জারী করছি।”
তিনি জানান, জাল নোটের তৎপরতা ঠেকানোর লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সম্প্রতি সরকারের কাছে নতুন একটি কঠোরতর আইনের প্রস্তাব সরকারের কাছে পাঠিয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে জাল নোট অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
তারপরও প্রায় মানুষের হাতে জাল নোট চলে আসার ঘটনা ঘটছে এবং প্রতিমাসেই বেশ কিছু মামলাও হচ্ছে।
খুলনার বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবসায়ী সাইফুল আলম বলছেন, সম্প্রতি জাল নোটের প্রকোপ কিছুটা কমেছে, তারপরও প্রতিমাসে একটি-দুটি জাল নোট তার হাতে আসে। প্রধানত এক হাজার টাকার জাল নোট। “প্রতিটা বড় নোট খুঁটিয়ে দেখতে হয়, সন্দেহ হলে ম্যাগনিফাইং কাঁচ দিয়ে দেখি।”
সতর্ক হলেও যদি কারো হাতে জাল নোট চলে আসে, কী করা উচিৎ তার?
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুলতান আহমেদ মাসুদ বলছেন, মানুষের উচিৎ সাথে সাথে সেটা ছিঁড়ে ফেলে দেওয়া।
আরবি.আরপি.২২ মে, ২০১৮