ঢাকা ,
বার : শনিবার
তারিখ : ০৪ মে ২০২৪
বাংলা : ২১ বৈশাখ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা সম্পাদকীয় উপ-সম্পাদকীয় আজ বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস

আজ বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস

0
269
প্রতিবছর ১২ জুন বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস পালন করা হয় (ছবি: সময় নিউজ)

ডিসিনিউজ

আজ বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস। শিশুশ্রমের বিষয়ে বিশ্বের সকল দেশে নিজস্ব আইন রয়েছে। এ ছাড়াও জাতিসংঘ কর্তৃক শিশুশ্রমের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে। বিশ্বের কোনো দেশই শিশুশ্রম প্রশ্রয় দেয় না। এরপর পুঁজিবাদী ব্যক্তিরা তাদের মুনাফা লাভের আশায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে সম্পৃক্ত করেন। শিশু সুরক্ষার তাগিদে জাতিসংঘ নানামুখী কর্মদ্যোগ গ্রহণ করেছে বিভিন্ন সময়ে।

শিশুদের অধিকার, সুরক্ষা ও ঝঁকিপূর্ণ শ্রম প্রতিরোধের লক্ষে ১৯৮৯ সালের ২০ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ‘জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ’ অনুমোদিত হয়। ১৯৯২ সালে আর্ন্তজাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) শিশুশ্রম বন্ধ করতে কর্মসূচি নেয় এবং শিশুশ্রমের অবলুপ্তির লক্ষে আন্তর্জাতিক (আইএলও) ২০০২ সালের ১২ জুন বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবসের সূচনা করেছিল। শিশুদের স্বপ্ন যেন কেউ ছিনিয়ে নিতে না পারে, এর জন্যই এই দিনটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আর তাই প্রতিবছর ১২ জুন বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস পালন করা হয়। বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়।

এই দিবসের তাৎপর্য:
উনিশ বছর (১৯) আগে ২০০২ সালে বিশ^ শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবসের সূচনা করেছিল আর্ন্তজাতিক শ্রম সংস্থা। প্রতিবছর এমনভাবে কোনও না কোন বিষয় গ্রহণ করা হয়। আইন অনুসারে, ৫ থেকে ১১ বছরের কোনও শিশু দৈনিক এক ঘন্টা কাজ করলে ও ১২ থেকে ১৪ বছরের শিশু সপ্তাহে ১৪ ঘন্টা কাজ করলে তা শিশুশ্রমের মধ্যে ধরা হয়। এই শিশুশ্রম বন্ধ করতেই পালিত হচ্ছে শিশুশ্রম বিরোধী দিবস। ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের শ্রম না করিয়ে তাদের শিক্ষার সুযোগ দান ও অগ্রগতির লক্ষ্যে সচেতনতার প্রসারই এই দিবসের লক্ষ্য। কোনও শিশুর চোখের স্বপ্ন ও শৈশব যেন অকালেই ঝড়ে না পড়ে, সেই লক্ষ্যেই এই দিবসটি উদযাপন করা। এছাড়াও প্রতি বছর এই দিবসটি উদযাপন করার উদ্দেশ্য বা লক্ষ্যই হলো এর সচেতনতা প্রসার। এই সচেতনতা প্রসারের লক্ষ্যে এই দিনটি সমগ্র বিশে^ই বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে। শিশুশ্রম রোধ করা ও বিলুপ্তই এই দিবসের প্রধান উদ্দেশ্য। এই দিনটিতে শিশু শ্রমিকদের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরে সচেতনতা প্রসার করা হয়। বিভিন্ন সরকারি সংস্থা, এনজিও, শ্রমিক সংগঠন, নাগরিক সমাজ তথা লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। শুধু তাই নয়, শিশু, শ্রমিকদের সাহায্যে এগিয়ে আসার লক্ষে ও প্রচার চালানো হয়।

এমন অনেক শিশুই রয়েছে, যারা খুব অল্প বয়সেই তাদের শৈশব হারিয়ে ফেলে। ৫ থেকে ১৭ বছরের অনেক শিশুরাই বিভিন্ন অনৈতিক খারাপ কাজের সংঙ্গে যুক্ত হয়ে তারা তাদের শৈশব থেকে ঝরে হয়ে পড়ে। খাদ্য,বস্ত্র, শিক্ষা, বাসস্থান ও চিকিৎসা সুবিধা তারা পায় না।

বিষয়বস্তু ও তাৎপর্য:
প্রত্যেক বছরই বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবসের ভিন্ন ভিন্ন বিষয়বস্তু স্থির করা হয়। ২০২২‘এর বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস থিম ছিল – ‘শিশুশ্রম বন্ধে সর্বজনীন সামাজিক সুরক্ষা’। ২০২১‘র বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবসের থিম ছিল – ‘করোনা ভাইরাস পর্বে শিশুদের সুরক্ষা’। ২০২০‘র বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবসের থিম ছিল – ‘কোভিড-১৯: শিশুশ্রম থেকে শিশুদের রক্ষা করুন’, এখন এর প্রয়োজন বেশি কারণ কোভিড- ১৯ সংক্রমণের কারণে বিভিন্ন দেশে লকডাউন জারি হয়। এর প্রভাব বহু মানুষের জীবনে পড়েছে ফলে বহু শিশুর জীবনেও এর প্রভাব পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে অনেক শিশুকেই শিশুশ্রমের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল তখন আর তাই ২০২১ এর থিম করা হয়েছিল ‘করোনা ভাইরাস পর্বে শিশুদের সুরক্ষা’। ২০১৯‘ এর থিম – শিশুদের ক্ষেতের কাজে নয় বরং স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে কাজ করা উচিত। ২০১৮ সালের থিম ছিল – নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর প্রজন্ম। বিশ্ব শিশুশ্রম বিরোধী দিবসটির ২০১৭-র প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘দ্বন্ধ ও বিপর্যয়ের মধ্যে শিশু মজুরি থেকে শিশুদের রক্ষা করুন’। ২০১৬ ‘সালের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল – সাপ্লাই টেইনে শিশুকে শ্রমকে শেষ করা, এটি প্রত্যেকের দায়িত্ব।

এই শিশুশ্রম বন্ধেই পালিত হচ্ছে, শিশু শ্রম প্রতিরোধ দিবস। দরিদ্রতার কারণে অধিকাংশ শিশুদের কাজ করতে হচ্ছে। জীবনের তাগিদে এই সমস্ত শিশুরা কাজ করতে গিয়ে পড়াশুনা করার সুযোগ পাচ্ছে না। সমাজ ও দেশের এই সমস্যা সমাধানে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসতে এসে কাজ করতে হবে তবেই এই সমস্ত সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা সম্ভব।

ওদের হাতে বস্তা বা হাতুরি নয়, কলম আর বই থাকুক। দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্যই শিশুশ্রম প্রতিরোধ করা প্রত্যেকের দায়িত্ব ও কর্তব্য।