শিরোনাম :
কাফরুল সেন্ট লরেন্স কোয়াজি চার্চের পর্ব পালন
ডিসিনিউজ ।। ঢাকা
মহানন্দ ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে কাফরুলে সেন্ট লরেন্স কোয়াজি চার্চের পর্ব পালিত হলো।
২০ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায় পর্বীয় খ্রিষ্টযাগের মাধ্যমে পর্বদিবসের কার্যক্রম শুরু হয়। ঢাকার আর্চবিশপ কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও সিএসসি পর্ব দিবসের খ্রিষ্টযাগ উৎসর্গ করেন। তাঁকে সহযোগিতা করেন সেন্ট লরেন্স চার্চের পাল-পুরোহিত যাকোব গমেজ। এ ছাড়াও খ্রিষ্টযাগে আরো সহযোগিতা করেন ফাদার আবেল বি. রোজারিও, ফাদার লেনার্ড, ফাদার তুষার গমেজ সিএসসি, ফাদার ডেভিড গমেজসহ আরো অনেকে।
পর্বীয় খ্রিষ্টযাগসহ পর্বের বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেন ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট পংকজ গিলবার্ট কস্তা, বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিওসহ প্যারিস কাউন্সিলের সদস্য ও খ্রিষ্টভক্তরা।
পর্বদিবসে কার্ডিনাল প্যাট্রিক বলেন, ‘আজ আমরা মিলনানন্দে মিলিত হয়েছি। এই ধর্মপল্লীর খ্রিষ্টভক্তদের আজ গর্বের ও আনন্দের দিন। আমরা সকলে মিলে এক মিলন-সমাজ গড়ে তুলেছি। কাফরুলবাসী নিজেদের উদ্যোগে সাধু লরেন্সের পর্ব পালন করছে, আমরা তাদের সাথে একাত্মতা জানাই।’
‘এই পর্বদিবসে কাফরুলের খ্রিষ্টভক্তরা একটি নতুন ভবন উদ্বোধন করতে যাচ্ছে। সকলের মিলিত প্রচেষ্টায় ভাল কিছু করা সম্ভব, তা কাফরুলের খ্রিষ্টভক্তরা এই নতুন ভবনের মাধ্যমে করে দেখিয়েছে। এটি ঈশ্বরের মহাদান’ যোগ করেন কার্ডিনাল প্যাট্রিক।
এ ছাড়াও পর্বদিবসে বৃক্ষ রোপন কর্মসূচি উপলক্ষে তিনি বলেন, ‘পূণ্যপিতা ধরিত্রী মাতাকে বাঁচাতে বৃক্ষ রোপনের উপর জোর দিয়েছেন। পূণ্যপিতা এই বছরকে ‘লাউদাতো সি’ (প্রকৃতিবর্ষ) হিসেবে ঘোষণা করেছেন। পোপ মহোদয় সবাইকে বৃক্ষ রোপন করে ধরিত্রী মাতাকে সজীব রাখতে আহ্বান করেছেন। এ ছাড়াও মুজিববর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বছর বৃক্ষ রোপন কর্মসূচির ঘোষণা করেছেন। আমরা খ্রিষ্টমন্ডলী মোট ১০ লক্ষ বৃক্ষ রোপন করে পূণ্যপিতা পোপ ফ্রান্সিস ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছি।’
সেন্ট লরেন্স চার্চের পর্বদিবস উপলক্ষে অঞ্জলী নামে একটি স্মরণিকা প্রকাশ করা হয়। খ্রিষ্টযাগের পর কার্ডিনালের সাথে অতিথিরা পর্বীয় স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করেন।
এ ছাড়াও পর্বদিবসে চার্চের নতুন ভবন উদ্বোধন করেন কার্ডিনাল প্যাট্রিক ও অন্যান্য অতিথিরা। তাঁরা ভবনের নামফলক উন্মোচন করে ও ফিটা কেটে নতুন ভবনের শুভ উদ্বোধন করেন।
এ সময় পূণ্যপিতা পোপ ফ্রান্সিস ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে একাত্মতা জানিয়ে নতুন ভবনের সামনে কার্ডিনাল ও অতিথিরা বৃক্ষ রোপনের অংশ হিসেবে একটি ক্রিস্টমাস-ট্রি রোপন করেন। একইভাবে ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট পংকজ গিলবার্ট কস্তা, এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও এককভাবে গির্জা প্রাঙ্গনে বৃক্ষ রোপন করেন।
এ সময় ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট কস্তা ডিসিনিউজকে বলেন, ‘আজ কাফরুলবাসীকে পর্বীয় শুভেচ্ছা জানাই। ভাবগাম্ভীর্যের মাধ্যমে তারা সাধু লরেন্স গির্জার পর্ব পালন করছেন। আমরাও এই আনন্দের সহভাগী হয়েছি।’
‘পূণ্যপিতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ও এই মুজিববর্ষে কার্ডিনাল প্যাট্রিকের নেতৃত্বে আমরা ঢাকা ক্রেডিটের মাধ্যমে বৃক্ষ রোপন কার্যক্রম শুরু করেছি। ইতিমধ্যে ঢাকা ক্রেডিটের উদ্যোগে ও সদস্যদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃক্ষ রোপন করেছি। আমরা ২ লক্ষ বৃক্ষ রোপন করবো এই মর্মে উদ্যোগ নিয়েছি’ বলেন প্রেসিডেন্ট পংকজ গিলবার্ট কস্তা।
এ সময় বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও কাফরুলবাসীকে পর্বীয় শুভেচ্ছা জানান। তিনি সকলের সাথে সাধু লরেন্স গির্জার পর্বের আনন্দ সহভাগিতার জন্য আহ্বান জানান।
তিনি কার্ডিনালের নেতৃত্বে পূণ্যপিতা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সবাইকে সাড়া দিয়ে বৃক্ষ রোপন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী ও কার্ডিনালের ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় ও শাখা সংগঠন পর্যায়ে বৃক্ষ রোপন কর্মসূচি শুরু করেছি। পূর্বে আমরা ১০ হাজার বৃক্ষ রোপনের ঘোষণা দিয়েছিলাম, কিন্তু বিভিন্ন শাখা সংগঠনের বৃক্ষ রোপন কার্যক্রম দেখে এই সংখ্যা আরো বাড়বে বলে মনে করছি।’
বেলা ১২টায় খ্রিষ্টভক্তদের ভক্তিপূর্ণ ও সক্রিয় অংশগ্রহণে কাফরুল কোয়াজি চার্চের পর্বীয় অনুষ্ঠান শেষ হয়।