শিরোনাম :
খ্রিষ্টভক্তদের অক্টোবর বিশেষ প্রৈরিতিক মাস পালনের আহ্বান আর্চবিশপ মজেসের
‘সকল যাজক, ব্রতধারী-ব্রতধারিণী ও খ্রিস্টভক্তজনগণকে বাংলাদেশ কাথলীক বিশপ সম্মিলনীর পক্ষ থেকে আন্তরীক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই। পুণ্য পিতা পোপ ফ্রান্সিস, বিশ্বের কাথলিক মন্ডলীর সকলকে অক্টোবর মাস ২০১৯ খ্রিস্টাব্দ ‘বিশেষ প্রৈরিতিক মাস’ (Extraordinary Missionary Month) হিসাবে বিশেষ প্রার্থনা ও অর্থপূর্ণভাবে পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন। অক্টোবর ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দ অন্য বছরের চেয়ে আলাদা, কেননা এ বছর হল পোপ পঞ্চদশ বেনেডিক্ট কর্তৃক লিখিত সার্বজনীন পত্র “Maximum Illud” এর শতবার্ষিকী।’ বলেন আর্চবিশপ মজেস এম কস্তা সিএসসি (সুত্র প্রতিবেশী)। আর্চবিশপ মজেস বাংলাদেশ কাথলীক বিশপ সম্মিলনীর সেক্রেটারি জেনারেল।
“দীক্ষিত ও প্রেরিত” শব্দ দুটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, খ্রিষ্টেতে দীক্ষাগুণে আমরা সকলেই প্রেরিত। প্রেরণ আমাদের আহ্বান। প্রত্যেকজন খ্রিষ্টভক্তই খ্রিষ্টে দীক্ষিত এবং জগতের কাছে প্রেরিত।
তিনি বলেন, পুণ্যপিতা পোপ ফ্রান্সিস আহ্বান জানান- সকল খ্রিষ্টাবশ্বাসীভক্ত যেন নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর প্রতি সবিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেন।
প্রথমত : বিশ্বাসের জীবন : যিশুর সাথে ব্যক্তিগত সাক্ষাতের অভিজ্ঞতা করা, যে যিশু খ্রিষ্টযাগে, ঐশবাণীতে, ব্যক্তিগত ও সমবেত প্রার্থনায় উপস্থিত থাকেন;
দ্বিতীয়ত : জীবন সাক্ষ্য : সকল খ্রিষ্টবিশ্বাসী যেন সাধু-সাধ্বী ও ধর্মশহীদ বা সাক্ষ্যমরদের জীবনের মূল্য, তাদের জীবনে পুনরায় আবিষ্কার করেন;
তৃতীয়ত : প্রৈরিতিক গঠন : মিশনের কাজের জন্য বাইবেলীয়, ধর্মশিক্ষা সংক্রান্ত, আধ্যাত্মিক এবং ঐশতাত্ত্বিক গঠন গভীর করা; এবং
চতুর্থত : প্রৈরিতিক দয়ার কাজ : যাদের সাহায্য দরকার তাদের জন্য বিশেষ দয়ার কাজ করা, ন্যায্যতা ও শান্তি স্থাপনের কাজ করা।
চট্টগ্রামের ধর্মপাল আর্চবিশপ মজেস আরো বলেন, পুণ্যপিতার সাথে একাত্মতা প্রকাশ ক’রে আমরা বাংলাদেশ কাথলিক বিশপ সম্মিলনী, সকল যাজক, ব্রতধারী-ব্রতধারিণী ও খ্রিষ্টভক্তজনের প্রতি জোরালো আবেদন রাখি। সকলকেই গুরুত্বের সাথে অক্টোবর মাস ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে ‘বিশেষ প্রৈরিতিক মাস’ হিসাবে পালন করতে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জোরদার করার আহ্বান জানাই;
- প্রেরণারকাজ ও মিশনারীদের জন্য ব্যক্তিগতভাবে ও পারিবারিকভাবে প্রার্থনা করা;
- বাইবেল পাঠ ক’রে খ্রিষ্টজ্ঞান লাভ করা, খ্রিষ্টের জীবন ধ্যান করা এবং খ্রিষ্টীয় জীবন-যাপন করা।
- ধর্মশিক্ষা গভীরভাবে লাভ করা এবং সন্তানদের ধর্মশিক্ষা দান আরো জোরালো করা।
- সাধু-সাধ্বীদের জীবনী পাঠ করা এবং তাদের জীবন ধ্যান ক’রে জীবন সাক্ষ্যদানে আরো অনুপ্রাণিত হওয়া;
- প্রেরিতগণের রাণী মা মারীয়ার প্রতি ভক্তি প্রদর্শনার্থে নিয়মিতভাবে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক মালা প্রার্থনা করা;
- গ্রাম/ব্লক পর্যায়ে সমবেত প্রার্থনা, বাইবেল সহভাগিতা ও প্রেরণকাজ বিষয়ক আলাপ-আলোচনা করা;
- ধর্মপল্লী পর্যায়ে ‘বিশেষ প্রৈরতিক মাস’ অক্টোবরে বিশেষ প্রার্থনা, নভেনা/ ত্রিদিবসিক প্রার্থনা করা;
- খ্রিস্টভক্তজনগণের মাঝে প্রৈরিতিক চেতনা দান করতে ধর্মপল্লী, গ্রাম ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পর্যায়ে সভা/সেমিনার করা;
- মঙ্গলবাণী প্রচারের কাজে অর্থ সাহায্য প্রদান করা, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ত্যাগস্বীকারের অর্থ দান করা;
সর্বোপরি নিজেদের অন্তরে যিশুর বাণী গেঁথে রাখা : “তোমরা জগতের সবত্রই যাও; বিশ্বসৃষ্টির কাছে ঘোষণা কর মঙ্গলসমাচার।” আমরা সকলেই যেন দীক্ষিতজন হিসাবে প্রেরিতজন হওয়ার সুন্দর মনোভাব নিয়ে সর্বদা জীবন যাপন করি।