শিরোনাম :
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পাহাড়ের চূড়া ও পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বাস করছে প্রায় ১০ হাজার পরিবার
রাঙ্গুনিয়া উপজেলার উল্লেখযোগ্য এলাকা পাহাড় পরিবেষ্টিত। এইসব পাহাড়ের চূড়া ও পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাস করছে প্রায় ১০ হাজার পরিবার।
এসব পরিবার পাহাড়ের চূড়া ও পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসতঘর গড়ে তুলেছে। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে অনেক বসতঘর পাহাড়ের মাটি ধসে চাপা পড়ে যায়। ঘটে হতাহতের ঘটনাও। কিন্তু তারপরও পাহাড়ে থেমে নেই ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস।
এখন বর্ষাকাল হলেও এখনো বৃষ্টির দেখা নেই। তাই প্রশাসন বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ে বসবাসকারীদের সতর্কতামূলক প্রচারণা ও উদ্যোগ চালালেও তারা খুব একটা সাড়া দিচ্ছে না।
অন্যান্য বছর এমন দিনে বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের পাশাপাশি বহু হতাহতের ঘটনা ঘটলেও তা যেন মনেই নেই পাহাড়ে বসবাসকারীদের। ফলে বর্ষা মৌসুমের বৈরী আবহাওয়ার পরিস্থিতি মোকাবেলায় কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া কঠিন হয়ে পড়বে। এতে মারাত্মক দুর্ঘটনা এড়ানো কিছুতেই সম্ভব হবে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ১৫ ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় নয় হাজার একর সরকারি ও ১৫ হাজার একর সংরক্ষিত বনভূমি রয়েছে। এসব এলাকায় প্রায় দশ হাজার বসতঘর রয়েছে।
উল্লেখ্য,, বিগত ২০১১ সালের ২৭ জুন টানা বর্ষণে রাংগিনয়ার বনগ্রামের ছয়টি স্থানে পাহাড় ধসে ১০টি বসতঘর মাটি চাপা পড়ে। রাঙ্গামাটি, বান্দরবান,, কাপ্তাইসহ বিভিন্ন স্হানে পাহাড়ধসে বহু প্রাণহানি ঘটে।
পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম জানান, ইছাখালি, গুচ্ছগ্রাম, জাকিরাবাদ, কাদের নগর ও নোয়াগাঁও পৌর এলাকায় পাহাড়ে বসবাস করছে প্রায় দেড় হাজার পরিবার। এদের অনেকে পাহাড়ের চূড়া কেটে বসতঘর তৈরি করে বসবাস করছে। গত ২০১৮ সালে কয়েকদিনের টানা বর্ষণে এসব এলাকার ছয়-সাতটি স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে।
সেখানকার বাসিন্দা আয়েশা (৪্র৫) জানান, মরিয়মনগর ইউনিয়নের বালুগোট্টা গ্রামে কর্ণফুলী নদীতে ভিটেবাড়ি হারিয়ে ২০০৯ সালে এ পাহাড়ে বসতঘর নির্মাণ করেন তিনি। কিন্তু গত ২০১১ সালের প্রবল বর্ষায় পাহাড়ের মাটি ধসে বসতঘরের নিচে চাপা পড়ে তার চার বছরের শিশু আবদুল কাদেরের কোমর ভেঙে যায়।
২০১৭ সালের ১৩ জুন মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পাহাড় ধসে এই উপজেলার দুই ইউনিয়নের দুই পরিবারের ২২ সদস্যের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। এছাড়াও ওই বছর আরো পাঁচ জায়গায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, ‘পাহাড়ের চূড়া ও পাদদেশ কেটে বসতঘর নির্মাণ না করার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় মাইকিংসহ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে অনেকের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে। তাতেও পাহাড় কেটে বসতি স্থাপন বন্ধ হয়নি। পাহাড়ে বসবাসকারী এতগুলো পরিবারকে পুনর্বাসন করাও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এ অবস্থায় পাহাড়ধসের হাত থেকে বসবাসকারীদের বাঁচানোর ব্যাপারে প্রশাসন খুবই উদ্বিগ্ন।
এ বছর হতাহতের ঘটনা এড়ানোর জন্য সেখানকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে প্রশাসন।’
































































