শিরোনাম :
ডিভাইন মার্সি হাসপাতাল নিয়ে ভয়ের কোনো কারণ নেই, ঢাকা ক্রেডিটের বার্ষিক সাধারণ সভা সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় নেতৃবৃন্দ
ডিসিনিউজবিডি।। ঢাকা
দি খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি:, ঢাকা (ঢাকা ক্রেডিট) এর ৬৪তম বার্ষিক সাধারণ সভা উপলক্ষে মত বিনিময় সভা প্রতিষ্ঠানের বি.কে গুড কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঢাকা ক্রেডিটের সেক্রেটারী মাইকেল জন গমেজ’র সঞ্চালনায় ২৫ নভেম্বর, ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট ইগ্নাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মত বিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ক্রেডিটের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি নির্মল রোজারিও, দি সেন্ট্রাল এসোসিয়েশন অব খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভস কাক্কো লি: এর চেয়ারম্যান পংকজ গিলবার্ট কস্তা, ঢাকা ক্রেডিটের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ গমেজ, ঢাকা ক্রেডিটের ভাইস-প্রেসিডেন্ট পাপড়ী দেবী আরেং,দি মেট্রোপলিটান খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লি: এর সেক্রেটারি ইম্মানুয়েল বাপ্পী মন্ডল, হীড বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক পাস্টর আনোয়ার হোসেন, ঢাকা ক্রেডিটের প্রাক্তন ম্যানেজার নিপুন সাংমা ও পল মিন্ত্রী, প্রক্তন ডিরেক্টর বীর মুক্তিযোদ্ধা জোনাস গমেজ, নারী বিষয় উপ-কমিটির যুগ্ম আহŸায়ক মঞ্জু মারীয়া পালমাসহ অন্যান্য সমবায়ী নেতৃবৃন্দ।
সেক্রেটারী মাইকেল জন গমেজ শুরুতেই মতবিনিময় সভার উদ্দেশ্য উপস্থিত উপদেষ্টা ও নেতৃবৃন্দের সামনে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আগামী বার্ষিক সাধারণ সভা ও ডিভাইন মার্সি হাসপাতালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান যেন সুন্দরভাবে সম্পন্ন করা যায় সেই জন্যই আজকের এই মত বিনিময় সভা।
প্রেসিডেন্ট কোড়াইয়া প্রথমেই উপস্থিত সবাইকে মতবিনিময় সভায় শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “এবারের এজিএম শুধু এজিএম নয় এখানে আমরা আমাদের স্বপ্নের মেগা প্রকল্প ডিভাইন মার্সি হাসপাতাল আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করতে যাচ্ছি।”
প্রথমেই সকালে হাসপাতালের শুভ উদ্বোধন হবে, ফলক উম্মোচন করা হবে যেখানে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। পরবর্তীতে এজিএম এর কার্যক্রম চলবে।
প্রেসিডেন্ট বলেন, ইতোমধ্যেই সদস্যদের যাতায়াতের সকল ধরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদের সদস্যদের যেন কোনো সমস্যা না হয় সেই ব্যবস্থা পরিচালনা পরিষদ করেছে।
প্রেসিডেন্ট, ডিভাইন মার্সি হাসপাতালের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত এবং বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পসমূহ সম্পর্কে উপস্থিত উপদেষ্টদের সামনে তুলে ধরেন।
ডিভাইন মার্সি মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠা এবং আগামী বছর এপ্রিল মাসে এর কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে এজিএম এর মাধ্যমে প্রস্তাবনা আনা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট জানান, ঢাকা ক্রেডিটের ৭ম কৌশলগত পরিকল্পনার গড়ে ৯৯ শতাংশ অর্জিত হয়েছে। আমাদের ১৪,০৩৫ জন সদস্য আমাদের ইনষ্ট্যান্ট লোন নিয়েছেন।
প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ গমেজ সকল উপদেষ্টা ও নেতৃবৃন্দকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, “ঢাকা ক্রেডিটের যতগুলো এজিএম হয়েছে সবগুলো ঢাকায় হয়েছে এবং এবার প্রথম ঢাকার বাইরে। যেখানে এজিএম করছি সেটা হাসপাতাল তাই আমাদের নজর দিতে হবে যাতে রোগীদের কোনো সমস্যা না হয়।”
তিনি বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য সেবা প্রকল্প আছে এবং যার মধ্যে ২০,০০০ সদস্য নিয়মিত আছে। তাই আমার প্রস্তাব থাকবে যারা নিয়মিত স্বাস্থ্য সেবা প্রকল্প চালু রেখেছেন এবং এখনো কোনো সেবা নেননি তাদের একটা এক্সিকিউটিভ হেলথ চেক-আপ এর সুযোগ দেয়া দরকার।
ঢাকা ক্রেডিটের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ও কাককো লি:, এর চেয়ারম্যান পংকজ গিলবার্ট কস্তা উপস্থিত উপদেষ্টা ও নেতৃবৃন্দকে বলেন, “এবারের এজিএম হবে একটি ভিন্ন মাত্রার। ডিভাইন মার্সি হাসপাতাল আমাদের স্বপ্নের প্রকল্প যা দেশের খ্রিষ্টান সমাজের ও জাতীর স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে এবং এই প্রকল্পের শুভ উদ্বোধন হবে।”
আমাদের এতো বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করার পরেও ৬ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রাক্তন এই প্রেসিডেন্ট বলেন, আমাদের গন্ডি থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করতে হবে। আপনারা ভালো কাজের প্রশংসা করবেন এবং যে জায়গায় ভুল ক্রুটি আছে সেখানে গঠনমূলক সমালোচনা করবেন।
উপস্থিত উপদেষ্টা ও নেতৃবৃন্দ আসন্ন এজিএম এর জন্য শুভ কামনা জানান। একই সাথে লভ্যাংশ ও ডিভিডেন্ট উচ্চহারে প্রস্তাবনার জন্য পরিচালনা পরিষদকে ধন্যবাদ জানান। প্রস্তাবিত ডিভাইন মার্সি মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত প্রস্তাবটি উপস্থিত উপদেষ্টাগণ সাধুবাদ জানান।
নির্মল রোজারিও উপস্থিত নেতৃবৃন্দকে সমবায়ী শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, “এবার হাসপাতালে এজিএম থেকে ফিরে অনেকেই আগামীতেও যেন সেখানেই এজিএম হয় সেই আবেদন জানাবে বলে মনে করি। আমাদের জায়গায়, আমাদের হাসপাতাল প্রাঙ্গণে এজিএম হবে এটা তো অতীব আনন্দের।
তিনি বলেন, এই হাসপাতালের মাধ্যমে খ্রিষ্টান সমাজ নতুন ভাবে দেশে ও দেশের বাইরে পরিচিত হবে। অর্থাৎ এই হাসপাতাল হবে আমাদের খ্রীষ্টান সমাজের একটা বাতি ঘর।
তিনি এজিএম সফল করার জন্য উপস্থিত সকলকে অনুরোধ জানান।
কো-অপারেটিভগুলোর এখন অনেক অর্থ রয়েছে এবং সেগুলোকে সঠিক বিনিয়োগের মাধ্যমে সদস্যদের উপযুক্ত লভ্যাংশ দেয়ার জন্য পরিচালনা পরিষদকে যুগোপযুগী পদক্ষেপ গ্রহণের আহŸান জানানো হয় মত বিনিময় সভা থেকে।
এজিএম রিপোর্ট সুন্দর, নিখুঁত ও বিস্তারিত হয়েছে যা সদস্যদের বুঝার জন্য কোনো সমস্যা হবে না, উল্লেখ করেন উপদেষ্টাবৃন্দ। একই সাথে উপদেষ্টাগণ বলেন, ঢাকা ক্রেডিটের যে মটো বা উদ্দেশ্য “কর্মসংস্থান আমাদের লক্ষ্য-আত্মনির্ভরশীল সমাজ আমাদের স্বপ্ন” সেই পথেই নেতৃবৃন্দ সঠিক নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছে।
পাষ্টর আনোয়ার হোসেন ডিভাইন মার্সি হাসপাতালের যারা স্বপ্ন দেখেছিলেন তাদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, আমাদের সেবার মান ঠিক থাকলে এখানে লোকসানের কোনো সুযোগ নেই। আমরা যেন খ্রীস্টিয় মূল্যবোধ ধারণ করে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করি, তাহলে আমাদের কোনো সমস্যা হবে না।
ঢাকা ক্রেডিটের ভাইস প্রেসিডেন্ট পাপড়ি দেবী আরেং মতবিনিময় সভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য সকলকে পরিচালনা পরিষদের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, আপনারা ঢাকা ক্রেডিটকে ভালোবাসেন বলেই আজকে এখানে উপস্থিত হয়েছেন এবং আপনাদের সমর্থনে এখানে আমরা আসতে পেরেছি। আশা করি আগামীতেও আপনাদের সহযোগীতা অব্যাহত থাকবে।