শিরোনাম :
দেশ জুড়ে ১ কোটি চারা রোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
ডিসিনিউজ ।। ঢাকা
গতকাল মুজিববর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ জুড়ে ১ কোটি চারারোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপণের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে দেশবাসীর উদ্দেশে বলেছেন, যেখানে আপনাদের যতটুকু জায়গা আছে, সম্ভব হলে অন্তত একটা হলেও গাছ লাগান। যারা শহরে থাকেন, ছাদে বাগান করেন বা ব্যালকনিতে টবে গাছ লাগান। যেভাবে বা যেখানে হোক, গাছ লাগালে মনটাও ভালো লাগবে আর আপনার নিজের আর্থিক সচ্ছলতাও আসবে।
সকালে গণভবন চত্বরে তিনটি গাছের চারা রোপণ করে কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী তেঁতুল, ছাতিয়ান এবং চালতা এই তিনটি গাছের চারা রোপণ করেন। নিজের হাতে লাগানো একটা গাছের ফল, এমনকি একটা কাঁচামরিচ খেলেও দারুণ আনন্দ লাগে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী দেশে মোট বনভূমির পরিমাণ ২৫ শতাংশে উন্নীত করায় তার সরকারের লক্ষ্য পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘প্রথমবার ১৯৯৬ সালে যখন ক্ষমতায় আসি তখন দেশে বনভূমির পরিমাণ ছিল মাত্র ৭ শতাংশ। যা আজকে আমরা ১৭ শতাংশে উন্নীত করতে সমর্থ হয়েছি। আমাদের লক্ষ্য সারাদেশে ২৫ শতাংশ বনায়ন করা। আমাদের দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ যেমন রক্ষা করা দরকার তেমনি জনগণের খাদ্য ও পুষ্টি দরকার। সেই কারণেই বৃক্ষরোপণ জরুরি। প্রত্যেকে অন্তত একটি করে ফলদ, বনজ এবং ভেষজ এই তিনটি গাছ লাগান। এ কারণে আজ আমি তেঁতুল, চালতা এবং ছাতিয়ান লাগিয়েছি।’
শেখ হাসিনা তার লাগানো গাছগুলোর উপযোগিতা তুলে ধরে বলেন, ছাতিয়ান গাছ খুব বড়ো এবং কাণ্ড মোটা হয় যেটি কাঠ হিসেবে খুব ভালো। তাই এর আর্থিক মূল্য অনেক। আর তেঁতুলের কথা শুনলেই জিবে যেমন পানি আসে তেমনি ছোটবেলার কথাও মনে পড়ে যায়। এটা শরীরের জন্যও খুব উপকারী। কারো উচ্চরক্তচাপ রোগ থাকলে তার জন্য, তাছাড়া শরীরকে ঠান্ডা রাখার জন্য তেঁতুল খুবই উপকারী। আর চালতা গাছের পাতা ও ফুল যেমন সুন্দর দেখতে তেমনি এই গাছেরও অনেক গুণ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজে বৃক্ষরোপণ করে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। তারই স্মরণে আমরা প্রতি বছর এই কর্মসূচি পালন করছি।’
তিনি আরো বলেন, করোনা ভাইরাস আমাদের সকল অগ্রযাত্রা সাময়িকভাবে থামিয়ে দিয়েছে। আমি আশা করি জনগণ এ থেকে বেরোতে পারবে, সবকিছু স্বাভাবিক হলে আবার আমরা দুরন্ত গতিতে এগিয়ে যাব। এই সমস্যা শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্বব্যাপী।
শেখ হাসিনা জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেছেন, ‘আজকের দিনটা একটা বিশেষ দিন। কারণ ২০০৭ সালে তদানিন্তন তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমাকে গ্রেফতার করেছিল। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছিল। আমি কৃতজ্ঞতা জানাই বাংলাদেশের জনগণের প্রতি, প্রবাসীদের প্রতি এবং বিশ্ব নেতাদের প্রতি। তাদের অকুণ্ঠ সমর্থনে আমি মুক্তি পেয়েছিলাম ২০০৮ সালের ১১ জুলাই। আর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ প্রায় ২৫ লাখ স্বাক্ষর সংগ্রহ করে, সেটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার অফিসে দিয়েছিল। তাদের এই সমর্থন আমি পেয়েছিলাম বলেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চাপে তারা আমাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।
প্রধানমন্ত্রীর বৃক্ষরোপণকালে গণভবনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, পিএমও সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, পরিবেশ ও বন সচিব জিয়াউল হাসান এবং প্রেস সচিব ইহসানুল করিম উপস্থিত ছিলেন।