শিরোনাম :
ফাদার চার্লস জে ইয়াং-এর ৩২তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন
ডিসিনিউজ || ঢাকা
দেশের ক্রেডিট ইউনিয়নের পথিকৃৎ এবং ঢাকা ক্রেডিটের প্রতিষ্ঠাতা আমেরিকান মিশনারি ফাদার চার্লস জে ইয়াং-এর ৩২তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন হয়েছে।
১৪ নভেম্বর ফাদার চার্লস জে ইয়াং-এর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তেজগাঁও গির্জায় এক বিশেষ প্রার্থনা ও পবিত্র খ্রিষ্টযাগ উৎসর্গ করা হয়। পবিত্র খ্রিষ্টযাগ উৎসর্গ করেন তেজগাঁও গির্জার পাল-পুরোহিত ফাদার সুব্রত বনিফাস গমেজ।
পবিত্র খ্রিষ্টযাগে অংশগ্রহণ করেন ঢাকা ক্রেডিটের ভাইস-প্রেসিডেন্ট আশিস আলবার্ট বিশ^াস, দি সেন্ট্রাল এসোসিয়েশন অব খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ লিমিটেড (কাককো)-এর চেয়ারম্যান নির্মল রোজারিও, ঢাকা ক্রেডিটের সেক্রেটারি ইগ্নাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়া, ট্রেজারার পিটার রতন কোড়াইয়া, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন টমাস রোজারিও, হাউজিং সোসাইটি ডিরেক্টর অপূর্ব যাকোব রোজারিওসহ ঢাকা ক্রেডিট, হাউজিং সোসাইটি ও কাককোর ব্যবস্থাপনা পরিষদের অন্যান্য সদস্য ও, পরামর্শক ও কর্মীগণ। খ্রিষ্টযাগের পর ফাদার চার্লস জে ইয়াং-এর কবরে তাঁরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ও তাঁর আত্মার কল্যাণে প্রার্থনা করেন।
খ্রিষ্টযাগের উপদেশে ফাদার সুব্রত বলেন, ফাদার ইয়াং যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে ক্রেডিট ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সমিতিগুলো সে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করা উচিত। বেশির ভাগ খ্রিষ্টান সমিতি ভালো কাজ করলেও গুটি কয়েক সমিতির জন্য খ্রিষ্টানদের বদনাম হচ্ছে। তিনি যাঁরা সমবায়ে নেতৃত্বে আসবেন ও সমবায় সমিতিতে কাজ করবেন, তাদের সৎ ভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
খ্রিষ্টযাগের শেষে ঢাকা ক্রেডিটের সেক্রেটারি বক্তব্যে বলেন যে ফাদার ইয়াং না থাকলে দেশের খ্রিষ্টানদের আর্থিক অবস্থা এত ভালো হতো না। এই সমবায় আন্দোলনের সাথে যারা জড়িত তারা যেন ফাদার ইয়াং এর আদর্শ ধারণ করতে পারে তিনি সেই আহ্বান জানান।
ফাদার ইয়াং-এর মৃত্যুবার্ষিকী পালন অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা ক্রেডিটের ভাইস-চেয়ারম্যান আশিস আলবার্ট বিশ্বাস, দি সেন্ট্রাল এসোসিয়েশন অব খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ লিমিটেড (কাককো)-এর চেয়ারম্যান নির্মল রোজারিও, ঢাকা ক্রেডিটের ট্রেজারার পিটার রতন কোড়াইয়া ও হাউজিং সোসাইটি ডিরেক্টর অপূর্ব যাকোব রোজারিও।
বাংলাদেশে ফাদার ইয়াং এর অবদানের কথা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে নির্মল রোজারিও বলেন, ‘ফাদার ইয়াং যে চেতনা নিয়ে কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন শুরু করেছিলেন সেই চেতনাকে যেন আমরা সততা ও নিষ্ঠার সাথে এগিয়ে নিয়ে যাই। তাহলে আমরা ফাদার ইয়াংকে সমগ্র বাংলাদেশে ব্যাপী বাঁচিয়ে রাখতে পারবো।’
আলবার্ট আশিস বিশ্বাস তাঁর বক্তব্যে বলেন যে ফাদার চার্লস জে ইয়াং যদি আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে না আসতেন, তাহলে আমারা খ্রিষ্টান সমাজ অর্থনৈতিকভাবে তলিয়ে যেতাম। একটি আলোকবর্তিকা হয়ে তিনি এদেশে অপমর দরিদ্র জন গোষ্ঠীর জন্য এসেছিলেন আশির্বাদস্বরূপ।
১৯৫৫ সালের ৩ জুলাই তিনি ৫০ জন সদস্য নিয়ে লক্ষ্মীবাজারে মাত্র ২৫ টাকা মূলধন নিয়ে একটি ক্রেডিট ইউনিয়ন গঠন করেন। যা বর্তমানে দি খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিঃ, ঢাকা (ঢাকা ক্রেডিট) নাম নিয়ে সদর্পে খ্রিষ্টান সমাজে উন্নয়নের মডেল হিসেবে এগিয়ে চলছে। তিনি বাংলাদেশে ক্রেডিট ইউনিয়নের রূপকার। তার প্রতিষ্ঠিত ঢাকা ক্রেডিটের পথ ধরে বর্তমানে দেশ কয়েক হাজার সমবায় সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তিনি প্রথম খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে সমবায়ের ধারণা নিয়ে কাজ করেন এবং তার শেখানো পথে হেঁটে আজ অনেক মানুষ সামাজে আর্থ-সামাজিকভাবে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর মাসের ১৪ তারিখ ঢাকার প্রেস ক্লাবের সামনে একটি গাড়ি তাঁকে ধাক্কা দেয়। এতে তিনি পড়ে যান এবং মাথায় বড় ধরনের আঘাত পান। তখনই তিনি জ্ঞান হারান। এরপর আর জ্ঞান ফিরে আসেনি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাত ১১.০৫ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ১৬ নভেম্বর ফাদার ইয়াংকে তেজগাঁও গির্জায় সমাধিস্থলে সমাহিত করা হয়।
আরো ছবি:
[wp1s id=”14304″]