শিরোনাম :
বসনিয়ায় আটকা বাংলাদেশিদের মানবেতন জীবন
জাতিসংঘের অভিবাসীবিষয়ক সংস্থা আইওএমের শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় না পেয়ে বসনিয়ার ভেলিকা ক্লাদুসায় একটি পরিত্যক্ত কারখানার ভবনে আশ্রয় নিয়েছেন শতাধিক বাংলাদেশি। মানবেতর পরিস্থিতিতে থাকলেও তাঁরা দেশে না ফিরে ইউরোপে যাওয়ার স্বপ্নে মরিয়া।
অনেক টাকা খরচ করে এখানে এসেছি। আমাদের স্বপ্ন ইতালি, স্পেন যাওয়া। আমরা কখনো দেশে ফেরত যাব না—এভাবেই ডয়চে ভেলের কাছে প্রতিক্রিয়া জানান বসনিয়ার ভেলিকা ক্লাদুসা এলাকার একটি পরিত্যক্ত কারখানায় দিন যাপন করা বাংলাদেশিরা।
ইউরোপের সঙ্গে দেশটির সীমান্তবর্তী এই অঞ্চলে এখন কয়েক শ বাংলাদেশি আটকা পড়েছেন। কেমন আছেন তাঁরা তা জানতে সেখানে আছেন ডয়চে ভেলের সাংবাদিক আরাফাতুল ইসলাম ও অনুপম দেব কানুন। রবিবার সকালে তাঁরা একটি জঙ্গলে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশিদের সঙ্গে কথা বলেছেন। সেখান থেকে কিছুটা দূরে রয়েছে জাতিসংঘের অভিবাসীবিষয়ক সংস্থা আইওএমের একটি আশ্রয় ক্যাম্প। সেখানে থাকার সুযোগ না পেয়ে কাছেই পরিত্যক্ত একটি কারখানার ভবনে আশ্রয় নিয়েছেন শতাধিক বাংলাদেশি।
জঙ্গলের ভেতরে ময়লা-আবর্জনা পরিবেষ্টিত ভবনটিতে গাদাগাদি করে অবস্থান করছেন তাঁরা। ভাঙা ছাদ আর দেয়ালবিহীন স্থাপনাটিতে শীত আর বৃষ্টিতে অবর্ণনীয় কষ্টের অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেছেন তাঁরা।
অনেকেই এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেছেন সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশের। কিন্তু পুলিশের বাধার মুখে ফেরত আসেন তাঁদের বেশির ভাগই। সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার সময় পুলিশের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ।
সরকার সহযোগিতা করলে দেশে ফেরত যাবেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তাঁরা জানান, তাঁদের স্বপ্ন ইতালি-স্পেন যাওয়ার। কোনোভাবেই তাঁরা এ স্বপ্ন ত্যাগ করবেন না।
ক্রোয়েশিয়া-বসনিয়া সীমান্তের ভেলিকা ক্লাদুসার একটি পাহাড়ের ঢালে জঙ্গলে তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছেন কয়েক শ বাংলাদেশি। তীব্র শীত, খাবারের অভাব, পানির সংকটে অমানবিক জীবন যাপন করছেন তাঁরা। সেখানে মোহাম্মদ ইয়াসিন নামের এক বাংলাদেশি বলেন, ‘ওমান থেকে স্পিডবোটে করে ইরান এসে সেখান থেকে তুরস্ক হয়ে গ্রিসে আসি আমি। গ্রিস থেকে আসি বসনিয়ায়। চার মাস ধরে এ জঙ্গলটিতে আছি। সর্বশেষ তিন দিন আগে ক্রোয়েশিয়া প্রবেশের চেষ্টা করি। সে সময় কিছুটা (ক্রোয়েশিয়ার) ভেতরে ঢুকেছিলাম। কিন্তু পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যাই। পুলিশ আমার সব কিছু কেড়ে নেয়। শুধু আন্ডারওয়্যার পরা অবস্থায় আমাকে এখানে ফেরত পাঠায়।’ (কালের কন্ঠ)