ঢাকা ,
বার : বৃহস্পতিবার
তারিখ : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ১১ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা দেশ বাজেটে ই-কামার্সে ভ্যাট আরোপ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে বাধা সৃষ্টি করবে: ই-ক্যাব

বাজেটে ই-কামার্সে ভ্যাট আরোপ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে বাধা সৃষ্টি করবে: ই-ক্যাব

0
288

অনলাইন পণ্য সেবা বিক্রয়কে জাতীয় ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা ২০১৮ বাংলাদেশ গেজেটে (জানুয়ারী ৩১, ২০১৯) প্রকাশিত সংজ্ঞা অনুযায়ী সংজ্ঞায়িত করে আলাদা সার্ভিস হিসাবে বিবেচনা করা এবং নতুন সেবা কোড বরাদ্দ দেয়ার জন্য অনুরোধ করে পূর্বের এস আর (S০৯৯.৫০) বহাল রেখে বরাবরের মতো কমার্স খাতের ওপর প্রস্তাবিত কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে এই খাতের জাতীয় সংগঠন কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)

সংগঠনটির দাবি, এই ভ্যাট প্রত্যাহারের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ক্রয়-বিক্রয়ে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি ও ভোক্তার ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে পরোক্ষভাবে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়াবে। সর্বোপরি এই ভ্যাট ডিডজিটাল বাংলাদেশ গড়তে বাধা সৃষ্টি করবে।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাজধানীর কাওরানবাজারস্থ একটি রেস্তোরায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করা হয়। এসময় আজকের ডিল, বাগদুম, রকমারি, দারাজ, চালডাল, হাংরি নাকি, পাঠাও, সেবা এক্সওয়াইজেড, দিনরাত্রি সিনদবাদ, প্রিয়শপ.কম প্রতিনিধিরি সংবাদ সম্মলনে উপস্থিত হয়ে অনলাইন মার্কেটপ্লেসের ওপর আরোপিত ভ্যট প্রত্যাহারে ঐক্যম প্রকাশ করেন।

সম্মেলনে জানানো হয়, ইতিমধ্যেই ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিবৃন্দ এনবিআর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আইসিটি বিভাগ এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ে সাথে একাধিকবার বৈঠক করে বাজেটে ই-কমার্স এর সংজ্ঞা পরিবর্তন, ভুল সংশোধন এবং অনলাইন মার্কেটপ্লেসের উপর আরোপিত ভ্যাট অব্যাহতি সহ বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা পেশ করেছেন। ই-ক্যাব এর প্রস্তাবনার উপর সম্মতি জানিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং আইসিটি বিভাগ থেকে দুটি অফিসিয়াল চিঠি এনবিআরের চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর পাঠানো হয়েছে।

ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সারের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো: আব্দুল ওয়াহেদ তমাল, সহ-সভাপতি পদে রেজওয়ানুল হক জামী, অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল হকসহ ই-ক্যাব কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য ও পরিচালকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সভাপতির বক্তব্যে শমী কায়সার বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নের অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে ব্যবসায়ের ডিজিটাল রূপান্তরের কোনো বিকল্প নেই। সময় ও দূরত্বের বাধা দূর করে ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে সেতু বন্ধন তৈরি করতে ই-কমার্স এখন সবচেয়ে আলোচিত একটি বিষয়। সবে মাত্র বিকশিত হতে শুরু করায় এটি সরকারের থ্রাস সেক্টর হিসেবেও বিবেচিত। এমন সময় ফেসবুক ও গুগল-এর মতো প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাটের আওতায় আনতে গিয়ে প্রস্তাবিত বাজেটে ডিজিটাল ব্যবসায়ের ওপরেও সাড়ে সাত (৭.৫%) শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে কেবল ব্যবসায়ের ডিজিটাল রূপান্তরই বাধাগ্রস্ত হবে না, উদ্যোক্তাদের ওপর দ্বৈত করের বোঝাও চাপিয়ে দেয়া হবে। একইসঙ্গে ডিজিটাল রূপকল্প বাস্তবায়নও হুমকীর মুখে পড়বে।

প্রতিবেশীদেশ ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও ই-কমার্স খাত প্রাথমিক পর্যায়ে ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখা হয়েছিলো উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখনো অনেক দেশেই ই-কমার্সে ভ্যাট নেই।

তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকারের দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার ফলশ্রুতিতে জীবযাত্রার মানোন্নয়নের মাধ্যমে গত বছর কয়েক হলো কেনা-কাটায় ভোক্তারা ডিজিটাল সুবিধায় অভ্যস্ত হতে শুরু করেছিলো। সরকারের উৎসাহ উদ্দীপনায় চলতি বছরে দেশজুড়ে ৭টি বিভাগে ই-কমার্স ডাক মেলার মাধ্যমে আমরা এই ট্রেন্ডটি শহরের বাইরেও প্রান্তিক মানুষের দোরগোরায় নিয়ে যেতে দিনান্ত কাজ করে যাচ্ছিলাম।কিন্তু প্রস্তাবিত ভ্যাট শপিং-এ গ্রাম ও শহরের মধ্যে বিদ্যমান যে দূরত্ব ঘুচতে শুরু করেছিলো তাও বাধাগ্রস্ত হবে। থমকে যাবে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ। বেকারত্ব মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও নারী উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হওয়ার সম্ভাবনা আঁতুর ঘরেই মৃত্যু বরণ করবে।

ই-কমার্স খাতে ভ্যাট সরকারের ডিজিটাল সেবা খাত বিকাশে বাধাগ্রস্ত করবে উল্লেখ করে ই-ক্যাব সেক্রেটারি মোহাম্মাদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বেলেন, “আমরা সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নের স্বার্থে দীর্ঘ মেয়াদে ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখার দাবি জানাচ্ছি।”

তিনি জানান, “ই-ক্যাব আগামী তিন বছরে সারাদেশে আরও ১০ লক্ষ কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে ই-কমার্সের সঙ্গে প্রায় ৫০ হাজার উদ্যোক্তা সরাসরিভাবে জড়িত। ই-কমার্সের উপর প্রস্তাবিত ভ্যাট তাদের সবার জন্যই একটা মারাত্মক ঝুঁকির ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। শুধু উদ্যোক্তাদের এই খাতে আসলেই চলবে না, গ্রাহকদেরও নিয়ে আসতে হবে। নতুন করে এই খাতের উপর প্রস্তাবিত ভ্যাট উদ্যোক্তা-গ্রাহক উভয়কেই এ খাত থেকে দূরে সরিয়ে দিবে।”

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দেশের আপামর জনতা ডিজিটাল সেবা গ্রহণে অভ্যস্ত হতে পারবে। ব্যবসায়ের ডিজিটাল রূপান্তরের মাধ্যমে কলসেন্টার, ডেলিভারি, সফটওয়্যার খাতের ব্যবসায়ী ও ব্যবসায়ের উন্নতি হবে। পণ্য ও সেবা বিতরণের মাধ্যমে বাংলাদেশ ডাকঘর তার হৃত গৌরব ফিরে পাবে। ত্বরান্বিত হবে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটির ডিজিটাল রূপান্তর। প্রান্তিক পর্যায়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠবে ‘নগদ’ এর মতো ডিজিটাল পদ্ধতির মোবাইল ব্যাংকিং সেবা। গ্রাম কিংবা মফস্বল থেকেও উদ্যোক্তারা তাদের পণ্য ও সেবা অনলাইনে ফেরি করে বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হবে। এতে করে রপ্তানি ব্যবসায়ের পরিধি আরো বেড়ে যাবে। অনলাইনে কেনাকাটার সংস্কৃতি বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে দেশে ব্যবসায় এবং ব্যবসায়ী উভয়েরই স্বচ্ছতাও বেড়ে যাবে। এতে পরোক্ষভাবে রাজস্ব আয় বাড়বে।