শিরোনাম :
মাত্র ২৫ হাজার টাকায় গোল্ডেন, সাড়ে ১২ হাজারে জিপিএ ৫!
শুধু ২৫ হাজার টাকার বিনিময়ে গোল্ডেন (সব বিষয়ে) জিপিএ ৫ এবং সাড়ে ১২ হাজার টাকায় জিপিএ ৫ পাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণা করা একটি চক্রের সদস্যরা গ্রেপ্তার হয়েছে।
গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার বিরাইমপুর এলাকা থেকে এই প্রতারক চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৯-এর সদস্যরা।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন শ্রীমঙ্গলের বিরাইপুর গ্রামের মো. শওকত হোসেন, মো. সৌরভ হোসেন, শ্যামলী গ্রামের মো. আব্দুল কাদির ও হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার শেরপুর গ্রামের মো. হৃদয় মিয়া।
বুধবার দুপুরে সিলেট নগরীর মেজরটিলায় র্যাব-৯ সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই চক্রটির প্রতারণার তথ্য তুলে ধরেন অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল আলী হায়দার আজাদ আহমদ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিমান চন্দ্র কর্মকারের নেতৃত্বে র্যাবের তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ দলের সহায়তায় একটি চক্রকে শনাক্ত করা হয়। গতকাল রাত সাড়ে ১১টায় এই প্রতারক চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আলী হায়দার আজাদ আহমদ বলেন, ‘এরা মূলত এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস চক্রের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিল। তাঁরা মূলত বেশ কয়েকটি প্রশ্নপত্র ফাঁস করে, যেগুলো সঠিক ছিল। যার মাধ্যমে তাদের একটি বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হয়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ গুরুত্বপূর্ণভাবে আবির্ভাব হয়। তাদের বয়স কম হলেও তথ্য প্রযুক্তির দিক থেকে তাদের জ্ঞান যথেষ্ট বেশি। তারা বিভিন্ন আইডি হ্যাক করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে প্রশ্নফাঁস গ্রুপগুলো রয়েছে, সেই গ্রুপগুলোর সাথে তারা জড়িত এবং কয়েকটি গ্রুপে তারা আইডি হ্যাক করে নিজেরা জয়েন করেছে। জয়েন করে, প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সঙ্গে একটা সম্পর্ক তৈরি করে এবং সিলেটকেন্দ্রিক একটা নেটওয়ার্ক তৈরি করে। এসএসসি পরীক্ষায় যে প্রশ্ন পত্রগুলো ফাঁস করেছিল, সেগুলোকে পুঁজি করে এইচএসসিতেও সে প্রশ্ন ফাঁস করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল।’
তবে এখন পর্যন্ত সঠিক কোনো প্রশ্ন এই চক্রটি ফাঁস করতে পারেনি বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘যেগুলো করেছে সেগুলো সবই ভুয়া ছিল এবং তারা টাকার মাধ্যমে, আগে টাকা পাঠাতে হয় বিকাশে, টাকা পেলে তারপর প্রশ্নগুলো দিতো । আরেকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জিনিস, যেটা আমরা এই চক্রের মাধ্যমে জানতে পারি, যেটা আমার কাছে মনে হয়েছে যে, আমাদের ভবিষ্যতের জন্যে জটিল সমস্যা তৈরি করবে। ফলাফল, এসএসসি এবং এইচএসসি, বিশেষ করে এসএসসি পরীক্ষা, আপনারা জানেন এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল আগামী ৬ মে। এই এসএসসির ফলাফলকেও তারা পরিবর্তন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এবং বিভিন্নজনকে বিভিন্ন রেটের টাকার মাধ্যমে তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে আমরা ফলাফলটা চেঞ্জ করে দিব। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে যখন ওয়েবসাইটে ফলাফলটা প্রকাশ হবে, ওই ফলাফলটা তারা চেঞ্জ করে দেখিয়ে দিবে। সে কয়েকটা ডেমো ভার্সনও দিয়েছে, যে কিভাবে চেঞ্জ করবে।’
চক্রটি গোল্ডেন জিপিএ ৫, ২৫ হাজার টাকায় ও জিপিএ ৫ সাড়ে ১২ হাজার টাকায় পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণা করছিল বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
এই চক্রের সদস্যদের ফেসবুক আইডি তদন্ত করে অনেক পরীক্ষার্থীর সার্টিফিকেট ও মার্কশিটের কপি পাওয়া গেছে বলেও জানান আলী হায়দার আজাদ আহমদ। এ ছাড়াও তাদের মোবাইলে প্রশ্নপত্র ও প্রশ্নপত্রের বিনিময়ে টাকা আদান-প্রদানের প্রমাণও পাওয়া গেছে।
আরবি.আরপি.১৯ এপ্রিল, ২০১৮