শিরোনাম :
সেন্ট জন ভিয়ানী হাসপাতালের শুভ উদ্বোধন
|| ডিসিনিউজ ||
মানব সেবার ব্রত নিয়ে সেন্ট জন ভিয়ানী হাসপাতালের যাত্রা শুরু হয়েছে আজ।
ঢাকার আর্চবিশপ কার্ডিনাল প্যট্রিক ডি’রোজারিও, সিএসসির সভাপতিত্বে ঢাকা কাথলিক মহাধর্মপ্রদেশের উদ্যোগে সেন্ট জন ভিয়ানী হাসপাতালের শুভ উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি। তাঁর সাথে উপস্থিত ছিলেন ভাটিকান রাষ্ট্রদূত আর্চবিশপ জর্জ কোচেরী ও ঢাকার সহকারী বিশপ শরৎ ফ্রান্সিস গমেজসহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তি।
সভাপতি কার্ডিনাল প্যট্রিক ডি’রোজারিও, সিএসসি বলেন, অনেকদিনের বাসনা ছিলো একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা। সেন্ট জন ভিয়ানী হাসপাতালের প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সে আশা পূর্ণ হলো। এ হাসপাতালের মাধ্যমে জাতি-ধর্ম-বর্ণ সকলকে সেবা দেওয়া হবে। সেবার সাক্ষ্য বহন করা হবে।
তিনি আরো বলেন, ‘আজ আমাদের মাঝে উপস্থিত আছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল যিনি আজকের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি। আমাদের হাসপাতাল প্রধান অতিথির নির্বাচনী এলাকার জন্য উপহার। আমরা খ্রিষ্টানরা নিরাপত্তার সাথে বসবাস করছি।’
‘মমতা, যত্ন, সেবা ও আত্ম-নিবেদন, সততা এগুলো হবে সেবা দানকারী ও সেবাগ্রহণকারী সকলের সাধারণ মূল্যবোধ’ যোগ করেন কার্ডিনাল রোজারিও।
তিনি বলেন, হাসপাতালটি যাত্রা শুরু করলো একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে। অনেক উপকারী বন্ধুর সাহায্য দরকার। আমাদের ইতিমধ্যে একটি ধর্মসংঘ এবং একটি পরিবার আমাদের চিকিৎসার উপকরণ দিয়েছেন। তাদের কৃতজ্ঞতা জানাই।
কার্ডিনাল হাসপাতালের পরিচালক, কর্মীদের সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।
হাসপাতাল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তাঁর বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, এমপি বলেন, ‘আমারা গর্বিত তেজগাঁয়ে এই হাসপাতাল হচ্ছে। এখানে নামী স্কুল রয়েছে। আরো বিভিন্ন সমবায় প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আপনাদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব আমাদের আকৃষ্ট করে। এই এলাকায় চারশ বছর ধরে খ্রিষ্টভক্তরা শান্তিতে বসবাস করছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘সব ধর্মের মানুষ এ দেশে বসবাস করে চলছি। আমরা সবাই এক, সবাই বাংলাদেশের জন্য কাজ করছি। সেন্ট জন ভিয়ানী হাসপাতালটি এই এলাকার মানুষ ও অন্যান্য মানুষকে সেবা দিবে। সুনামের সাথে সেবা দিয়ে মানুষের পাশে থাকবে।’
নতুন প্রতিষ্ঠিত এই মিশনারী হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা স্বল্পমূল্যে সেবা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক ফাদার কমল কোড়াইয়া।
তিনি বলেন, অনেক পথ আমাদের যেতে হবে। আমাদের হাসপাতালের স্বপ্ন দেখা শুরু। স্বপ্ন বাস্তবায়নে আপনাদের সহযোগিতা দরকার। যা শুরু হয়েছে তা যেন বাস্তবায়ন হয়।
তিনি বলেন, ‘মাদার তেরেজা যেমন দরদ ও ভালবাসা দিয়ে রোগীদের সেবা দিয়েছেন, এই হাসপাতালেও তেমনি দরদ ও ভালবাসা দিয়ে ডাক্তার-নার্সগণ রোগীদের সেবা করবেন।’
তিনি ডিসিনিউজকে বলেন, হাসপাতালটি পরিচালিত হবে ফাদার-সিস্টারদের দ্বারা। ঢাকা শহরে মিশনারীদের দ্বারা পরিচালিত এটি হবে প্রথম হাসপাতাল যেখানে জাতি-ধর্ম-বর্ণ সব ধরনের মানুষ স্বাস্থ্য সেবা পাবেন। আপাতত, সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত রোগীরা সেবা পাবেন। ১লা জানুয়ারী ২০২০ খ্রিস্টব্দ থেকে ২৪ ঘন্টার জন্য সেবা দেওয়া হবে হাসপাতালটি থেকে।
ফাদার কমল বলেন, ‘ঢাকায় মিশনারী সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তবে স্বাস্থ্য খাতে সেবা দেওয়ার জন্য কোন হাসপাতাল নাই- সেই চিন্তা থেকেই হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করার চিন্তা।’
‘প্রাথমিকভাবে ল্যাব, ফিজিও থেরাপি, জরুরী বিভাগ, মাইনর ওটি, সিজারিয়ান ওটি, বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চেম্বার থাকবে- যেখানে মানুষ স্বল্প মূলে ভাল মানের সেবা পাবেন’ যোগ করে বলেন ফাদার কমল।
ঢাকার সহকারী বিশপ শরৎ ফ্রান্সিস গমেজ সেন্ট জন ভিয়ানী হাসপাতালের গভর্নিং বোর্ডের সদস্যদের পরিচয় করিয়ে দেন।
ভাটিকান রাষ্ট্রদূত আর্চবিশপ জর্জ কোচেরী এ দেশে কাথলিকদের শিক্ষায় অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, আমি আশা করি নব প্রতিষ্ঠিত সেন্ট জন ভিয়ানী হাসপাতালও সুনামের সাথে সেবা দিবেন।
আরো বক্তব্য রাখেন হাসপাতালের মেট্রন সিস্টার আভা, এসএমআরএ, প্রাক্তন শিক্ষক জেরাল্ড রড্রিক্স, মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) জন গমেজ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন কারিতাস বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক অতুল ফ্রান্সিস সরকার।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সেন্ট জন ভিয়ানী হাসপাতালের গভর্নিং বোর্ডের সদস্য ও ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ গমেজ, ঢাকা ক্রেডিটের সেক্রেটারি পংকজ গিলবার্ট কস্তা, সেন্ট জন ভিয়ানী হাসপাতালের গভর্নিং বোর্ডের সদস্য ও বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও, এসোসিয়েশনের মহাসচিব হেমন্ত আই কোড়াইয়া, কারিতাস এশিয়ার প্রেসিডেন্ট ড. বেনেডিক্ট আলো ডি’রোজারিওসহ সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
ছবি: শমিত ক্রুজ
[wp1s id=”10309″]