শিরোনাম :
পালন করা হলো বিপুল-তন্দ্রার চল্লিশা
ডিসিনিউজ ॥ ঢাকা
আজ ৯ অক্টোবর শুক্রবার পারিবারিক উদ্যোগে পালন করা হলো বিপুল-তন্দ্রার চল্লিশা।
পূর্ব রাজাবাজারস্থ বিপুল-তন্দ্রার বাসার নীততলায় চল্লিশার খ্রিষ্টযাগ উৎসর্গ করেন তেজগাঁও ধর্মপল্লীর সহকারী পাল-পুরোহিত রিপন কস্তা।
খ্রিষ্টযাগের উপদেশে অষ্টকল্যাণ বাণী পাঠের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে এবং বিপুল-তন্দ্রার জীবনাদর্শের উদাহরণ উল্লেখ করে সবাইকে জীবন গড়ার পরামর্শ দেন। তিনি যিশুর দুই হাজার বছর আগের হলেও এগুলোর আবেদন চিরন্তন বলে উল্লেখ করেন। ফাদার বলেন, ‘বিপুল-তন্দ্রার আদর্শ হলো নম্রতার আদর্শ, প্রতিবেশীর মঙ্গলে তারা ছিলেন নিবেদিত।’
বিপুলের কথা বলতে গিয়ে ফাদার বলেন, ‘বিপুল নিজের উন্নয়নের সাথে তুইতাল সমিতির উন্নয়নের জন্য ভাবতেন। যুবসমাজ, গ্রাম ও বৃহত্তর সমাজ নিয়ে ভাবতেন তিনি।’
২০১১ খ্রিষ্টাব্দ থেকে তন্দ্রা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমবায় সমিতি ঢাকা ক্রেডিটের কর্মী ছিলেন। তাঁর চল্লিশা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ক্রেডিটের ভাই-প্রেসিডেন্ট আলবার্ট আশিস বিশ্বাস, ডিরেক্টর পাপিয়া রিবেরু, সিও জোনাস গমেজসহ বিভাগীয় ম্যানেজার ও কমীগণ। এ ছাড়াও পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরাও খ্রিষ্টযাগে অংশগ্রহণ করেন।
ঢাকা ক্রেডিটের পক্ষে বক্তব্যে ভাইস-প্রেসিডেন্ট আলবার্ট আশিস বিশ্বাস তন্দ্রার আত্মত্যাগের ও আদর্শের সম্বন্ধে বলতে গিয়ে বলেন, ‘তন্দ্রা-বিপুলের সমাজে অনেক কিছু দেওয়ার ছিল। কিন্তু ঈশ্বর অর্ধ ফুটন্ত ফুলকেও তুলে নেন। ঈশ্বরের পরিকল্পনা আমরা বঝতে পারি না।’
তিনি আরো বলেন, আকস্মিক সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করা তন্দ্রা-বিপুলের ভালো দিকগুলো জীবনে ধারণ করতে পারলেই এই খ্রিষ্টযাগে যোগদান সার্থক হবে সকলের।
‘আমাদের জীবনে যেসব গুণ চর্চা করে আমরা তাদের সম্মান দেখাতে পারি,’ তাদের একমাত্র সন্তান অরণ্যকে ঢাকা ক্রেডিটের পক্ষে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।
তন্দ্রার পরিবারের পক্ষে বক্তব্য রাখেন তন্দ্রার বড় বোন ব্রিজেট জুলিয়েট কস্তা। অনেক অতীত স্মৃতি উল্লেখ করে তিনি আবেগাপ্লুত হন। তিনি বলেন, তন্দ্রা ছিল একজন আমায়িক নিষ্পাপ মেয়ে। ‘সে পরিবারের চেয়ে মনে হয় অফিসের দায়িত্বকেই বড় করে দেখতো,’ মন্তব্য করেন ব্রিজেট জুলিয়েট কস্তা।
বিপুলের পরিবারের পক্ষে স্মৃতিচারণ করেন তাঁর ছোট ভাই মুকুল গমেজ। চৌদ্দ বছর বিদেশে থাকার পর আরো ১৪ বছর এদেশে তাঁর উৎসাহের বর্ণনা দিয়ে আবেগ জড়িত কন্ঠে নানা অতীত স্মৃতিকে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘বিদেশে চৌদ্দ বছর আমাদের জন্য ছিল অনেক দীর্ঘ সময়। মানুষের মঙ্গলের জন্য সে অতি গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতো। কেভিডের সময় সিএনসিতে করে মানুষের বাসায় বাসায় গিয়ে ত্রাণ বিতরণ করেছে।’ তিনি একমাত্র ছেলে অরন্যের জন্য সবার কাছে দোয়া দান।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রতিবেশী নোটন পিউরীফিকেশন। কয়েকদিন আগে বিপুলের পুরান তাইতাল গ্রামে তাঁদের পরিবারের পক্ষে চল্লিশা পালন করা হয়। ঢাকায় তন্দ্রার পরিবারের পক্ষে তার বাবা পল ডি’কস্তা ও মেয়ের জামাই মিলে এই আয়োজন করেন। মধ্যাহ্ন ভোজের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
উল্লেখ্য, গত ৪ সেপ্টেম্বর রোজ শুক্রবার বিকেল আনুমানিক সাড়ে ৫টার দিকে মাঝিরকান্দা নিশকান্দা ব্রিজের মোড়ে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁরা রেখে গেছেন তাঁদের একমাত্র ছেলে অরণ্যকে। অরণ্য ৭ম শ্রেণিতে পড়ে।
-০-