ঢাকা ,
বার : সোমবার
তারিখ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ৯ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা ঢাকা ক্রেডিট করোনায় কমোডিটি ঋণের মাধ্যমে যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন অপু ফ্লাবিয়ান দে

করোনায় কমোডিটি ঋণের মাধ্যমে যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন অপু ফ্লাবিয়ান দে

0
703

|| সুমন কোড়াইয়া ||

চট্টগ্রামের দিয়াং ধর্মপল্লীর সন্তান অপু ফ্লাবিয়ান দে। ২০১৫ সনে শুরু করেন পানি পরিশুদ্ধকরণ ব্যবসা। তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম ‘এবি করপোরেশন’। ভাটারার হাজি মার্কেটে তাঁর দোকান।

মাত্র ১৫ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে তার ব্যবসা শুরু। প্রথম নিজেই পায়ে হেঁটে বাসা-বাড়িতে, অফিসে, দোকানে পানি সরবরাহ করতেন। তাঁর সততার কারণে ব্যবসার প্রসার বৃদ্ধি ঘটে। একজন, দু-জন করে তাঁর পানির গ্রাহক হন ৫০০ জনেরও বেশি। তিনি দৈনিক ২৪ হাজার লিটার পানি সরবরাহ করতেন। গ্রহীতা ব্যক্তির সাথে যোগ হয়েছে প্রতিষ্ঠান।

তিনি করোনা সংকটের আগে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তে বিশুদ্ধ সুপেয় পানি সরবরাহ করতেন। তখন তাঁর একজন কর্মীও যোগ হয়েছিল। তিনিও তাঁর সহযোগী কর্মী হিসেব পানি সরবরাহ করতেন।

করোনায় তাঁর ব্যবসা প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। বাকি পড়ে যায় কয়েক মাসের দোকান ও বাসা ভাড়া। দেনা বেড়ে যায় তাঁর ব্যবসায়। পরিবার চালানোও দুষ্কর হয়ে পড়ে।

একদিন তিনি জানতে পারেন ঢাকা ক্রেডিট থেকে ‘কমোডিটি ঋণ’ দেওয়া হচ্ছে। তিনি ৫০ হাজার টাকার কমোডিটি ঋণের জন্য আবেদন করেন। তাঁর ঋণ মঞ্জুর হয়। তিনি এই সমবায় প্রতিষ্ঠান থেকে নগদ টাকা ও সমবায় বাজারের পণ্য নিয়ে উপকৃত হন।

তরুণ উদ্যোক্তা অপু ফ্লাবিয়ান ডিসিনিউজকে বলেন, ‘আমি যখন করোনার ধাক্কায় ডুবতে বসেছিলেম, তখনই ঢাকা ক্রেডিটের কমোডিটি ঋণ যেন আমাকে উদ্ধার করলো। আমি নগদ টাকা দিয়ে দোকান ভাড়া পরিশোধ করতে পারলাম। পরিবারের জন্য নিলাম নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য। যেগুলো আমার পরিবারের খাদ্য নিরাপত্তায় সহায়ক হয়েছে।’

তিনি জানান, কমোডিটি ঋণের অংশ হিসেবে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মধ্যে তিনি নিয়েছেন দুই বস্তা চাউল, ৫ কেজি সয়াবিন তেল, ৫ কেজি লবণ, ২ কেজি পেয়াজসহ আরো কিছু পণ্য।

অপু বলেন, ‘আমি কমোডিটি ঋণ নিয়ে কী যে উপকৃত হয়েছি তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। করোনার আগে আমার ব্যবসায় স্বচ্ছলতা ছিলো কিন্তু কয়েক মাসে করোনা আঘাতে ব্যবসার অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায়। কারণ, পানি উৎপাদন করে বিক্রি করতে না পারলে তো লাভ হয় না।’

তিনি জানান, বেশ কিছু বিদেশী নাগরিকের অফিস ও বাসা-বাড়িতে পানি সরবরাহ করতেন তিনি, করোনায় তারা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ায় পানির অর্ডার কমে যায়। বর্তমানে ২৫০ জন গ্রাহক তাঁর প্রতিষ্ঠান থেকে পানি নিচ্ছেন।

অপু বর্তমান পানি বিশুদ্ধকরণ ব্যবসার অবস্থা সম্পর্কে বলেন, ‘এখন ব্যবসার অবস্থা বেশি ভালো না।’ তাঁর গ্রাহক কমে গেছে। তিনি যেসব প্রতিষ্ঠানে পানি দিতেন, সেগুলোর মধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়েছে। অনেকে বাসা-বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে গ্রামে। আর্থিক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে তাঁর ব্যবসায়ও। ফলে তিনি পড়েছেন লোকসানের মুখে। তবে করোনা সংকট ক্রমে উত্তরণ হলে এবং মানুষের আর্থিক অবস্থা ভালো হলে তাঁর ব্যবসার অবস্থাও আবার আগের মতো হবে বলে তিনি আশা করছেন। এখন তিনি কোনো মতে টিকে আছেন।

অপু পানি সরবরাহ করার জন্য অদূর ভবিষ্যতে ঢাকা ক্রেডিট হতে একটি গাড়ি ঋণ নিতে চান। অপু বলেন, ঢাকা ক্রেডিট করোনার সময় উপযুক্ত উদ্যোগ নিচ্ছে। যাঁরা বিপদে পড়ছেন, তাঁদের জন্য ঢাকা ক্রেডিট প্রকল্প তৈরি করছে।  এটা খুবই প্রশংসনীয় পদক্ষেপ।

ঢাকা ক্রেডিট সদস্যদের পাশে থাকলে করোনার মতো যেকোনো দুর্যোগ মোকাবেলা করা সমিতির সদস্যদের জন্য সহজ হয়ে যাবে। তিনি আশা করেন, ভবিষ্যতেও ঢাকা ক্রেডিট নতুন নতুন প্রকল্প নিয়ে সদস্যদের পাশে থাকবে।