ঢাকা ,
বার : সোমবার
তারিখ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ৯ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা দেশ নেদারল্যান্ডের রাজার পুরস্কার পাওয়ায় ব্রাদার গিয়োমকে সংবর্ধনা

নেদারল্যান্ডের রাজার পুরস্কার পাওয়ায় ব্রাদার গিয়োমকে সংবর্ধনা

0
603

ডিসিনিউজ || ঢাকা:
নেদারল্যান্ডের রাজার পুরস্কারে ভূষিত হওয়ায় ব্রাদার গিয়োমকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। বাংলাদেশ আচিক সাহিত্য-সাংস্কৃতি সংসদ ১৯ অক্টোবর এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আচিক সাহিত্য-সাংস্কৃতি সংসদের সভাপতি কবি অরন্য ই. চিরান। ময়মনসিংহের ভাটিকাশরের একটি অডিটোরিয়ামে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
খ্রিষ্টীয় ঐক্য গঠনে তেইজে ব্রাদার সংঘ কাজ করে যাচ্ছে। এই সংঘের তিনজন সদস্য নিবেদিতভাবে ময়মনসিংহে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে ব্রাদার গিয়োম একজন। তিনি দীর্ঘ ৪৪ বছর ধরে বাংলাদেশে নিঃস্বার্থভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তেইজেরা মূলত কাজ করেন খ্রিষ্টীয় ঐক্য ও আন্তঃধর্মীয় সংলাপ, প্রতিবন্ধী শিশু, পথশিশু ও কারাবন্দীদের নিয়ে।
ব্রাদার গিয়োমের অবদানের জন্য ৯ অক্টোবর পুরান ঢাকার আর্মেনীয় গির্জায় নেদারল্যান্ডের রাজার পুরস্কার লাভ করেন। সেখানে নেদারল্যান্ডের ঢাকাস্থ রাষ্টদূত হ্যারি ভার্ভেইজ এক ভাবগাম্বীর্য পরিবেশে ব্রাদারকে নেদারল্যান্ডের রাজার পুরস্কার দেন। অনুষ্ঠানে ডার্চ রাষ্টদূত হ্যারি বলেন, ‘পথশিশু ও প্রতিবন্ধী শিশুদের সেবা দেওয়ার জন্য আমরা ভাই গিয়োমকে সম্মানিত করছি। তাঁর অনুকরণীয় সেবা ও জীবনার্শ দেখে আমরা মানবতাবাদী হওয়ার প্রেরণা পাই।’
নেদারল্যান্ডের রাজার পুরস্কার পাওয়ায় ৭৪ বছর বয়সী ব্রাদার গিয়োম অত্যন্ত খুশি। অনুভূতি ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘কাজের স্বীকৃতি পাওয়ায় আমার ভালো লাগছে। আমি আগামীতে প্রতিবন্ধী ও পথশিশুদের নিয়ে আরো কাজ করে যেতে চাই।’
আদিবাসী লেখক, সংস্কৃতিককর্মী ও জাতীয় আদিবাসী ফোরামের সেক্রেটারি সঞ্চিব দ্রং সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি ব্রাদার গিয়োমকে নেদারল্যান্ডের রাজার যে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে, এটা ব্রাদার গিয়োম এবং বাংলাদেশের জন্য খুবই সম্মানের। ব্রাদার গিয়োমের জীবনাদর্শ দেশে অনেক যুবক অনুসরণ করার অনুপ্রেরণা পাবে।’
ব্রাদার গিয়োমের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ আন্তঃধর্মীয় সংলাপ কমিশনের সেক্রেটারি রেভা. ফাদার শিমন হাচ্ছা, কারিতাস ময়মনসিংহ অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক অপূর্ব আর. ¤্রং, সালেসিয়ান সিস্টার্স নার্সিং ইনস্টিটিউট ময়মনসিংহের অধ্যক্ষ সিস্টার লিয়া দ্রং, এসডিএ চার্চ ময়মনসিংহের প্রেসিডেন্ট পাস্টর দিলীপ হাগিদক, কালব জামালপুর জেলা ব্যবস্থাপক কার্তিরোজ চিরানসহ ব্রাদার গিয়োমের শুভাকাঙ্খীরা।
ফাদার শিমোন হাচ্ছা ব্রাদার গিয়োমের অবদানের কথা তুলে ধরে অনুষ্ঠানে বলেন, এক সময় ময়মনহিংহে এক মন্ডলীর সাথে অন্য মন্ডলীর বৈরি সম্পর্ক ছিল। ব্রাদার গিয়োম ও অন্যান্য তেইজে ব্রাদার খ্রিষ্টীয় ঐক্য ও আন্তঃধর্মীয় সংলাপের কার্যক্রম শুরু করার পর এখন অন্য মন্ডলী ও অন্য ধর্মের মানুষের সাথে সম্প্রীতি বৃদ্ধি পেয়েছে।
ব্রাদার গিয়োম ১৯৭৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশে আসেন। প্রথমে তিনি চট্টগ্রামে মিশনারি হিসেবে কাজ করেন। সেখানে পাঁচ বছর কাজ করার পর ঢাকায় চলে আসেন। ঢাকায় ছয় বছর কাজ করে তিনি ১৯৮৭ সালে ময়মনসিংহে চলে আসেন। তখন থেকেই তিনি ময়মনসিংহে কাজ করে চলেছেন।
বাংলাদেশে তাঁর বিশেষ অবদানের মধ্যে ঢাকায় গারোদের জন্য নকমান্দি (গারোদের ঘর) প্রতিষ্ঠা, বিভিন্ন জায়গায় স্কুল স্থাপন, পথশিশুদের পড়াশোনায় সাহায্য করা, কমিউনিটি প্রতিবন্ধী সেন্টার স্থাপন, ছাত্রাবাস স্থাপন, শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদানসহ আরো অনেক সেবামূলক কাজ কেেরন। এ ছাড়াও তিনি আদিবাসীদের ভাষা গবেষণা নিয়ে অনেক ধরনের কাজ করেছেন
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ব্রাদারের শুভাকাঙ্খীরা সরকারের নিকট তাঁর এই দেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার দাবি তুলেন।

ছবি: থকবিরাম