শিরোনাম :
খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের জাতীয় শোক দিবস পালন (ভিডিও)
ডিসিনিউজ ॥ ঢাকা
আজ জাতীয় শোক দিবস। বাঙালির ইতিহাসে এক কলঙ্কিত দিন। দেশ বিদেশের ষড়যন্ত্রে স্বপরিবারে হত্যা করা হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। দিনটি উপলক্ষে বিশেষ প্রার্থনা ও সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশন ও খ্রিস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট।
শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে মাল্য দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও, বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের আইন বিষয়ক সম্পাদক পংকজ গিলবার্ট কস্তা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় কার্যনির্বাহী সদস্য উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং ও তেজগাঁও ধর্মপল্লী পাল-পুরোহিত সুব্রত বি গমেজ।
শোক দিবসে শোককে শক্তিতে পরিণত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ। তাঁরা জাতির পিতার পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশন প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও বলেন, ‘আজকের এই দিনে আমাদের মানেনীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর আরেক কন্যা শেখ রেহেনাসহ তাঁর নিকট আত্মীয়-স্বজনদের প্রতি জানাই গভীর সমবেদনা।’
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় কার্যনির্বাহী সদস্য উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং ১৯৭১ সনের ১৫ আগস্ট জাতির পিতার সাথে আরও যাঁরা নিহত হয়েছেন, তাঁদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘শোককে শক্তি হিসেবে বিবেচনা করে আসুন আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনার যে অসাম্প্রদায়িক উন্নত দেশ গড়ার অভিযাত্রা, এই অভিযাত্রায় আমরা সকলে শরিক হই। এই অসাম্প্রদায়িক অভিযাত্রাকে সমুন্নত রাখতে হবে।’ তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পাশে থাকার জন্য অনুরোধ করেন।
বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের আইন বিষয়ক সম্পাদক পংকজ গিলবার্ট কস্তা জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘যারা এই দেশের স্বাধীনতা চায়নি, সেই পাকিস্তানের দোসরা আজকের দিনে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করেছিল। জাতির পিতা এদেশের জন্য সংগ্রাম করেছেন, প্রায় ১৪ বছর সংগ্রাম জেল খেটেছেন। তাঁর জন্য আমরা একটি স্বাধীন মানচিত্র পেয়েছি। তাঁর প্রতি জানাই কৃতজ্ঞতা।’
তিনি আরও বলেন প্রশাসনের রন্ধে রন্ধে যেখানে অসাম্প্রদায়িক চেতনার অভাব রয়েছে, যেখানে কুচক্রি মহল এখনো ঘাপটি মেরে বসে আছে, তাদের সমূলে উৎপাটন করে একটি অসাম্প্রদায়িক ও সুন্দর দেশ গড়ে তুলতে চাই।
পবিত্র খ্রিষ্টযাগ ও বিশেষ প্রার্থনার পর জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের (বিসিএ) মহাসচিব হেমন্ত আই কোড়াইয়া।
অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বিসিএ’র যুগ্ম সচিব-১ জেমস সুব্রত হাজরা, বিসিএ’র আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক থিওফিল রোজারিও, বিসিএ’র মিরপুর থানা শাখার সভাপতি যোসেফ স্বপন চৌধুরী, বিসিএ’র বনানী শাখার সাধারণ সম্পাদক পিটার রতন কোড়াইয়া, বিসিএ’র লক্ষ্মীবাজার থানা শাখার সাধারণ সম্পদক ভিক্টর রে, বিসিএ’র রমনা থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক জন অরুনেশ বাড়ৈ, বিসিএ’র ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক সৌরিন আরেং, ঢাকা ক্রেডিটের ডিরেক্টর মনিকা গমেজ, পাপিয়া রিবেরু, ক্রেডিট কমিটির সদস্য উমা ম্যাগডেলিন গমেজ, সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য স্টেলা হাজরা ও বার্নার্ড পংকজ ডি’রোজারিও।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোর রাতে সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপদগামী সদস্য ধানমন্ডির বাসভবনে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাতে একে একে প্রাণ হারিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা , বঙ্গবন্ধুর সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশু শেখ রাসেলসহ পুত্রবধু সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল।
পৃথিবীর এই জঘন্যতম হত্যাকান্ড থেকে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর অনুজ শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছেলে আরিফ, মেয়ে বেবি ও সুকান্তবাবু, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি এবং আবদুল নাঈম খান রিন্টু ও কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ জন সদস্য ও ঘনিষ্ঠজন। এ সময় বঙ্গবন্ধুর দু’কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় প্রাণে রক্ষা পান।