শিরোনাম :
উন্মোচন হলো হিটলারের মৃত্যু রহস্য!
উন্মোচন হলো নাৎসি জার্মানির স্বৈরশাসক এডলফ হিটলারের মৃত্যু রহস্য! ইউরোপিয়ান জার্নাল অব ইন্টার্নাল মেডিসিন নামে এক সাময়িকীতে ওই পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে।
নাৎসি জার্মানির স্বৈরশাসক এডলফ হিটলার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষদিকে মারা যান নি, বরং পালিয়ে গিয়ে আরো অনেক দিন বেঁচে ছিলেন—এরকম নানা তত্বকে ভুল দাবি করে একদল ফরাসী বিজ্ঞানী বলেছেন, তারা নিশ্চিত প্রমাণ পেয়েছেন যে তিনি ১৯৪৫ সালেই বার্লিনে মারা গিয়েছিলেন। ফরাসী ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল রাশিয়ায় সংরক্ষিত হিটলারের দাঁত ও মাথার খুলির অংশ পরীক্ষা করে বলেছেন, বুলেটের আঘাত ও সায়ানাইড পান করার ফলে যে হিটলার মারা গিয়েছিলেন, এ ব্যাপারে তারা প্রায় শতভাগ নিশ্চিত।
প্রধান গবেষক ফিলিপ শার্লিয়ে বলছেন, তাদের এই গবেষণার ফলে নাৎসি জার্মানির নেতার ভাগ্যে কি ঘটেছিল তা নিয়ে বহু ষড়যন্ত্র তত্ব নস্যাৎ হয়ে গেছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে ১৯৪৫ সালের ৩০শে এপ্রিল বার্লিনে মাটির নিচের বাঙ্কারের ভেতর এডলফ হিটলার এবং তার সদ্যবিবাহিত স্ত্রী ইভা ব্রাউন আত্মহত্যা করেন। ইভা ব্রাউন সায়ানাইড বিষ পান করেন, আর হিটলার নিজের মাথায় গুলি করেন। সম্ভবত তিনিও সায়ানাইড গ্রহণ করেছিলেন। দীর্ঘদিনের সঙ্গিনী ইভাকে তার আগের দিন বাঙ্কারের মধ্যে বিয়ে করেন হিটলার। তখন রুশ সৈন্যরা বার্লিন শহরের উপকণ্ঠে ঢুকে পড়েছে, এবং নাৎসি শাসকদের পতন নিশ্চিত হয়ে গেছে।
হিটলারের মৃতদেহ জার্মান সৈন্যরাই বাঙ্কার থেকে বের করে রাইখা চ্যান্সেরির বাগানে একটি গর্তে ফেলে পেট্রোল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে ফেলে। কিন্তু তার মৃতদেহের কিছু অংশ রুশরা উদ্ধার করে এবং তা মস্কোয় নিয়ে যায়। ফরাসী বিজ্ঞানীরা বলছেন, ১৯৪৬ সালের পর তারাই প্রথম হিটলারের দেহাবশেষের ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন। তার মাথার খুলির একাংশের বাম দিকে একটি গর্ত দেখা গেছে – যা সম্ভবত বুলেটের আঘাতে সৃষ্ট। এ ছাড়া হিটলারের বাঁধানো দাঁতের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে তারা নীলাভ আস্তরণ দেখতে পেয়েছেন, যা সম্ভবত ধাতব দাঁতের সাথে সায়ানাইডের সংস্পর্শে হয়েছে।
হিটলারের মৃত্যু নিয়ে কেউ বলেন, হিটলার ১৯৪৫ সালে মারা যান নি, তিনি জার্মানির পরাজয়ের পর একটি সাবমেরিনে করে আর্জেন্টিনা পালিয়ে যান। আরেক তত্ত্বে বলা হয়, হিটলার অ্যান্টার্কটিকায় এক গোপন ঘাঁটিতে চলে গেছেন। প্রধান গবেষক ফিলিপ শার্লিয়ে বলেন, তাদের গবেষণার পর এখন সব মতামত থেমে যাওয়া উচিত। হিটলারের মৃত্যুর পরদিন ১ মে জার্মান রেডিওতে খবরটি ঘোষণা করা হয়। সেদিন লন্ডনের ৪০ মাইল উত্তরে রেডিং শহরের উপকণ্ঠে বিবিসি মনিটরিংএর দফতরে বসে জার্মান রেডিওর অনুষ্ঠান শুনছিলেন জার্মানি থেকে পালিয়ে আসা কর্মী কার্ল লিমান। তিনি বলেছেন, শ্রোতাদের জানানো হলো যে একটা গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা আসছে। এর পর তারা ভাবগম্ভীর সঙ্গীত বাজালো, এবং ঘোষণা করলো যে ‘বলশেভিজমের বিরুদ্ধে লড়াই করার সময়’ হিটলার মারা গেছেন।’
তারা বলেনি যে তিনি আত্মহত্যা করেছেন, বরং তাদের কথায় মনে হয় যে তিনি যুদ্ধ করতে করতে নিহত হয়েছেন। এটা ছিল একটা বড় মিথ্যা। ৭ মে জার্মানি আত্মসমর্পণ করে। ইউরোপে ৬ বছরের যুদ্ধের অবসান হয়। (সূএ: বিবিসি)
আরবি.এইচআর. ২১ মে, ২০১৮