ঢাকা ,
বার : সোমবার
তারিখ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ৮ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা ga_01 বাবা দিবসে আমি ও আমার বাবা

বাবা দিবসে আমি ও আমার বাবা

0
1802

সাগর এস, কোড়াইয়া
এবারে বিশ্বের অনেক দেশের সাথে জুন মাসের তৃতীয় রোববার অর্থাৎ ১৭ জুন আমাদের দেশে ‘বাবা দিবস’ পালন করা হবে। বিংশ শতাব্দীর শুরুতে সাদামাটাভাবে বাবা দিবসটি পালন করা হলেও মা দিবসের মতো তেমন ঘটা করা হতো না। পরিবারে মায়েদের পাশাপাশি বাবাদের সন্তানের প্রতি দায়িত্বশীল-এটা বুঝানোর জন্যেই বাবা দিবসের সূচনা।

পরিবারে একজন মায়ের যে ভূমিকা সেক্ষেত্রে বাবার ভূমিকাও কোনো অংশে কম নয়, বরং বাবারা কঠোর শ্রম দ্বারা নিজেদের শরীর স্বাস্থ্যকে ঠিক রেখে কামাই-রোজগারে নিয়োজিত থেকে পরিবারের ভরণপোষণে যথেষ্ট দায়িত্ব পালন করে থাকেন। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় পৃথিবীতে মায়েদের সন্তানের প্রতি আদর-যতœ-ভালোবাসা বেশি করে দৃশ্যমান হওয়ায় পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের মানুষ গেলেন ‘মা’। অথচ একটি পরিবারে ভরণ-পোষণ, সন্তানের পড়ালেখা, খাবার-দাবার সংগ্রহ করার দায়িত্ব পালন করতে অনেক বাবা চলে যাচ্ছেন দূরে বহুদূরে কাজ করতে, কেউ বা ফসল ফলাতে সারাদিন মাঠেই থাকছেন আর এ সুযোগে সন্তানেরা বাবার সান্নিধ্যলাভ করছে কম সময় আর আদরটাও পাচ্ছে কম।

যতটুকু জানা যায়, বিংশ শতাব্দীর শুরুতে ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দের ৫ জুলাই আমেরিকার পশ্চিম ভার্জিনিয়ার ফেয়ারমন্টের এক গির্জায় প্রথম পালিত হয় বাবা দিবস। আরো জানা যায়, আমেরিকারই ওয়াশিংটনের এক ভদ্রমহিলা সনোরা স্মার্ট ডড-এর চিন্তায়ও পিতৃদিবসের ধারণা আসে। ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দেও তিনি জানতেন না ভার্জিনিয়ায় সেই গির্জায় পালিত হওয়া বাবা দিবসের কথাটি। ডড এই ধারণাটা পান গির্জার এক ফাদারের উপদেশ থেকে। সেই ফাদার মাকে নিয়ে অনেক সুন্দর সুন্দর কথা বলছিলেন। তখনই ডড চিন্তা করলেন মাকে নিয়ে যদি সকলেই ভালোবাসা প্রদর্শণ করে, তাহলে বাবার জন্যেও তো কিছু একটা করা দরকার।

ডড তার বাবাকে খুবই ভালবাসতেন। এ চিন্তা থেকেই তিনি পরের বছর ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে বাবাকে ভালবাসায় শ্রদ্ধা জানাতে পালন করা শুরু করেন বাবা দিবস। তখন মানুষ যতটা মাকে নিয়ে উৎসাহ প্রদর্শন করতো কিন্তু বাবাকে নিয়ে কেমন যেন টানাপোড়েনের মধ্য দিয়েই পালন করতো বাবা দিবসটি। অনেকেই তখন বাবা দিবসটিকে হাস্যকর করে উপহাস করতেন। তবে, মানুষের মন-মানসিকতার দিন পাল্টাতে সময় লাগেনি।

১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দে আমেরিকান সংসদে বাবা দিবসকে ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করার জন্যে একটা প্রস্তাবনা বিল উত্থাপন করা হয়। জানা যায়, ১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দে সেই সময়ের আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ক্যালভিন কুলিজ বিলটিতে পূর্ণ সমর্থন দান করেন। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি. জনসন বাবা দিবসকে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করেন এবং সেই থেকেই প্রতি বছর বিশ্বের বহু দেশে জুন মাসের তৃতীয় রোববার বাবা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

আমিও বাবার একজন সন্তান। সেই অনুভূতি থেকেই আমার বাবার সান্নিধ্যলাভে ও তাঁর সাহচর্য্যে যে স্মৃতিময় ঘটনা জড়িয়ে আছে তন্মধ্যে সামান্য কিছু স্মৃতিময় অতীত রোমন্থন করার প্রয়াসমাত্র।

আমার বাবার মতো আমিও বাবা হলাম, সন্তানের বাবা। বাবা যখন হলাম, কী আনন্দ মনে, প্রাণে যে কী শিহরণ! বাবা হওয়ার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা না গেলেও অনেক স্মৃতিময় স্বপ্নগুলো এখনও মনের গভীরে গেঁথে রয়েছে।

বাবা হওয়া যেমন আনন্দের তেমনি রয়েছে অনেক দায়িত্বও সন্তানদের প্রতি, পরিবারের প্রতি। আমি আমার বাবার সন্তান হিসেবে আমি নিজে যেমন গর্বিত, তেমনি গর্ববোধ করে আমার সন্তানেরাও। শুধু আমি বাবার সন্তান একা নই, গর্বিত আমরা দশ ভাই-বোন। আমাদের বাবা সামান্য বেতনে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে বাবুর্চির চাকরি করেও আমাদের নিরক্ষর রাখেননি। আবার উচ্চ শিক্ষাও গ্রহণ করিনি। বাবার এ সামান্য বেতনে সমাজে আমাদের চলার মতো উপযোগী করে গেছেন। আমাদের বাবা অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা করে আমাদের জন্যে সহায়সম্বল যেটুকু রেখে গেছেন, তা বাবার জন্যে অনেক; আমাদের জন্যে সহায়ক। আশির দশকেও সমাজের একটি পরিবার চালাতে যেখানে হিমশিম খেতে হতো সেখানে আমাদের বাবাও সে সময়ে তেমনি অনেক কষ্ট করে অন্যের বাড়ি থেকেও আমাদের সাধারণভাবে জীবনযাপন করতে সাহায্য করেছেন।

আমাদের মায়ের বাবা, অর্থাৎ আমাদের দাদু (নানা) তৎকালে বিদেশী জলজাহাজে চাকরি করতেন। দাদু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ভুলক্রমে কোনো এক দেশের বোমার আঘাতে তাদের জাহাজ আক্রান্ত হয় এবং অনেকের সাথে দাদুও নিহত হন। দাদু আর ফিরে আসেননি। এ খবরটা এলাকার বর্তমান প্রজন্মের কাছে অনেকটাই অজানা। আমাদের দাদু বিশ্বযুদ্ধে নিহত হওয়ার পর থেকে আমাদের দিদিমা মরণের আগ পর্যন্ত সদরঘাট কাচারী থেকে পেনশন পেয়েছিলেন এবং এটাই আমাদের কাছে সত্যের স্বীকৃতি। আমরা গর্বিত আমাদের দাদু আমাদের জন্যে বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতি রেখে গেছেন।

আমাদের মামা ছিল না। তাই দিদিমাকে (নানীকে) কে দেখবে বা একমাত্র মাসীকে কে দেখবে! ভেবেচিন্তে বাবা পরিবারের সবার সাথে আলোচনা করে শিশু অবস্থায়ই বড়দিদিকে নিয়ে চলে গেলেন দিদিমার বাড়ি। সেখানে গিয়ে বাবা বহু কষ্টে মাকে নিয়ে সংসার পাতলেন, দিদিমাকেসহ নিয়ে। পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে প্রতিবেশীদের তেমন সহযোগিতা পেতেন না বাবা। তাই কষ্টের অন্ত ছিল না। তখন এক বাড়িতে গরু আর অন্য বাড়িতে খড় রাখতে হতো। নিজের ঘরে যাবার রাস্তাটা পর্যন্ত ছিল না। এমনি করে নানা ঘাতপ্রতিঘাতে অবশেষে জমি কিনলেন গ্রামের পশ্চিম প্রান্তে প্রকৃতির নিরিবিলিতে।

আমাদের বাবা তিনটি রাজত্ব দেখেছিলেন। বৃটিশ আমলের রাজত্ব, পাকিস্তানী আমল ও স্বাধীন বাংলাদেশ। বৃটিশ আমলে জন্ম, পাকিস্তানী আমলে সংসার গড়া এবং বাংলাদেশ আমলে মৃত্যুবরণ। পরিবার গঠনের মধ্য দিয়ে তিনি ছয়জন ছেলে ও চারজন মেয়ে উপহার হিসেবে পেয়েছেন। মজার বিষয় হলো আমাদের বাবা কেন জানি বৃটিশ আমলে পড়ালেখা করেননি; আর তাই তিনি এক কথায় বলা চলে ‘ব’ কলম ছিলেন। সে জন্যে আমি কখনো বাবাকে কোনো পত্রিকা পড়তেও দেখিনি, যদিও দেখতাম জানি না বুঝতো কিনা, হয়তো পত্রিকার ছবির দিকে তাকিয়ে থাকতেন। এ জন্যে হয়তো কোনোদিন আমাকে পড়ার চাপও দেননি।

তবে বাবাকে কেউ একজন হয়তো শুধুমাত্র তার নামটি লিখতে শিখিয়েছিলেন। তাও লিখতেন ধীরে, বহু কষ্টে। আমি বেশ বুঝতে পেরেছিলাম বাবা সম্পত্তি হেফাজতে রাখতে ও চাকরি ক্ষেত্রে নামটি লিখতে হবে বলে শিখেছিলেন। আমি মাঝে মাঝে ভাবি, বাবা-মা নাকি পড়ালেখা না জানলে সন্তানেরাও বিপথে যায় বা অকর্মন্য হয়। তবে আমরা কেউ উচ্চশিক্ষা নিইনি। তবুও কিন্তু সাধারণমানের শিক্ষায় যতটুক প্রয়োজন, ততটুকুই গ্রহণ করেছি। ‘ব’ কলম বাবা ছিলেন হলিফ্যামিলি হাসপাতালের অতি সামান্য বেতনের চাকুরে, যেটা শুরুতে বলেছি।

চাকরি জীবনের শেষ সময়েও তিনি যে বেতন পেয়েছেন, ওই সময়ে যারা বড় প্রতিষ্ঠানে বড় বাবুর্চি ছিলেন, তাদের একদিনের বেতনেরও সমান হবে না। এ সামান্য বেতন দিয়ে দশজন ছেলেমেয়েকে মুখে ভাত তুলে দেওয়া ঈশ্বরের প্রত্যক্ষ কৃপা ছাড়া সম্ভবই নয়। পড়ালেখা তো দূরে থাক, ভালমানের খাবারই জোটবে না। আমাদের পড়ালেখায় বাবার দায়িত্ব নিয়েছিলেন মাতৃতুল্য একমাত্র মাসী। বাবা যখন অবসর গ্রহণ করলেন, তখন তিনি হাসপাতাল থেকে মাত্র এক লাখেরও বেশি কিছু টাকা সারাজীবনের সঞ্চয় পেয়েছিলেন।

বর্তমানে একজন বাবার এক লাখ টাকা মাসিক বেতন তেমন কোনো ব্যাপার না। আমাদের বাবা সেই অবসরের প্রাপ্ত টাকা দিয়ে একটি জমি কিনেছিলেন, দাম ছিল লাখ টাকারও কম। হয়তো বাবার সেই সারাজীবনের কষ্টের টাকা ন্যায্য ছিল না বলে জমি কিনে সেই জমির মূল্যই বলে দেয় বাবা লাখ টাকার জমি আজ কয়েকগুণ। এটাই বাবার বড় প্রাপ্তি। তিনি তার জন্যে কোনো কিছুই করে যাননি। রেখে গেলেন আমাদের জন্য কিছু স্থাবর স্মৃতি। আমরা তাঁকে কিছুই দিতে পারিনি। হয়তো বাবার মতো একদিন আমরাও বুড়ো হবো। তখন হয়তো আমাদের সন্তানেরা এভাবেই বলবে, বাবা আমাদের জন্যে অনেক করে গেলেন আমরা কিছু করতে পারলাম না।

আমার স্পষ্ট মনে আছে ক্লাস নাইনে উঠে আমি পায়ে জুতো পড়েছি এর আগে সেন্ডেলই ছিল ভরসা। কারণ, বাবার সামর্থ্যটাকে গুরুত্ব দিতাম মনের চাহিদাটাকে লুকিয়ে রেখে। বাবা যখন ছুটিতে প্রতি সপ্তাহে বাড়ি আসতেন, তখন তার আসার পথ আমরা কত যে উপলব্ধি করতাম সেটা মনে হলে খুব আপসোস হয়। জানতাম বাবা পাউরুটি নিয়ে আসবে আর আমরা খাবো চিমটি দিয়ে টুকুরো টুকুরো করে যাতে তাড়াতাড়ি শেষ না হয়ে যায়।

ছুটির দিনে বাবার সাথে কালিগঞ্জ হাটে যেতাম। বাড়ি থেকে হাট বহুদূর। কাঁচারাস্তা দিয়ে হাটে যেতাম। কদাচিৎ আসার পথে হাট থেকে রিক্সায় আসতাম তাও আবার বাবার পায়ের নিচে বসে, কারণ পাশে অপরিচিত রিক্সাযাত্রী বসতো। হায়রে স্মৃতি আজ রিক্সা চড়া আমাদের কাছে কোনো ব্যাপারই নয়। বাবা এমন করেছেন, একদিন রাগ করে আমাকে টেনে নিয়ে উত্তর ঘাট দিয়ে সন্ধ্যাবেলায় বাড়ির পাশে রেখে এলেন। মনের মাঝে ভয় প্রবেশ করলেও কী আর করা, বসে রইলাম অন্ধাকারে। স্মৃতিগুলো রোমন্থন করতে গেলে লেখা শেষ হবে ঠিকই কিন্তু অন্য আরেকটি স্মৃতি উঁকি দিয়ে বলবে আমিওতো একটা স্মৃতি বলতে ভুলে গেলে তুমি!

বাবা চাকরিজীবন থেকে অবসর নেওয়ার পর বেশ ভালই চলছিল বাড়িতে মা, বড়ভাই ও বৌদি নাতি-নাতনীদের সাথে। কয়েক বছর পর বাবা একটু অসুস্থ হয়ে পড়লেন। তাকে ছোট একটা অপারেশন করাতে হলো। হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে তিনি হেঁটে হেঁটেই ঢুকেছিলেন। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে তিনি অপারেশনের পর আর হাঁটতে পারলেন না। আমরা ভাবিনি যে, বাবার অপারেশন পরবর্তীতে এমন পরিস্থিতি হবে। ভাল মানুষ অপারেশন থিয়েটারে ঢুকলেন ছোট্ট একটা অপারেশন করাতে আর বের হয়ে এলেন আরো অসুস্থ হয়ে। ডায়বেটিস ছিল বাবার। তাই হয়তো অপারেশনটা সঠিক হলেও সুস্থ হয়নি। অনেক কষ্ট করে তিনি হাঁটতেন। যখন আমরা বুঝতে পারলাম বাবার আর কোনো হাঁটার চিকিৎসা নেই, তখন তিনি বাড়িতেই রয়ে গেলেন। মাঝে মাঝে দিদির বাসায় আসতেন খুব কষ্ট করে। একজন বুড়ো মানুষও লাঠিভর করে হাঁটতে পারেন, কিন্তু আমার বাবা সেটাও পারলেন না।
বাড়িতে যখন ছিলেন তখন ঘর থেকে উঠানে বা রান্না ঘরের বারান্দায় যেতে আমরা একটি বাঁশের লাটি এপাশ ওপাশ করে বেঁধে দিলাম যেন বাঁশটি ধরে ধরে যেতে পারেন। বাবাকে দেখতাম সেই বাঁশটি ধরে খুব ধীরে ধীরে এ ঘর থেকে ও ঘর যাচ্ছেন। মা তখন একদম বাবার কাছাকাছি থাকতেন। বাজার করা ছিল বাবার নিত্যদিনের একটা কাজের অংশ। টাকা থাকুক বা না থাকুক দেখতাম তিনি ব্যাগ ভর্তি করে বাজার নিয়ে আসতেন যখন সুস্থ ছিলেন। ভাল খাবার না হলে তিনি মন খারাপ করতেন, তাই তিনি বাজারটাও করতেন সেভাবেই। বিছানায় শুয়ে শুয়ে তিনি হয়তো ভাবতেন কী ছিলাম আর কী হয়ে গেলাম।

এভাবে বাবা অসুস্থ হয়ে বিছানায় থাকতেন এবং আমরা প্রতি সপ্তাহে বাড়ি যেতাম বাবাকে দেখতে। ফিরে আসার সময় বাবা প্রায়ই বলতেন ‘আবার কবে আইবা? সামনের সপ্তায় আইতানা?’ ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকতেন। এভাবে তাকানোটাও একদিন চিরতরে বন্ধ হয়ে গেল বাবার চোখ দিয়ে। তিনি হঠাৎ শেষ ক’বছর চোখে একদম দেখেননি। অন্ধ হয়ে গেলেন ডায়বেটিস এর কারণে। তিনি আরো অসহায় হয়ে পড়লেন। বাবা জীবনের পড়ন্তবেলায় বিছানায় খাওয়াদাওয়া, পায়খানা করলেও মা-ই সব যতœাদি করতেন। বাবার গালে দাড়ি যখন বড় হয়ে যেত, তখন পরিস্কার করে দিতে আসতেন সম্ভু নাপিত ও দাদা। এত অসুস্থতার পরও কেউ বাড়িতে এলে তিনি খুশি হতেন তার সাথে সময় কাটানোর জন্যে।

দীর্ঘদিন ক্লান্ত অবসন্ন দেহে ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দের আগস্ট মাসের এক রোববার সকালে বাবা আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। তার অপরিসীম ভালোবাসায় আমরা গর্বিত, তাকে স্মরণে রাখবো আমরা যতদিন বেঁচে থাকবো। বাবা ছিলেন একদম সরল মনের মানুষ। কোনোদিন কারো সাথে ঝগড়া করতে দেখিনি। বাবার এ আদর্শ যেন ধরে রাখতে পারি। বাবা, আজ তোমার কাছে ্এই আশীর্বাদ যাচনা করি।

(তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া)