শিরোনাম :
ঢাকায় প্রথমবারের মতো আয়োজিত ‘উইমেন অব দ্য ওয়ার্ল্ড-ওয়াও’ ফেস্টিভ্যাল
নারী ও কিশোরীদের ক্ষমতায়নের অগ্রগতিতে বৈশ্বিক আন্দোলন সৃষ্টিতে কাজ করা যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা ওয়াও ফাউন্ডেশনের অংশীদারিত্বে ঢাকায় প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ‘উইমেন অব দ্য ওয়ার্ল্ড’- ওয়াও ফেস্টিভ্যাল আয়োজন করেছে ব্রিটিশ কাউন্সিল।
বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ৫ ও ৬ এপ্রিল এ ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত হবে। ব্রিটিশ কাউন্সিল বিশ্বজুড়ে সাংস্কৃতিক সম্পর্ক ও শিক্ষার সুযোগ তৈরির ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক সংস্থা হিসেবে কাজ করে।
‘ওয়াও ঢাকা ২০১৯’ ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধনী দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, এমপি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রদূত ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব নাসিম ফেরদৌস, ওয়াও ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা জুড কেলি সিবিই এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলের ডেপুটি ডিরেক্টর অ্যান্ড্রিউ নিউটন।
সব ওয়াও ফেস্টিভ্যালেই নারী ও কিশোরীদের অর্জনসমূহকে স্বীকৃতি দেয়ার যে ধারাবাহিকতা সেটি অক্ষুণ থাকছে ওয়াও ঢাকা ফেস্টিভ্যালেও। সমাজের বিভিন্ন পর্যায় থেকে উঠে আসা নারী নেতৃত্বের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আয়োজিত হতে যাওয়া উৎসবটি স্থানীয় আমেজে আন্তর্জাতিক মানের অভিজ্ঞতা দিতে সমর্থ হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন আয়োজকরা। এ উৎসবে আয়োজিত আন্তঃসাংস্কৃতিক সংলাপের মাধ্যমে নারী ও কিশোরীদের সম্ভাবনার পথে বাধা সম্পর্কে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে সচেতনতা তৈরি ও সংকটগুলো নিরসনে সৃজনশীল সমাধান খুঁজে বের করার পথে সহায়ক হবে।
সমাজের সকল স্তর থেকে আমন্ত্রিত অতিথি, বক্তা ও অংশগ্রহণকারীদের সমন্বয়ে আয়োজিত এই উৎসব অংশগ্রহণকারীদের সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে ও জেন্ডারসমতার ভিত্তিতে সমাজ বিনির্মাণে সহায়ক করে গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখবে বলেও আশাবাদী ফেস্টিভ্যালের আয়োজকরা।
ফেস্টিভ্যালে আমন্ত্রিত প্রধান অতিথি ডা. দীপু মনি এই ফেস্টিভ্যালের গুরুত্ব সম্পর্কে বলেন, ‘বাংলাদেশে জেন্ডারসমতার ভিত্তিতে সমাজ বিনির্মাণের মূলে রয়েছে নারী ও কিশোরীদের অগ্রগতি। এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে নারীর ক্ষমতায়ন ও জেন্ডারসমতার প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও বিশেষ জোর দিচ্ছে। যদিও এ লক্ষ্য পূরণে বাংলাদেশের অগ্রগতি নিয়ে আমাদের গর্ব করবার সুযোগ রয়েছে, তবুও কিছু ক্ষেত্রে এখনো কিছু বাধা রয়ে গেছে। এসব বাধা নিরসনে অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতা ও সর্বোত্তম অনুশীলনীগুলো জানা এবং নারী ও কিশোরীদের অগ্রগতির পথ সুগম করে দিতে দেশে ‘উইমেন অব দ্য ওয়ার্ল্ড’র মতো গণঅংশগ্রহণমূলক প্ল্যাটফর্ম শুরু করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আমরা আশা করি এরকম একটি ফেস্টিভ্যাল প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের নারী ও কিশোরীদের জীবনে গঠনমূলক পরিবর্তন আনবে।’
জুড কেলি বলেন, বাংলাদেশ ওয়াও ফেস্টিভ্যাল শুরু করা অত্যন্ত সময়োপোযোগী একটি আয়োজন। কেননা, নারীদের প্রতিনিয়ত সম্মুখীন হওয়া সমস্যাগুলোই তুলে আনে ওয়াও ফেস্টিভ্যাল, আর দেখাতে চায় কিভাবে একসাথে সমস্যাগুলো মোকাবিলা করার মাধ্যমে ভবিষ্যতে সমাজে দীর্ঘমেয়াদী ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব। নাটক, গান, শিল্প, গল্প ও আলোচনার সুযোগ তৈরির মাধ্যমে ওয়াও নারীদের নিজেদের গল্প সবার সামনে তুলে ধরতে ও সমমনা সকলের সাথে এক কন্ঠে আওয়াজ তোলার সুযোগ তৈরি করে দেয়। যাদের সবার হয়তো এর আগে নিজেদের মধ্যে দেখাও হয়নি। দেশজুড়ে নারীদের অংশগ্রহণে সহায়তা করে তাদের সামাজিক বাধা ও প্রতিকূলতা দূর করে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে ওয়াও যাত্রা শুরু করেছে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত।’
ফেস্টিভ্যালে চিত্র প্রদর্শনী, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, পারফর্ম্যান্স আর্ট, সামাজিক প্রথা, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা, পুরুষ ও পুরুষত্ব এবং নারীবাদের মতো বিষয়ের ওপর প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। সমাজের বিভিন্ন স্তরের নারীদের বাস্তবতা, নিজেদের উন্নতির পথে তারা যে বাধা ও প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয় এ বিষয়ের ওপর বিভিন্ন কর্মশালাও অনুষ্ঠিত হবে এ ফেস্টিভ্যালে।