শিরোনাম :
বিশপ বিডি মন্ডল ছিলেন উত্তম মেষপালক
নির্মল রোজারিও:
চার্চ অব বাংলাদেশের অবসরপ্রাপ্ত মডারেটর ও বিশপ বার্ণাবা দ্বিজেন (বিডি) মন্ডল ছিলেন উত্তম মেষপালক। তিনি ছিলেন ভিন্নধর্মী একজন বিশপ। প্রকৃতপক্ষে তিনি এদেশে দেশীয় সংস্কৃতির সাথে সম্পৃক্ত থেকে চার্চ অব বাংলাদেশ ও খ্রিষ্টমন্ডলীর জন্য কাজ করেছেন। তিনি দেশকে ভালবাসতেন, মানুষকে ভালবাসতেন।
তিনি চার্চ অব বাংলাদেশের প্রথম বাঙালি বিশপ ছিলেন। তিনি ছিলেন আপাদকমস্তক একজন ভাল মানুষ। তিনি ছিলেন সার্ভেন্ট লিডার। একজন উত্তম মেষপালক বলতে যা বুঝায়, তিনি তা-ই ছিলেন। উনার মধ্যে সকল ধরনের গুণ ছিল।
তাঁর সাথে আমার বিভিন্ন সময়ে যোগাযোগ হয়েছে, তিনি অত্যন্ত বিনয়ী একজন মানুষ ছিলেন। তিনি মানুষের সমস্যা সমাধানে যথেষ্ট সক্রিয় ছিলেন। সবচেয়ে বড় বিষয় ছিল, তিনি যখন মডারেটর ছিলেন, তখন তিনি হতদরিদ্র ছেলে-মেয়েদের সাহায্য করেছেন। তাঁর মাধ্যমে অনেক ছেলে-মেয়ে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন, কর্মসংস্থান করেছেন। তিনি ছিলেন নিরপেক্ষ ভাবমূর্তির একজন মানুষ এবং স্বনামধন্য ধর্মীয় গুরু। উনাকে নিয়ে বির্তক হয়েছে, সেটা আমরা শুনি নাই।
তিনি আন্তঃমান্ডলিক সম্পর্ক সৃষ্টিতে দৃশ্যমান অবদান রাখেন। তিনি আন্তঃধর্মীয় সম্পর্ক রক্ষা করতে কাজ করেছেন, যেটা আমাদের খ্রিষ্ট মন্ডলীর জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। উনার ভূমিকা ছিল হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলিম, খ্রিষ্টান সব ধর্মের জন্য।
তাঁর সময় চার্চ অব বাংলাদেশে কখনো বিতর্ক ছিল না। তিনি একজন প্রশংসিত ব্যক্তি ছিলেন। সমস্ত মন্ডলীর মধ্যে তিনি সুসম্পর্ক বজায় রেখে মন্ডলীকে তিনি পরিচালনা করেছেন। এটা আমাদের জীবনের জন্য একটা শিক্ষা। বিশপ যোয়াকিম রোজারিও সিএসসি যেমন স্থানীয় মন্ডলীতে গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, মানুষকে ভালবেসেছেন, বিশপ বিডি মন্ডলের মধ্যেও আমি সেই স্পিরিট ব্যক্তিগতভাবে লক্ষ্য করেছি। বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের অন্তবর্তীকালীন কমিটির সদস্য হিসেবে ১৯৯৭ থেকে ২০০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন।
আমরা উনার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি। উনার মত ব্যক্তি আমাদের সমাজে খুব প্রয়োজন। আমার বিশ্বাস, তিনি স্বর্গে আছেন। তাঁর শোকার্ত পরিবারের প্রতি জানাই সমবেদনা। তাঁর মতো নিঃস্বার্থ মানুষ আরো আসুক এই প্রত্যাশা করি।
অনুলিখন: সুমন কোড়াইয়া