ঢাকা ,
বার : সোমবার
তারিখ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ৯ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা ঢাকা ক্রেডিট অনুষ্ঠিত হলো ঢাকা ক্রেডিটের ৫৯তম বার্ষিক সাধারণ সভা

অনুষ্ঠিত হলো ঢাকা ক্রেডিটের ৫৯তম বার্ষিক সাধারণ সভা

0
1254

।। নিজস্ব প্রতিবেদক।। ডিসিনিউজ।।
প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে দি খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি:, ঢাকা (ঢাকা ক্রেডিট) এর ৫৯তম বার্ষিক সাধারণ সভা ২০১৯।
৪ অক্টোবর (শুক্রবার) সকাল ১০টায় প্রধান কার্যালয়ের বিকে গুড কনফারেন্স হলে সমিতির প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ গমেজের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি পংকজ গিলবার্ট কস্তার সঞ্চালনায় এই বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমবায় অধিদপ্তরের মাননীয় নিবন্ধক ও মহাপরিচালক জনাব মো. আমিনুল ইসলাম। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কাককোর চেয়ারম্যান ও ঢাকা ক্রেডিটের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও, দি মেট্রোপলিটান খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিঃ-এর চেয়ারম্যান আগষ্টিন পিউরীফিকেশন, ঢাকা ক্রেডিটের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হিউবার্ট গমেজ, ঢাকা জেলা ভারপ্রাপ্ত সমবায় কর্মকর্তা জনাব মো. জহিরুল হক, সমবায়ের অফিসার মোসাম্মত নূর-এ-জান্নাত, তসলিমা আক্তার, ঢাকা ক্রেডিটের ভাইস-প্রেসিডেন্ট শীরেন সিলভেস্টার গমেজ, ট্রেজারার বিপুল লরেন্স গমেজসহ ঢাকা ক্রেডিটের সকল কর্মকর্তা, উর্ধ্বতন কর্মী ও প্রতিনিধিবৃন্দ।


সভাপতির বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ বলেন, ‘বাংলাদেশের সমবায়ের ইতিহাসে ঢাকা ক্রেডিট একটি রোল মডেল। সদস্যদের ঋণ ও সঞ্চয় সেবা প্রদানের পাশাপাশি আমরা বড় ও উল্লেখযোগ্য কিছু উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করেছি এবং কিছু কাজ চলমান রয়েছে। সমবায়ের ইতিহাসে ঢাকা ক্রেডিটই প্রথম হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে, যা গাজীপুরের কালিগঞ্জের মঠবাড়ীতে ৩০০ শয্যার ডিভাইন মার্সি জেনারেল হাসপাতাল নাম নিয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ প্রদান, গবেষণাসহ বিভিন্ন ব্যক্তি, সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কল্যাণমূলক কাজে আর্থিক সহযোগিতা করার লক্ষে সমিতির প্রতিষ্ঠাতা স্বর্গীয় ফাদার চালর্স জে. ইয়াং-এর নামে একটি ফাউন্ডেশন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে আমরা ঢাকা ক্রেডিটের অ্যাপস্ এর যাত্রা শুরু করেছি।’
‘একটি ডিজিটাল, স্মার্ট ও টেকসই ঢাকা ক্রেডিট বিনির্মাণে আমরা ২০১৯-২০২০ এবং ২০২০-২০২১ অর্থবছরের জন্য যথাক্রমে ১,২৮৩ কোটি এবং ১,৩৯০ কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ রেখেছি। এই উন্নয়ন কর্মকান্ড ঢাকা ক্রেডিটের পুরো দৃশ্যপট বদলে দেবে বলে আমরা বিশ্বাস করি’ বলেন প্রেসিডেন্ট বাব মার্কুজ গমেজ।


প্রধান অতিথি নিবন্ধক ও মহাপরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘৬৪ বছর আগে ৫০ জনের সংখ্যাটি আজ ৪০ হাজার সদস্যের সংখ্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাঁদের অবদানে আজ এই সাফল্য সেই আর্চবিশপ লরেন্স গ্রেণার এবং ফাদার চালর্স জে. ইয়াংকে শ্রদ্ধাভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। আজ সমিতি যেখানে উপনীত হয়েছে, তা কারো একার অবদান নয়, অবদান সবার। অনেক সমবায় সমিতির দুর্নাম রয়েছে। তবে তা সব সত্যি নয়, আবার পুরোটাই মিথ্যে নয়। আমি যখন ঢাকা ক্রেডিটে আসলাম, তখন বুঝতে পারলাম সমবায়ে অনেক ভাল কিছুই আছে। ঢাকা ক্রেডিট অনেক ভাল ভাল কাজ করছে।’
সদস্যদের অংশগ্রহণ নিয়ে তিনি বলেন, ‘২১ ধারাটি বিলুপ্ত করে যেন সদস্যদের অংশগ্রহণে বার্ষিক সাধারণ সভা করা যায়, সেই কাজ করছি আমি। ধারাটি বাতিলের জন্য প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের নিকট প্রস্তাব পাঠিয়েছি, আশা করছি এটি সংশোধন হবে। শিথিলতা থেকে আমাদের মুক্ত হতে হবে। আমাদের মাঝে যেন গণতন্ত্র থাকে।’
এ সময় তিনি প্রস্তাব রাখেন, সমবায়ী অনুষ্ঠানে জাতীয় সঙ্গীতের পরে যেন সমবায় সঙ্গীত গাওয়া হয়।
সমবায় প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে পুরুষদের পাশাপাশি, নারীদেরও নেতৃত্বে আসা উচিত বলে মনে করেন মহাপরিচালক আমিনুল ইসলাম।
‘সদস্যদের বিরুদ্ধে কোন কাজ করবেন না, যেন সদস্যদের কোনো ক্ষতি বা তারা প্রতারিত না হয়। কেউ যেন ব্যক্তি স্বার্থে অর্থ ব্যবহার না করে। আমি চাই সবাই যেন সমবায়ী সেবা পায়। ঢাকা ক্রেডিটের প্রকল্পগুলো থেকে যেন সবাই সেবা গ্রহণ করতে পারে। আমি নেতাদের ডিসি নই, আমি সমবায়ীদের ডিজি’ বলেন মহাপরিচালক আমিনুল ইসলাম।
ঢাকা জেলা ভারপ্রাপ্ত সমবায় কর্মকর্তা জনাব মো. জহিরুল হক বলেন, ‘আমি স্মরণ করছি আর্চবিশপ লরেন্স এল. গ্রেণার ও ফাদার চালর্স জে. ইয়াং-কে। তাঁরা ঢাকা ক্রেডিট শুরু না করলে, আজকের এই উন্নয়ন হতো না। ঢাকা ক্রেডিটের অনেক প্রকল্প সারা বাংলাদেশে কাজ করছে। তা সত্যিই প্রশংসার।’
এ সময় তিনি সমবায়ের ক্যাটাগরি কমিয়ে এনে ২৯টি ক্যাটাগরিতে সমিতির নিবন্ধন করার অনুরোধ জানান।
কাককো’র চেয়ারম্যান নির্মল রোজারিও বলেন, বর্তমানে ঢাকা ক্রেডিট হাসপাতাল, স্কুল, সমবায় বাজার, চাইল্ড কেয়ার, রিসোর্টের মতো অসংখ্য প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে। আমাদের নতুন চেতনা নিয়ে কাজ করতে হবে, তা না হলে কার্যক্রম গতিশীল থাকবে না। আশা করি আগামীতে ঢাকা ক্রেডিট আরো নতুন নতুন কিছু করবে।


অন্যান্য অতিথিরা বলেন, ঢাকা ক্রেডিটের সফল প্রেসিডেন্ট হলেন বাবু মার্কুজ গমেজ। আজকের এই সাধারণ সভায় প্রেসিডেন্ট ও বোর্ডের একটি বছরের মূল্যায়নের দিন। ঢাকা ক্রেডিটের কার্যক্রমের দৃষ্টান্ত সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া উচিত। এ ছাড়াও কমিউনিটির বাইরের মানুষের কাছে ঢাকা ক্রেডিটের প্রকল্পগুলোর ধারণা ও সুফল ছড়িয়ে দেওয়া উচিত।
তাঁরা আরো বলেন, সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে ঢাকা ক্রেডিট এগিয়ে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠান যেমন উন্নয়ন করছে, তেমনি সদস্য ও সমাজেরও উন্নয়ন করছে। ঢাকা ক্রেডিট একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে যাচ্ছে ডিভাইন মার্সি জেনারেল হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। এটি সমাজে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
সকালে প্রধান অতিথি, সভাপতি ও অন্যান্য অতিথিদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। এরপর জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা, সমবায় পতাকা ও ঢাকা ক্রেডিট পতাকা উত্তোলন করা হয়। সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য পাপড়ী প্যাট্রিসিয়া আরেং বাইবেল পাঠ করার পর মৃত কর্মকর্তা ও সদস্যদের আত্মার কল্যাণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এরপর সভাপতি, প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিবৃন্দরা বিশ্লেষণধর্মী বক্তব্য রাখেন।
বক্তব্যের পরে সূচী অনুযায়ী বার্ষিক সাধারণ সভার কার্যক্রম এগিয়ে চলে। ৫৮তম বার্ষিক সাধারণ সভার কার্যবিবরণী পাঠ ও অনুমোদন, ব্যবস্থাপনা কমিটির বার্ষিক কার্যক্রম প্রতিবেদন পেশ ও অনুমোদন, বার্ষিক হিসাব বিবরণী পেশ ও অনুমোদন, প্রস্তাবিত বাজেট পর্যালোচনা ও অনুমোদন, প্রস্তাবিত আয় বন্টন হিসাব উপস্থান ও লভ্যাংশ ঘোষণা, ক্রেডিট কমিটির প্রতিবেদন পেশ ও অনুমোদন, উপ-বিধি সংশোধনী পেশ ও অনুমোদন, নতুন প্রস্তাবনা পেশ ও অনুমোদনসহ বিবিধ বিষয় নিয়ে আলোচনায় বার্ষিক সাধারণ সভা হয়ে ওঠে ফলপ্রসূ ও সার্থক।
শেষ প্রার্থনা করেন নারী নেত্রী শিশিলিয়া মিস্ত্রী।
সতিমির ভাইস-প্রেসিডেন্ট শীরেন সিলভেষ্টার গমেজের ধন্যবাদ বক্তব্যের মাধ্যমে বার্ষিক সাধারণ সভা সমাপ্ত হয়।