ঢাকা ,
বার : রবিবার
তারিখ : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ৮ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা সাপ্তাহিক পরিক্রমা অদক্ষ ও বেকার জনগোষ্ঠিকে দক্ষ সম্পদে পরিণত করতে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই

অদক্ষ ও বেকার জনগোষ্ঠিকে দক্ষ সম্পদে পরিণত করতে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই

0
3523

‘অদক্ষ ও বেকার জনগোষ্ঠীকে দক্ষ সম্পদে পরিণত করতে কারিগরী শিক্ষার বিকল্প নেই’ বলে মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক। ‘রিচিং আউট অব স্কুল চিলেড্রেন’ (রস্ক) ফেইজ-২ প্রকল্প স্কুল প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

গত শুক্রবার (২৬ মে) যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলায় আবু শারাফ সাদেক অডিটরিয়ামে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ‘রিচিং আউট অব স্কুল চিলেড্রেন’ (রস্ক) ফেইজ-২ প্রকল্প স্কুল প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

04কেশবপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার জনাব এসএম সাইফুর রহমানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী এমপি জনাব ইসমাত আরা সাদেক, এমপি। এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন; রস্ক-২ প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক জনাব মুহাম্মদ সাহাদাত হোসাইন, সেভ দ্য চিলড্রেন আই প্রোগ্রামের উপ-প্রকল্প পরিচালক নিশাত আফরোজ মির্জা, কেবশপুর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান জনাব আব্দুল লতিফ রানা এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জনাব নাসিমা সাদেক, কারিতাস খুলনার আঞ্চলিক পরিচালক দাউদ জীবন দাশ, কেশবপুর পৌরসভা পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম, কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম সাদেক, কেশবপুর উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. রবিউল ইসলাম, রস্কের সুপারভাইজার একেএম জাহাঙ্গীর আলম, কারিতাস টেকনিক্যাল স্কুল প্রকল্পের (সিটিএসপি) প্রজেক্ট ম্যানেজার ডমিনিক দিলু পিরিছ এবং বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানবৃন্দ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী সাদেক কেশবপুর উপজেলার উন্নয়নের বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।

প্রতিটি ঘরে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা, রাস্তা-ঘাট তৈরি ও মেরামতসহ নানা উন্নয়ন এবং পরিকল্পনার সম্পর্কে সকলকে আশ্বস্ত করেন প্রতিমন্ত্রী সাদেক।

তিনি বলেন, মট্স-কারিতাস ও সেভ দ্য চিলড্রেন এর কারিগরী সহযোগিতায় এই অদক্ষ ও বেকার জনগোষ্ঠিকে দক্ষ সম্পদে পরিণত করতে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই।

কোনো মেয়ে যাতে আঠার বছরের আগে বিয়ে না করে, আর যারা বিয়ে করেছে তারা যাতে ঘরে বসে না থাকে। এ ছাড়াও ঘরের কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন উপার্জনমুখী পেশায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে হবে বলেও মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী সাদেক।

এদিকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন কারিতাস খুলনার আঞ্চলিক পরিচালক দাউদ জীবন দাশ। মট্স-কারিতাসসহ রস্ক-২ প্রকল্পের সার্বিক বিষয় সুন্দরভাবে তুলে ধরেন আঞ্চলিক পরিচালক দাশ। স্কুল ঝরে পড়া ও অতি দরিদ্র পরিবারের সন্তান, যারা প্রাথমিক শিক্ষাচক্রে অংশগ্রহণ করতে পারেনি তাদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দেওয়াতে সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এ সকল ছেলেমেয়েরা যেন বেকার না থাকে এবং নিজের কর্মসংস্থান নিজেই করতে পারে এই সুযোগ তৈরী করে দেওয়ার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ।

02অনুষ্ঠানের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রহমান বলেন, একজন মানুষের উচ্চ শিক্ষাই জীবনের একমাত্র মাপকাঠি নয়। মানুষ হিসেবে তার দক্ষতা, চিন্তা-চেতনা দ্বারা নিজেকে দেশের স্বার্থে কতটুকু দিতে পেরেছে বা নিজেকে দেশের সম্পদে পরিণত করতে পেরেছ তাই মুখ্য বিষয়।

নির্বাহী অফিসার রহমান সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন যাতে এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়ন করা যায় এবং প্রতিটি শিশু যাতে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন দক্ষ হয়ে ওঠে।

03এ ছাড়াও আরো বক্তব্য রাখেন উপ-প্রকল্প পরিচালক সাহাদাত হোসাইন, উপ-পরিচালক আফরোজ মির্জা। রস্ক প্রকল্পের মাধ্যমে স্কুল ঝরে পড়া ও অতি দরিদ্র পরিবারের সন্তান, যারা প্রাথমিক শিক্ষাচক্রে অংশগ্রহণ করতে পারেনি, সে সমস্ত শিশুদের শিক্ষার দ্বিতীয় সুযোগ প্রদান করা একটি যুগোপযোগী উদ্যোগ বলে উল্লেখ করেন তারা।

তারা বলেন, কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্কুল ঝরে পড়া শিশু ও যারা সাধারন শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত না তারা যাতে নিজেকে একজন দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে পারে সেই প্রচেষ্টা করা হবে এই প্রকল্পের মধ্য দিয়ে। কেউ যাতে বেকার ঘরে বসে না থাকে, পরিবারে আয় উপার্জনে ভূমিকা রাখতে পারে।

উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে প্রতিমন্ত্রী হাসপাতাল মোড়, রাজগঞ্জ রোডে অবস্থিত রস্ক প্রকল্পের পরিচালনাধীন মট্স-কারিতাসের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি ফিতা কেটে শুভ উদ্বোধন করেন এবং সরেজমিনে ৪টি ট্রেড পরিদর্শন করেন। তিনি ইন্ডাস্ট্রিয়াল সূয়িং মেশিন অপারেশন, বিউটি কেয়ার, পেট্রোল এন্ড ডিজেল ইঞ্জিন মেকানিক ও ইলেকট্রিক এন্ড হাউজ ওয়্যারিং ট্রেডের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে উৎসাহিত করেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনাসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন সিটিএসপির প্রজেক্ট ম্যানেজার পিরিছ।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ‘রিচিং আউট অব স্কুল চিলেড্রেন’ (রস্ক) ফেইজ-২ প্রকল্প স্কুল ঝরে পড়া ও অতি দরিদ্র পরিবারের সন্তান, যারা প্রাথমিক শিক্ষাচক্রে অংশগ্রহণ করতে পারেনি, সে সমস্ত শিশুদের শিক্ষার দ্বিতীয় সুযোগ প্রদানের জন্য দেশের ১৪৮টি উপজেলায় আনন্দ স্কুলের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ প্রকল্প এসডিজি-৪ (একীভূত, সুষম ও মানসম্পন্ন শিক্ষা) অর্জনে ভূমিকা রাখছে। অন্যদিকে এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষাচক্র সম্পন্ন করতে পারলেও দারিদ্রতার কারণে শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ পরবর্তী শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে না এবং পরবর্তী শিক্ষাক্রমে সম্পৃক্ত হলেও শিক্ষা সম্পন্ন হওয়ার আগেই ঝরে পরছে। এর প্রেক্ষিতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার দরিদ্র, স্কুল ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য প্রি-ভোকেশনাল স্কিলস্ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে বিগত ২০১৪ সাল থেকে ডিসেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। পাইলট কর্মসূচীর সফলতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ও উন্নয়ন সহযোগী বিশ্ব ব্যাংক প্রি-ভোকেশনাল স্কিলস্ ট্রেনিং প্রোগ্রামটির (পিভিটি) পরিধি রস্ক ১ম পর্যায়ের ৯০টি উপজেলা সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ কর্মসূচীর আওতায় মোট ২৫,০০০ প্রশিক্ষণার্থীকে বাজার চাহিদাসম্পন্ন দক্ষতা প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। এ কার্যক্রমে মট্স এর মাধ্যমে ২০টি উপজেলায় প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন হবে এবং আগামী ৩মাস কেশবপুর উপজেলায় এ প্রশিক্ষণ চলবে।

আরবি/আরপি/৬ জুন, ২০১৭