ঢাকা ,
বার : সোমবার
তারিখ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ৯ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা ঢাকা ক্রেডিট অবসর নিলেন ঢাকা ক্রেডিটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লিন্টু সি গমেজ

অবসর নিলেন ঢাকা ক্রেডিটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লিন্টু সি গমেজ

0
1854

|| ডিসিনিউজ ||
ঢাকা ক্রেডিটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লিন্টু সি গমেজ আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর নিয়েছেন। তিনি দীর্ঘ ৩১ বছর নির্ভীকভাবে ঢাকা ক্রেডিটে সেবা দিয়ে গেছেন।
ঢাকা ক্রেডিটের উত্থানের মূলপর্বে লিন্টু সি গমেজ প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব নেন। তার পরিচালনায় ঢাকা ক্রেডিটের কর্মীরা নতুন মাত্রায়, নবদ্যোমে ঢাকা ক্রেডিটকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। ২০১৮ সালে তিনি ঢাকা ক্রেডিটের নিয়মিত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদ থেকে অব্যহতি নিয়ে চুক্তিভিত্তিক প্রধান নির্বাহীর পদে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছিলেন। পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত ক্রমে তিনি এই বছর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধান নির্বাহীর পদ থেকে অবসর নেন। তার অবসর উপলক্ষে ঢাকা ক্রেডিট এক বিদায়ী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
২৯ অক্টোবর, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সমিতির প্রধান কার্যালয়ের বিকে গুড কনফারেন্স হলে এই বিদায় অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ গমেজের সভাপতিত্বে বিদায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সমিতির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও, ঢাকা ক্রেডিটের ভাইস-প্রেসিডেন্ট শীরেন সিলভেষ্টার গমেজ, সেক্রেটারি পংকজ গিলবার্ট কস্তা, ট্রেজারার বিপুল লরেন্স গমেজ, প্রাক্তন সেক্রেটারি হেমন্ত আই. কোড়াইয়া, সহকারী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন টি. রোজারিও, ঢাকা ন্যাশনাল ওয়াইএমসিএ’র সেক্রেটারি নিপুন সাংমা, ডিভাইন মার্সি জেনারেল হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জন গমেজ, ঢাকা ক্রেডিটের বোর্ড অব ডিরেক্টর, ক্রেডিট ও সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য এবং ঢাকা ক্রেডিটের কর্মীরা।


সভাপতি বাবু মার্কুজ গমেজ বলেন, ‘লিন্টু আমার বন্ধু মানুষ ছিলেন। তার সাথে ছোটবেলা থেকেই একটা ভাল সম্পর্ক ছিল। লিন্টু সম্পর্কে আমি এটাই বলবো, তিনি ঢাকা ক্রেডিটে সততার সাথে কাজ করেছেন। তিনি আপনাদের অনুকরণীয় হতে পারে। লিন্টুর জীবেন প্রথম সার্ভিস ঢাকা ক্রেডিট, শেষও হয়েছে ঢাকা ক্রেডিটে। তিনি আজ সফলভাবে অবসর নিচ্ছেন। ঢাকা ক্রেডিটের অগ্রগতির পথে লিন্টুর অনেক অবদান রয়েছে। তার অনেক আত্মত্যাগ রয়েছে।’
‘আমরা যখন ঢাকা ক্রেডিটে নতুন প্রডাক্ট বা প্রস্তবনা নিয়ে এসেছি, তখন অনেক বাধা এসেছে। কিন্তু লিন্টুর নেতৃত্বে কর্মীবাহিনী এক হয়ে দক্ষতার সাথে এগিয়ে গিয়েছে। এই বিদায় বেলায় আমরা তার সর্বাঙ্গিন মঙ্গল কামনা করি’ যোগ করে বলেন বাবু মার্কুজ গমেজ।


ঢাকা ক্রেডিটের সেক্রেটারি পংকজ গিলবার্ট কস্তা বলেন, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানে কর্মময় জীবন শেষ করা একটি বিরল ঘটনা। এখানে অনেক ধরনের নেতাদের নিয়ে কাজ করতে হয়। তাদের সবাইকে ম্যানেজ করে কাজ করাটা অনেক চ্যালেঞ্জের। প্রতিষ্ঠান যেমন বড় হচ্ছে, সুযোগও সৃষ্টি হচ্ছে। লিন্টুদা হয়তো এখন চলে যাচ্ছেন, কিন্তু আবার হয়তো নতুন আঙ্গিকে ফিরে আসবেন। কর্মীরা যখন আন্তরিকতার সাথে কাজ করবে, একদিন না একদিন তিনি পুরস্কার পাবেনই। তাই সকল কর্মীর লিন্টুদাকে অনুসরণ করা উচিত। আমরা লিন্টুদার দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।
গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করা বেশ চ্যালেঞ্জের। সে কথাই উঠে আছে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও’র মুখে। তিনি বলেন, ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই, লিন্টু দীর্ঘদিন আমাদের এই ঢাকা ক্রেডিটে সেবা দিয়েছেন। এখানে কাজ করা ছিল অনেক চ্যালেঞ্জের। কারণ এখানে নেতৃত্ব পরিবর্তন হয়, তাই তাদের সাথে মিশে কাজ করাটা অনেকটাই কষ্টকর ছিল। এ সময় বার্ষিক সাধারণ সভায় কর্মীদের দক্ষতা নিয়ে নানা কথা হতো। কিন্তু লিন্টুর নেতৃত্বে তা কমে গেছে। এখন সদস্যরা কর্মীদের প্রশংসা করে। ঢাকা ক্রেডিটে লিন্টুর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকে। লিন্টু এখানে যে সার্ভিস দিয়েছে, তা নিয়ে যদি একটা বইও প্রকাশ করে, তা অন্যের জন্যও অনেক উপকারী হবে।


ভাইস-প্রেসিডেন্ট শীরেন সিলভেষ্টার গমেজ বলেন, আমি নয় বছর ক্রেডিটের বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলাম, তাই লিন্টুদাকে আমি খুব ভাল করেই জানি। আমি তার মধ্যে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা দেখেছি। এই সমিতিতে অনেক ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু লিন্টুদা ছিলেন বটবৃক্ষ। তার আত্মত্যাগ প্রমাণ করে, এই সমিতিতে তার অনেক অবদান রয়েছে। লিন্টুদার মতো আপনাদের মধ্যেও অনেক প্রতিভাবান কর্মী রয়েছেন, আপনাদের সেই প্রতিভা কাজে লাগাতে হবে।
সহকারী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন টি. রোজারিও বলেন, ‘লিন্টু স্যারের সাথে আমার সম্পর্কটা একটু আলাদা। তিনি আমার জন্য, আমার পৃথিবী রচনা করে দিয়েছেন। তিনি আমার জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। আমি প্রতিদিন, প্রতিটা মুহূর্তে তার নিকট থেকে শিখেছি। তিনি আমাকে যে পথ দেখিয়েছেন, আমি সেই পথে হাঁটতে পেরেছি।’
ঢাকা ক্রেডিটের চীপ অফিসার সুদান গাইন স্মৃতি হাতরে বলেন, আমি অনেক দিন এই প্রতিষ্ঠানে রয়েছি। আমি এসেই লিন্টু স্যারকে পেয়েছি। তিনি আমাদের শিখিয়েছেন কীভাবে দক্ষতা ও সততার সাথে কাজ করতে হয়। তিনি যেন দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হন।
স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে ঢাকা ক্রেডিটের অতীতের বার্ষিক সাধারণ সভার কথা উঠে আসে। চীপ অফিসার জোনাস গমেজ বলেন, ‘একটা সময় বার্ষিক সাধারণ সভায় সদস্যরা কর্মীদের দোষারোপই করতেন। কিন্তু লিন্টু স্যারের নেতৃত্বে কর্মীরা দক্ষতা সাথে নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে শিখেছে। লিন্টু স্যার সকল কর্মীদের ¯েœহ করতেন ও ভালবাসতেন। আমরা কাজের ভালবাসার ক্ষেত্রটা তৈরি করে দিয়েছেন লিন্টু স্যার। সৎ ও সততা আমরা লিন্টু স্যারের কাছে শিখেছি।’


মার্কেটিং বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক (ইনচার্জ) সোহেল রোজারিও অনুভূতি সহভাগিতা করে বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে লিন্টু স্যারের সান্নিধ্যে ছিলাম। তিনি অনেক আমোদী ও মিশুক মানুষ ছিলেন। লিন্টু স্যার সব সময় আমাকেসহ সকল কর্মীকে সহযোগিতা দিয়েছেন। তিনি আমাদের ভালবাসতেন এবং শাসনও করেছেন। লিন্টু স্যার আমাকে বিভিন্ন দায়িত্ব দিয়েছেন এবং পাশে থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দিয়েছেন।
মনিপুরীপাড়া সেবা কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক বিপুল টি. গমেজ অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, লিন্টু স্যার ছিলেন উদার মনের মানুষ। তিনি আমাদের শাসন করার চেয়েও বেশি করে শিখিয়েছেন। তার আদর্শ ও সততা যেন আমরা বুকে ধারণ করে কর্মযজ্ঞে এগিয়ে যেতে পারি।
সহকারী ব্যবস্থাপ (ইনচার্জ) শ্যামলী কস্তা স্মৃতি রোমন্থনে বলেন, আমি নিয়োগ পাওয়ার পর, সরাসরি তার অধিনে কাজ করেছি। তিনি আমাকে হাত ধরে কাজ শিখিয়েছেন। এই বিদায় বেলায় তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি। তার আদর্শ নিয়ে যেন আমরা এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পারি।
অনুষ্ঠানে বিদায়ী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লিন্টু সি গমেজ বলেন, আমি অবসরে না গেলে আপনারা যে আমাকে এত ভালবাসেন, সেই বিষয়টি বুঝতে পারতাম না। আপনাদের কাছ থেকে যে সহযোগিতা আর ভালবাসা পেয়েছি, তা কখনোই ভুলবার নয়। আপনারা প্রার্থনা করবেন আগামী দিনগুলোতেও যেন আমি আমার পরিবার নিয়ে ভালভাবে কাটাতে পারি।
এ ছাড়াও বিদায় অনুষ্ঠানে অন্যান্য অতিথি ও কর্মীরা স্মৃতি রোমন্থন ও লিন্টু সি গমেজের দীর্ঘায়ু কামনা করেন।
অবসরপ্রাপ্ত বিদায়ী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার বিদায় উপলক্ষে ঢাকা ক্রেডিটের চীপ অফিসার সিসিলিয়া সুইটি ফিউরীফিকেশন মানপত্র পাঠ করেন এবং তার শ্রদ্ধার্ঘ্য প্রদান করেন। এ ছাড়াও সমিতির পরিচালনা পর্ষদ, কর্মী ওয়েলফেয়ার ও কর্মীরা তাকে উপহার প্রদান করেন।
বিদায়ী অনুষ্ঠান শেষে ধন্যবাদ বক্তব্য রাখেন ট্রেজারার বিপুল লরেন্স গমেজ।
মানব সম্পদ উন্নয়ন বিভাগের ব্যবস্থাপক ডিউক সব্যসাচী মজুমদারের নেতৃত্বে এই বিদায় অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন তপন টি গমেজ ও ডিউক সব্যসাচী মজুমদার।
পরিশেষে প্রার্থনা দিয়ে বিদায় অনুষ্ঠান শেষ করেন সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য পাপড়ী প্যাট্রিসিয়া আরেং।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন তপন টি গমেজ ও ডিউক সব্যসাচী মজুমদার।
পরিশেষে প্রার্থনা দিয়ে বিদায় অনুষ্ঠান শেষ করেন সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য পাপড়ী প্যাট্রিসিয়া আরেং।

ছবি: শমিত ক্রুজ

[wp1s id=”10071″]