শিরোনাম :
অভাবনীয় সম্ভাবনার প্রতিষ্ঠান ঢাকা ক্রেডিট
ডিসিনিউজ প্রতিনিধি: কর্মী ও কর্মকর্তাদের উন্নতমানের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কীভাবে সমিতির উন্নয়নের গতিকে আরো ত্বরান্বিত করা যায়, সেই লক্ষ্যে বিস্তারিত বর্ননা দেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিসিএস এ্যাডমিনিস্ট্রেশন একাডেমির পরিচালক ও যুগ্ম সচিব এ কে এম সোহেল।
সমিতির প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ গমেজের সভাপতিত্বে ১২ অক্টোবর শনিবার সকাল ১০টায় ঢাকা ক্রেডিটের সিনিয়র কর্মীদের সাথে এক আন্তরিক আলোচনায় তিনি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনায় বলেন, অভাবনীয় সম্ভাবনার প্রতিষ্ঠান ঢাকা ক্রেডিট।
প্রথমে সবার পরিচিতির পর সমিতির ৬৩ বছরের কার্যক্রমের ওপর প্রামান্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। পর্যায়ক্রমে হিউম্যান রিসোর্স এ্যান্ড এ্যাডসিনিস্ট্রেশন বিভাগের সিও সুইটি সি পিউরীফিকেশন সমিতির অগ্রগতির ক্ষেত্রে এযাৎকাল পর্যন্ত কোন্ পর্যায়ের কর্মীদের কী কী প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে তার সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরেন।
উল্লিখিত ধারণার ভিত্তিতে যুগ্ম সচিব সোহেল জরুরি বিষয়গুলোর মধ্যে কর্মীদের আরো স্মার্ট করা, ফাইন্যাসিয়াল ভিশন ডেভেলপ করা, প্রজেক্টভিত্তিক ম্যানেজমেন্টকে রিভাইজ করা, শিষ্টাচার ও কোড অব কন্ডাক্ট এবং কাজের ধরনভিত্তিক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা করাসহ কর্মকর্তাদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করেন। তিনি কর্মীদের প্রশিক্ষণের বিষয়কে হালকা করে দেখার কোনো অবকাশ নেই বলে উল্লেখ করে বলেন, কর্মীদের প্রশিক্ষণের বিষয়টিকে একটি চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে ধরে নিতে হবে।
অন্যান্য প্রশিক্ষণের উল্লেখ করে যুগ্ম সচিব বলেন, স্টাফ স্কিলস ডেভেলপমেন্ট, স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট, টাইম ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি বিষয়ও বাদ দেওয়া যাবে না। ফাউন্ডেশন ট্রেইনিং সম্বন্ধে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, এটা সবার প্রয়োজন। নতুন স্টাফ নিয়োগের পরপরই এই প্রশিক্ষণ অবসম্ভাবী। তিনি বিভাগভিত্তিক বিজনেস এবং পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন। ‘প্রতিষ্ঠান যত বড় হবে, করপোরেট হওয়ার জন্য ততই প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে হবে প্রতিষ্ঠানকে,’ বলেন যুগ্ম সচিব।
তিনি বলেন, যেহেতু প্রতিষ্ঠান বড় হওয়ার সাথে সাথে নিয়োগের বিষয় আসে, তার আগে তাদের (কর্মীদের) কীভাবে পুরোপুরি কাজে লাগাতে হবে, কর্মীর কাজ কী হবে, কাজের পরিধি কী হবে ইত্যাদি বিষয়ে পূর্বেই সুপরিকল্পিত একশনপ্ল্যান করতে হবে। তিনি বলেন, একজন কর্মীকে মাসিক ৫০ হাজার টাকা বেতন দিলে তাকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে ২ লক্ষ টাকা আয় করা যায় তা গভীরভাবে ভেবে পরিকল্পনা করতে হবে নিয়োগের আগেই।
সমিতির কোনো কর্মকর্তার রেফারেন্সে কোনো কর্মীর নিয়োগ হলে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের গুণগতমান নি¤œগামী হবে বলে উল্লেখ করে তিনি কর্মকর্তাদেরও প্রশিক্ষণের আওতায় আনার প্রস্তাব দেন। টপ-টু-বট্টম স্বচ্ছতা আনার বিষয়েও তিনি বিস্তর মন্তব্য করে বলেন, ব্যক্তিস্বার্থের চেয়ে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে।
যুগ্ম সচিব সোহেল সিইও, এসিইওসহ অন্যান্য সকল সিওদের সমিতির প্রাণশক্তি হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘আপনাদেরকে দেশে-বিদেশে কার্যকর প্রশিক্ষণগুলো নিতে হবে। কারণ, করপোরেট প্রশিক্ষণ আপনাদের অবশ্যই জরুরি।’
সরকারি পর্যায়ে কর্মীদের প্রতিটি পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় বলে উল্লেখ করে যুগ্ম সচিব বলেন, এই সমিতি যেহেতু করপোরেট পর্যায়ে উন্নীত হচ্ছে, এখানে কর্মীদের মেধা, শ্রম, ও বিনিয়োগবিষয়ক প্রশিক্ষণ অনিবার্যভাবে গ্রহণ করতে হবে।
প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় চ্যালেঞ্জলোর উল্লেখ করে সমিতির প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কজ গমেজ তিন বছর পরপর ব্যবস্থাপনা কমিটির পরিবর্তনের উল্লেখ করলে যুগ্ম সচিব বলেন, ভিশনারী ও ইতিবাচক কমিটির সময়কালেই টপ-লেভেল কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ত করে বেস্ট কাজ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে, কারণ পৃথিবী দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।
অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভ্যাট, ট্যাক্স, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট, ইত্যাদি বিষয় আগাম ২০-৩০ বছর সামনে রেখে বিজনেস ভিশন নিয়ে সরকারের বিভিন্ন বিভাগের সাহায্য নিয়ে প্রশিক্ষণগুলোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন, সরকারি ভ্যাট, ট্যাক্স ও সরকারের নিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ত করে প্রশিক্ষণ-ব্যবস্থা করলে, সঙ্গত কারণেই তাদের সাথে একটি ভাল সম্পর্ক সৃষ্টি হবে এবং নানা কারণেই তাদের সহযোগিতা পাওয়া সম্ভব।
যুগ্ম সচিব সরকারের শ্রম ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের সহায়তার মাধ্যমে বিপুলসংখ্যক কর্মী বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ পেতে পারে বলে উল্লেখ করে বলেন, এই সমবায় প্রতিষ্ঠানও এই সুযোগ গ্রহণ করতে পারে।
ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারে ব্যবহারের বিষয়ে অপেক্ষাকৃত বয়স্কদের অনীহার প্রবণতা থাকাটা স্বাভাবিক, কিন্তু আফিস পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো পারাটা সম্ভব বলে উল্লেখ করেন যুগ্ম সচিব।
সমিতির প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ গমেজ ওই দিনের আলোচনা যেন সেখানেই শেষ হয়ে না যায়, তা সবাইকে মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘বিসিএস ক্যাডারদের প্রশিক্ষণ যদি আমাদের প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা পায়, তবে পেশাদারিত্ব ধরে রাখা সম্ভব।’ তিনি বলেন, আইনে সমিতির প্রতিনিধিদের ক্ষমতার কথা উল্লেখ থাকলেও কর্মীদের ক্ষমতার কোনো উল্লেখ নেই। প্রতিনিধিদের নির্বাচনে এলাকার বিষয়, আত্মীয়করণ, দলাদলি, ইত্যাদি বিষয় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। এসব নেতিবাচক বিষয় থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তিনি সমিতির মধ্যে যত নেতিবাচক চর্চা হয়, তার গন্ডি থেকে বেরিয়ে এসে সবার সার্বিক কল্যাণ কামনায় কাজ করতে হবে বলে উল্লেখ করেন।
আলোচনার শেষ পর্যায়ে সমিতির সিনিয়র কর্মীদের সাথে যুগ্ম সচিবের অরো যোগাযোগের মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণের ব্যবস্থা হবে বলে মত প্রকাশ করেন যুগ্ম সচিব সোহেল।
সময় ও মেধা দিয়ে সমিতির অগ্রগতির ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য যুগ্ম সচিবকে ধন্যবাদ জানান সমিতির প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ গমেজ।
আলোচনায় অংশ নেন সমিতির সিইও লিন্টু খৃষ্টফার গমেজ, এসিইও লিটন টমাস রোজারিও, সিও জোনাস গমেজ, সিও সুইটি সি পিউরীফিকেশন, সিও সুদান গাইন ও এইচআর ম্যানেজারসহ ওই বিভাগের সকল কর্মী।
আরপি.আরবি.১৩ অক্টোবর২০১৮