শিরোনাম :
আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন, ঢাকা ক্রেডিটের বান্দুরা বহুমুখী প্রকল্প: বহুমুখী প্রকল্পের শুভ উদ্বোধন
বান্দুরা অঞ্চলের সমিতির সদস্যসহ সাধারণ জনগণের সুবিধা ও চাহিদার কথা বিবেচনা করে ঢাকা ক্রেডিট সমিতির অগ্রযাত্রায় নানা উদ্যোগের মধ্যে প্রথম বহুমূখী প্রকল্প হিসেবে সুচনা হল বান্দুরা বহুমুখী প্রকল্প। বান্দুরা মোলাশীকান্দার অনেক আশা-আঙ্খার কান্ডারী হয়েই এই প্রকল্পের সূচনা হলো। প্রকল্প ভবনটি ১৯৫৫ সালে প্রতিষ্ঠাকালীন সেক্রেটারি জোনাস রোজারিও’র স্মরণে নামকরণ করা হয়েছে।
২৪ মে এক আনন্দপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বান্দুরা বহুমুখী প্রকল্পের শুভ উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে সমিতির প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ গমেজের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশস্থ ভাতিকানের রাষ্ট্রদূত আর্চবিশপ জর্জ কোচেরী। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি হিউবার্ট গমেজ, নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব নাসির উদ্দিন আহমেদ ঝিলু, কমার্স ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. খালেক, কুসুম হাট্টি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন আযাদ, বাংলাদেশ খ্রীস্টান এসোসিয়েশনের মহাসচিব হেমন্ত আই. কোড়াইয়া, ঢাকা ক্রেডিটের পরিচালনা পর্ষদসহ ঢাকা ক্রেডিটের প্রায় দেড় হাজার সদস্য।
পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঢাকা ক্রেডিটের সেক্রেটারি পংকজ গিলবার্ট কস্তা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতি বাবু মার্কুজ বলেন, ‘আমরা গর্বিত আমাদের পূর্বপুরুষদের কীর্তিতে’ এরই ধারায় ঢাকা ক্রেডিটের বান্দুরা বহুমুখী প্রকল্পের নামকরণ করা হয়েছে বান্দুরার কৃতি সন্তান যারা নিরলসভাবে ঢাকা ক্রেডিটে পরিচালনা দিয়ে গেছেন তাদের নামানুসারে।
‘সবচেয়ে আনন্দের বিষয় হলো, ইতিমধ্যে আঠারোগ্রাম এলাকার যতজন মহৎপ্রাণ ব্যক্তি ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, অকাতরে নিজের শ্রম দিয়েছেন অন্যের কল্যাণে, তাঁদের সম্মানে প্রতিটি তলার নামকরণ করে উৎসর্গ করা হয়েছে। যে চারজন প্রেসিডেন্ট বিভিন্ন মেয়াদে ঢাকা ক্রেডিটে অবদান রেখেছেন, তাঁরা হলেন হিউবার্ট গমেজ, পিটার পল গমেজ, পিটার এ গমেজ ও নিকোলাস গমেজ’ বলেন প্রেসিডেন্ট গমেজ।
প্রধান অতিথি আর্চবিশপ কোচেরী বলেন, ‘ঢাকা ক্রেডিট জাতি-বর্ণ নির্বিশেষে কাজ কারে যাচ্ছে। ঢাকা ক্রেডিটের হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা, আজ এই বহুমুখী প্রকল্প উদ্বোধন সত্যিই অনেক প্রশংসার। ঢাকা ক্রেডিট সব ধরণের সহযোগিতা করে, তার নিদর্শন বাংলাদেশে পোপ আগমনে পাপা মোবিল প্রদান করা। ঢাকা ক্রেডিট যেসকল উন্নয়নমূলক প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে, তা দিয়ে মানুষের জীবনমান উন্নয়ন হবে।’
‘বান্দুরাবাসী যেন ঢাকা ক্রেডিটের এই সেবা গ্রহণ করে। তাদের জন্য ঢাকা ক্রেডিট সেবার দ্বার খুলে দিয়েছে’ বলেন আর্চবিশপ কোচেরী।
এ সময় তিনি বহুমুখী প্রকল্পের সেবা গ্রহণ করে সকলকে ঢাকা ক্রেডিটের সবযোগী অংশিদার হওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি হিউবার্ট গমেজ, নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব নাসির উদ্দিন আহমেদ ঝিলু, কমার্স ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. খালেক, কুসুম হাট্টি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন আযাদ, ঢাকা ক্রেডিটের ভাইস-প্রেসিডেন্ট শীরেন সিলভেষ্টার গমেজসহ আরো অনেকে।
এ দিন প্রধান অতিথি আর্চবিশপ কোচেরী, সভাপতি বাবু মার্কুজ অন্যান্য অতিথিদের সাথে নিয়ে ভবনের নামফলক উন্মোচনের মাধ্যমে বহুমুখী প্রকল্পের শুভ উদ্বোধন করেন। এ সময় তারা শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে ও প্রার্থনা করে বিশেষ আশির্বাদ কামনা করেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিদের সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ফেবব্রুয়ারি মাসের ৬ তারিখে ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশের তৎকালীন আর্চবিশপ প্যাট্রিক ডি’রোজারিও সিএসসিসহ সমিতির সকল কর্মকর্তা এবং অত্র এলাকার গণ্যমান্যদের সাথে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবেএই প্রকল্পের বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।
এযাবৎ চারতলা পর্যন্ত ভবনটির কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। চলমান ব্যবস্থাপনা কমিটির আলোচনান্তে, বহুতলবিশিষ্ট এই প্রকল্প ভবনটির নানামুখী কার্যক্রম।
বাস্তবায়নের লক্ষে নিচতলা বিভিন্ন অফিসকে ভাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় তলা নির্মাণ করা হয়েছে অত্র অঞ্চলের মানুষের কমিউনিট সেন্টার হিসেবে ব্যবহার করার উদ্দেশে। ঢাকা ক্রেডিট সমিতিতে ১৯৯৩-৯৬ মেয়াদকালে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিউবার্ট গমেজ-এঁর নামে এই সেন্টারের নামকরণ করা হয়েছে হিউবার্ট গমেজ কমিউনিটি সেন্টার। এলাকার সকল ধর্মের মানুষ এই সেন্টার ভাড়া নিয়ে তাদের নানা সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারেন।
অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ তৃতীয় তলায় নির্মাণ করা হয়েছে ঢাকা ক্রেডিটের জন্য অফিস, ট্রেনিং ও কনফারেন্স হল হিসেবে। অফিস ও ট্রেনিং হলটি ১৯৬১ থেকে মোট ৬ মেয়াদে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট পিটার পল গমেজ-এঁর নামে নামকরণ করা হয়েছে। অন্যদিকে ১৯৭৭-৭৮ মেয়াদে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট পিটার এ গমেজের নামকরণে পিটার এ. গমেজ কনফারেন্স হল রাখা হয়েছে।
চতুর্থ তলায় নির্মাণ করা হয়েছে গেস্টহাউজ। ১৯৮২-৮৩ মেয়াদে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট নিকোলাস গমেজের নামকরণে এই তলার নামকরণ করা হয়েছে নিকোলাস গমেজ গেস্ট হাউজ।
বহু সুবিধাসম্বলিত এই বহুমুখী ভবনটিতে রয়েছে সকল আধুনিকতার ছোঁয়া ও সেবাবান্ধব ব্যবস্থা। গেস্ট হাউজ হিসেবে মোট ৮টি আধুনিক শীততাপনিয়ন্ত্রিত রুম রয়েছে যেখানে একইসাথে ১১ জন অতিথি আবাসিক সুবিধা পেতে পারেন। দেশের উন্নত সব রেস্টুরেন্টের অভিজ্ঞতায় পূর্ণ বাবুর্চির উপস্থিতি অতিথিদের করবে সুস্বাদু খাদ্য পরিবেশন। অতিথিদের স¦াচ্ছন্দ্যের জন্য রয়েছে আধুনিক লিফ্ট।