শিরোনাম :
ইউরেনাস উল্টো ঘোরে
ইউরেনাস সৌরজগতের তৃতীয় বৃহত্তম গ্রহ। সূর্য থেকে দুশ ৮৭ কোটি কিলোমিটার দুরে অবস্থিত এ গ্রহটি ১৭৮১ সালের ১৩ মার্চ আবিষ্কৃত হয়।
সূর্জের দিক থেকে সপ্তম ও টেলিস্কোপের সাহায্যে আবিষ্কৃত প্রথম গ্রহ ইউরেনাস। এ গ্রহটি ৮৪ বছরে সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করে। কক্ষপথে এর গড় গতি প্রতি সেকেন্ডে ছয় দশমিক ৮১ কিলোমিটার।
তবে এ গ্রহটির একটি বৈশিষ্ট্য, এটি পূর্ব থেকে পশ্চিম অর্থাৎ ঘড়ির কাঁটার দিকে আবর্তিত হয়। এর গড় ব্যাস ৪৯ হাজার কিলোমিটার। এটি আয়তনে প্রায় পৃথিবীর চেয়ে ৬৪ গুণ বড় ও ওজনে ১৫ গুণ। গ্রহটির আবহমন্ডলে মিথেন ও হাইড্রোজেন গ্যাসের পরিমাণ অধিক।
ইউরেনাসের ২৭টি জানা উপগ্রহ রয়েছে। যথা-মিরিন্ডা, এরিয়েল, ওবেরন, আম্ব্রিয়েল, টাইটানিয়া প্রভৃতি। এটির শনি গ্রহের মতো বলয় রয়েছে বলে বিজ্ঞানীদের মত।
গ্রহটি আবিষ্কারে উইলিয়াম হার্শেল এর নাম বিশেষভাবে জড়িত। অনেক জোতির্বিজ্ঞানী এটি আগে লক্ষ্য করলেও, গ্রহ হিসেবে বিবেচনায় আনতে পারেনি। ১৬৯০ সালে জন ফ্লামস্টিড অন্তত ছয়বার এই গ্রহটিকে দেখতে পান। পরে তিনি এটিকে বৃষ নক্ষত্রমন্ডলের একটি নক্ষত্র হিসেবে ৩৪ তাউরি নামকরণ করেন। ফরাসি জোতির্বিজ্ঞানী পিয়েরে লেমোনিয়ার ১৭৫০ থেকে ১৭৬৯ সালের ভিতরে প্রায় ১২ বার এ গ্রহটিকে পর্যবেক্ষণ করেন। কিন্তু তিনিও এটিকে নক্ষত্র হিসেবেই ব্যাখ্যা দেন।
স্যার উইলিয়াম হার্শেল এ গ্রহটিকে প্রথম ১৭৮১ সালের ১৩ মার্চে বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ করেন এবং ঐ বছরের ২৬ এপ্রিল এটিকে ধূমকেতু হিসেবে উল্লেখ করেন।
পরে আরও গভীর পর্যবেক্ষণের পর তিনি এটিকে গ্রহ হিসেবে স্বীকৃতি দেন।
প্রথমদিকে অনেক জোতির্বিজ্ঞানী এটিকে গ্রহ মানতে নারাজ হলেও ক্রমে এটিকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকার করা হয়।
প্রথমে হার্শেল এটিকে তৎকালীন ইংল্যান্ডের রাজা তৃতীয় কিং জর্জের নামানুসারে করতে চাইলেও তা অন্যদেশের কেউ মেনে নেয়নি। পরে আবিষ্কারকের নামানুসারে এর নাম হার্শেল দেওয়ার প্রস্তাব ওঠে। কিন্তু তাও হয়ে ওঠেনি। এরপর এক সুইডিশ জোর্তিবিজ্ঞানী এর নাম ‘নেপচুন’ রাখার প্রস্তাব দেন। কিন্তু এই গ্রহের কক্ষপথ নির্ণয়কারী এক জার্মান বিজ্ঞানী ইয়োহান এলের্ট বোডে এর নাম দেন ইউরেনাস। ১৮৫০ সালে ইউরেনাস নামটিকেই আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
সংগৃহীত : বিডিনিউজ
আরবি/আরপি/এসএন/ ২২ মার্চ, ২০১৭