ঢাকা ,
বার : সোমবার
তারিখ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ৯ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা ফিচার উৎপীড়ক সহকর্মী থেকে সতর্ক থাকুন

উৎপীড়ক সহকর্মী থেকে সতর্ক থাকুন

0
415
ছবি: বিবিসি

কেউ কথার মানুষ, কেউ কাজের মানুষ। অফিস পাড়ায় কেউ নিজের মতো কাজ কাজে যায়, কেউ নিজের ঢাক পিটিয়ে যায়। অফিস ম্যানেজমেন্ট সঠিক তথ্য না রাখলে এতে অনেক ধরণের খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। তবে বর্তমান প্রতিযোগিতার সময়ে ম্যানেজমেন্টও এ বিষয়ে সতর্ক। যারা নিয়মিত কান ভারি করে তুলে বা বসদের সামনে ঘুর ঘুর করে, তাদেরই এসব করার প্রবণতা বেশি থাকে। নিজেদের সার্থ  হাসিলের জন্য তারা এসব করে বলে প্রতীয়মান হয়। তবে এসব বিষয়ে অফিস ম্যানেজমেন্টও নজর দিতে পারেন। তাহলে অফিসের পরিবেশ অনেক সুন্দর এবং কাজেও ও মানে গাতি বাড়বে।

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে ভুলে যায়, গুজব ছড়িয়ে বেড়ায় কিংবা সকলের সামনে অপমান করে বসে এমন সহকর্মী বা কর্মকর্তা পুরো কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ নষ্ট করার জন্য যথেষ্ট। কর্মক্ষেত্রে হুমকি, ষড়যন্ত্র ইত্যাদির শিকার হন অনেকেই। এমন অবস্থা পরিত্রাণের জন্য সাবধান থাকতে হয়।

‘ওয়ার্কপ্লেস বুলিইং ইনস্টিটিউট’য়ের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং ‘দ্য বুলি-ফ্রি ওয়ার্কপ্লেস’ বইয়ের সহকারী লেখক, যুক্তরাষ্ট্রের মনোবিজ্ঞানী গ্যারি নেইমি বলেন, “এটি এক ধরনের কর্মক্ষেত্রে হয়রানি যা ভুক্তভোগীর উপর মারাত্বক কুপ্রভাব ফেলে। সহজ ভাষায় এটি নির্মমতা।”

মানসিকস্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এই বিষয়ের উপর প্রকাশিত প্রতিবেদনে নেইমি’র বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে আরও জানানো হয়,

আক্রমণাত্মক এই আচরণ বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। এই ব্যক্তি একজন নির্দিষ্ট সহকর্মীর উপর লক্ষ্যস্থির করতে পারেন, আবার কয়েকজন দল বেঁধে আরেকজন সহকর্মীকে একঘরে করে দিতে পারেন। আক্রমণাত্মক আচরণগুলো মুখোমুখি বেশি হয়। তবে কর্মক্ষেত্রে প্রযুক্তি নির্ভরতা যেহেতু বাড়ছে, তাই ইন্টারনেটভিত্তিক অসদাচরণও ক্রমেই বাড়ছে।

সহকর্মীর এরকম দুর্ব্যবহারের পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। কেউ হয়ত চক্রান্তের মাধ্যমে সহকর্মীকে দমিয়ে কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতি পেতে চাইছে, আবার কেউ হয়ত সহকর্মীকে নিজের বশে রাখতে চাইছে। কারণ যাই হোক, ফলাফল হয় কাজের মান ব্যহত হওয়া, অমনযোগিতা, পদত্যাগ। যার ভুক্তভোগী হয় অসদাচরণের শিকার সহকর্মীসহ পুরো প্রতিষ্ঠান।

নেইমি বলেন, “সহকর্মীর আক্রমণাত্মক আচরণ ভুক্তভোগীর উপর যে মানসিক চাপ ফেলে পরে সেটা রূপ নেয় দুঃশ্চিন্তা, অস্বস্তি এবং আতঙ্কে। গবেষণা বলে, এমন ভুক্তভোগীদের ঘুমের সমস্যা দেখা দেয়। পরিস্থিতি বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছালে আত্মহত্যার দিকে পা বাড়াতে পারেন তারা।”

তিনি আরও বলেন, “সমস্যাটা শুধু কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ বিপজ্জনক করে না, পাশাপাশি এটি একটি মারাত্মক জনস্বাস্থ্য সমস্যা।”

কী করা উচিত

‘জার্নাল অফ সাইকোলজি রিসার্চ অ্যান্ড বিহেইভিয়ার ম্যানেজমেন্ট’ শীর্ষক জার্নালে বলা হয়, কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীদের সঙ্গে আক্রমণাত্মক কিংবা আপত্তিকর আচরণ না করা এবং কেউ করলে তাকে শক্ত হাতে প্রতিহত করার প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত প্রতিটি কর্মীকে।

নেইমির বিশ্বাস, কর্মক্ষেত্রে আক্রমণাত্মক আচরণের শিকারদের কাউন্সিলিং এবং দলবদ্ধ থেরাপির মাধ্যমে আতঙ্ক থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করা সম্ভব। তাদেরকে বোঝাতে হবে, ভুক্তভোগীরা একা নন, এর পেছনে তাদের কোনো দোষ ছিলনা এবং তারা অসহায় নন।

ওয়ার্কপ্লেস বুলিইং ইন্সটিটিউট জরিপ অনুযায়ী-

সহকর্মীদের সঙ্গে আক্রমনাত্মক আচরণকারীদের মধ্যে ৫৬ শতাংশই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। সমমর্যাদার সহকর্মীর মাধ্যমে এমন আচরণের শিকার হন মাত্র ১৮ শতাংশ।

দোষীদের মধ্যে ৬০ শতাংশই পুরুষ আর ভুক্তভোগীর ৬০ শতাংশই নারী।

২০১৪ সালের এক জরিপ অনুযায়ী, দোষীদের ১১ শতাংশ অসদাচরণের শাস্তি পেলেও চাকরিচ্যুত হননি। অপরদিকে ভুক্তভোগীদের ১৫ শতাংশ হয় চাকরিচ্যুত হয়েছেন নয়ত পদত্যাগ করেছেন। (তথ্য: বিডিনিউজ)

আরবি/আরপি/৯ অক্টোবর, ২০১৭