ঢাকা ,
বার : সোমবার
তারিখ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ৯ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা দেশ করোনার মৃত্যু উপত্যকা এই বাংলাদেশ হবে না

করোনার মৃত্যু উপত্যকা এই বাংলাদেশ হবে না

0
778

লরেন্স রানা || গাজীপুর

 আজকের ১১২ জন এবং গত কালকের ৫৪ জন নতুন করে আক্রান্ত হলেও আমি ঢৃড় বিশ্বাস নিয়ে বলছি ভয় পাবেন না। আক্রান্তের হার বাড়লেও তা ব্যাপক হবে না। এখন যারা নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা চথুর্ত স্তরের কন্টাক্ট এবং বেশীরভাগ ভাগ বিদেশ ফেরতদের কন্টাক্ট (সংস্পর্শ) । যেমন কেউ বিদেশ থেকে ভাইরাস নিয়ে এসে পরিবারে ছড়িয়ে দিয়েছে। এর পর বাইরের আত্মীয় বা অন্য কেউ আক্রান্ত হয়েছেন এবং তা সংখ্যায় এক বা ততোধিক। তার থেকে ৪ নম্বর কন্টাক্টে ঐ ব্যাক্তির পরিবারে বিদেশি রোগটি এখনো আটকে আছে। কোথাও কোথাও তা আরো বেশি কন্টাক্টে ছড়িয়ে পড়েছে। যেটা হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ বা ঢাকাতে।

 আজকের ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম পরিষ্কারভাবে বলেছেন, বিদেশ ফেরতরা সঠিকভাবে হোমকোয়ারান্টাইন মেনে চলেননি। তাঁরা অবাধে মানুষের সাথে মিশেছেন, হাটে বাজারে গিয়েছেন, আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে রোগটিকে ছড়িয়ে দিয়েছেন। তার মধ্যে নারায়ণগঞ্জে বিদেশ ফেরতদের সংখ্যা অনেক, তাই এ জেলা এখন করোনার ক্লাস্টার পয়েন্ট।

 অন্যদিকে শ্রমিক অধ্যুষিত জেলাটি থেকে লোকজন এখন পালিয়ে যেতে শুরু করেছে। ঠাকুরগাঁয়ে আজ সকালে এমন ৯০ জনকে আটক করে আইসোলোসনে পাঠানো হয়েছে।বরগুনা থেকে ইন্জিনচালিত নৌকা থেকে পালিয়ে যাওয়া ৪০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। দিনাজপুর, ঠাকুরগাওঁ বা দক্ষিণাঞ্চলের লোকজন এ জেলাটিতে সব চেয়ে বেশি কাজ করে। ঢাকার কাছের গুরুত্বপূর্ণ পূর্ণ এ জেলাটিতে গাজীপুর, ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ এবং নরসিংদী থেকে প্রচুর মানুষ প্রতিদিন নানা কাজে এসে চলে যায়। তাই ক্লাস্টার পয়েন্ট নারায়ণগঞ্জ থেকে করোনা বেশি বেশি মাইগ্রেট হতে পারে উল্লেখিত জেলাগুলোতে এবং তার চিত্র ইতোমধ্যে স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। নারায়ণগঞ্জ এর পাইকপাড়া, রসুলভাগ বা নদীর পারে পূবপারে রয়েছে বহু শ্রমিকের বাস এবং এই সব জায়গাগুলোকে এখনই পুরোপুরি বন্ধ না করলে নারায়ণগঞ্জের রোগটির কন্টাক্ট সারাদেশে মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে যেতে পারে। এবং প্রতিটি জেলাকে একে বারে বিচ্ছিন্ন করতে হবে ২০ দিনের জন্য।

 এরই মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আজকের করোনা আপডেটসহ সহ বিস্তারিত অনেক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছেন। তার মধ্যে অন্যতম দেশের সবগুলোই বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের প্রায় ২০ হাজার স্বাস্থ্য কর্মী করোনা যুদ্ধে সামিল হয়ে ২৪ ঘন্টাই মানুষকে সেবা দিবেন। চীনের উহানের এক্সপার্টরা এই মুহুর্তে একটিই কাজ বার বার করতে বলেছেন আর সেটা হলো ঘরে থাকা। ঘরে থাকার কোনো বিকল্প এই মুহূর্তে নেই। কারণ সক্রামনের চতুর্থ স্তরে এসে আমরা যে কোনো স্থান থেকে আক্রান্ত হতে পারি। আমাদের বাইরে যাবার প্রবণতা অবশ্যই কমাতে হবে। সঠিকভাবে কোয়ারান্টাইন পালন করে অস্ট্রেলিয়া ইতোমধ্যে আক্রান্তের হার ২% নামিয়ে এনেছে। দঃকোরিয়া, হংকং, তাইওয়ান, চায়না সবায় এই পন্থা অবলম্বন করে ভালো ফল পেয়েছে। করোনাভাইরাসের মৃত্যু উপত্যকা ইটালি, স্পেন-এ নতুন আক্রান্তের হার কমছে শুধু মাত্র কোয়ারান্টাইন-এর নিয়মগুলিকে সঠিকভাবে পালন করায়। বাংলাদেশের নানা সিদ্ধান্ত- সমন্বয়ের অভাবকে দায়ী করার বা সমালোচনা করার সময় হয়তো আমরা অনেক পাব। ৩৭ জন লোক নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন, স্বেচ্ছায় হোমকোয়ারান্টাইন এ চলে যাওয়া, আবার কোয়ারান্টাইন এর টাইম পূর্ না করে মানুষের জন্য কাজে ফিরে আসা, সীমিত আকারের মন্ত্রী পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ সভায় ডাক না পাওয়া, বাণিজ্য মন্ত্রীর বক্তব্য হয়তো আমাদের মাঝে নানা বিভ্রান্তি তৈরী করেছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে সব কিছুর ওপর যিনি আছেন তিনি হলেন আমাদের শেষ ভরসা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২৫শে মার্চের ভাষণের পর থেকে দেরীতে হলেও কাজে এসেছে গতি, এসেছে সমন্বয়। তিনি আমাদের একটিই অনুরোধ করেছেন, সেটা হলো ঘরে থাকা। ঘরে থাকলে এই বাংলা করোনার এপিক কান্ট্রি কোনদিন হবে না। তাই ভয় নয়, সন্দেহ নয়। বাংলাদেশ এখনো অনেক নিরাপদ। ৩৩০ বর্তমান মহামারীর পৃীথিবীতে কোন সংখ্যাই নয়। সবাই সচেতন হয়ে আসুন এই সংখ্যা টাকে ৩৩০০ না করি। মৃত্যুর সংখ্যা টা ২১০ না বানাই। সবাই ঘরে থাকবো, নিরাপদে থাকবো।

লরেন্স রানার আরো লেখা পড়ুন:

কেন করোনা বাংলাদেশে ব্যাপক আঘাত হানবে না!