শিরোনাম :
কাক্কোর ঋণ তদন্ত বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান
কাক্কোর আয়োজনে ঢাকা ক্রেডিটের বিকে গুড কনফারেন্স হলে সারা দিনব্যাপী ‘ঋণ তদন্ত বিষয়ক প্রশিক্ষণ’ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ঢাকা ক্রেডিটের কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
শনিবার সকাল ৯টায় ঢাকা ক্রেডিটের ১১টি সেবাকেন্দ্রের মোট ত্রিশ জন কর্মীকে ঋণ তদন্ত বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
কাক্কোর চেয়ারম্যান র্নিমল রোজারিও ঋণ তদন্ত বিষয়ে বলেন, ‘কোনো পক্ষ-পাতিত্ব ছাড়াই ঋণের তদন্ত হওয়া উচিত। ঋণ তদন্তের জন্য আপনাদের যে কোনো ধরনের টুলস যদি প্রয়োজন হয় ঢাকা ক্রেডিট তা ব্যবস্থা করবে।’
নির্মল রোজারিও ডিসিনিউজ বিডিডটকমকে জানান, ‘এই প্রশিক্ষণ আয়োজনের উদ্দেশ্য হচ্ছে খেলাপি ঋণ প্রতিরোধ করা। সঠিক তদন্ত করে করে গুণগতমানের ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে তদন্ত অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তদন্ত করে, ঋণ প্রদান করলে ঋণ খেলাপির হার কমবে এবং প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সক্ষমতা বাড়বে এবং সদস্যদের স্বার্থ সুরক্ষিত হবে। আমরা চাই প্রতিটি ক্রেডিট ইউনিয়ন ঋণ খেলাপিমুক্ত হোক।
‘ঋণ প্রদান কার্যক্রম সক্ষমতার সাথে করতে পারলে সদস্যদের আমানত সুরক্ষিত থাকবে। প্রতিটি ক্রেডিট ইউনিয়ন তদন্ত করে ঋণ প্রদান করুক, এতে করে ক্রেডিট ইউনিয়ন এবং সদস্য সকলেই উপকৃত হবে’ বলেন রোজারিও।
সার্টিফিকেট প্রদান অনুষ্ঠানে ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ গমেজ বলেন, ‘ঢাকা ক্রেডিট ক্রেডিট ইউনিয়নগুলোর মধ্যে একটি রোল মডেল প্রতিষ্ঠান। তাই আমাদের কর্মীদের কার্যক্রম সতর্কতার সাথে করতে হয়। অনেক কিছুই প্রথমে ঢাকা ক্রেডিট থেকে শুরু করা হয় এবং পরে তা অন্যান্য ক্রেডিটগুলো অনুসরণ করে। প্রথম দিকে ঢাকা ক্রেডিট যখন কিছু শুরু করে, তা নিয়ে অনেক আলোচনা হয় এবং যখন সবাই এর ইতিবাচক সাফল্য দেখে, তখন অন্যরা তাই অনুসরণ করে। এ কারণে ঢাকা ক্রেডিটের সব সময় আমরা প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি।’
তিনি আরো বলেন, ‘৩ জুলাই আমরা ঢাকা ক্রেডিটের ৬৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করতে যাচ্ছি। দীর্ঘ দিনের এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানের কর্মী হয়ে আপনারও গর্বিত। মূলত প্রয়োজনের কারণেই ঢাকা ক্রেডিট এত বছর সুনামের সাথে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। যে প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, তারাই এক মাত্র টিকে থাকে। অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনের অভাবে টিকে থাকতে পারেনি। কিন্তু ঢাকা ক্রেডিটের প্রয়োজনীয়তা সমাজে রয়েছে, তাই সুনামের সাথেই এই প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে।’
‘তদন্ত যদি সঠিক না হয়, তাহলে ঋণ ফেরৎ ঠিক মতো আসে না। বর্তমানে সঠিক তদন্তের কারণে খেলাপি ঋণের হার একটু কমেছে। প্রফেশনাল তদন্তকারীরা গল্পের আকারে সুন্দরভাবে তদন্ত করে থাকে। ঢাকা ক্রেডিটের ঋণ তদন্তকারীরা একদিন প্রফেশনাল হয়ে উঠবে’ মন্তব্য করেন ঢাকা ক্রেডিটের সেক্রেটারি পংকজ গিলবার্ট কস্তা।
ঢাকা ক্রেডিটের ডিরেক্টর রূপন পিউরীফিকেশন বলেন, ‘বিগত সাড়ে চার বছরে ঢাকা ক্রেডিটে অনেক পরিবর্তন এসেছে। আমরা ঋণখেলাপি কমিয়ে আনতে শতভাগ ফলাফল অর্জন করতে পারিনি, তবে অনেকাংশে আমার খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে পেরেছি।‘
এফভিপি ও ফ্যাকাল্টি মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ট্রেইনার সুশীল কুমার তরফদার পাওয়ারপয়েন্ট উপস্থাপনায় বলেন, ঋণ প্রদানের পূর্বে ঋণ গ্রহীতার চরিত্র, মূলধন, সম্ভাবতা, পারি-পাশির্^ক অবস্থা, কারণ, পণ্য, স্থান, পরিবেশ, সম্ভাব্য লাভের পরিমাণ, বর্তমান বাজার ব্যবস্থা এবং প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে ঋণ প্রদান করতে হবে বলে উল্লেখ করেন।
যখন সাক্ষর যাচাই করা হয়, তখন লালকালির পরিবর্তে পেন্সিল ব্যবহার করার কথা বলেন ট্রেইনার তরফদার। কারণ পরর্তীতে আদালতে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে না হয়।
প্রশিক্ষণে ‘ঋণ প্রদান পূর্বে তদন্ত ও যাচাই বাছাই কার্যক্রম’ বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন সুশীল কুমার তরফদার, ‘ঋণ তদন্ত কার্যক্রম, ইহার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা’ বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন কাক্কোর চেয়ারম্যান নির্মল রোজারিও, ‘ঋণ তদন্ত ও যাচাই-বাছাই কৌশল এবং ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা ও সহভাগিতা’ করেন কাককোর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি ডমিনিক রঞ্জন পিউরীফিকেশন, ‘ঋণ প্রদান পরবর্তী পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়া’ বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার ও জনতা ব্যাংকের স্টাফ কলেজ ঢাকা এর অনুষদ সদস্য সুজিত কুমার গুপ্ত।
প্রশিক্ষণে বিশিষ্টজনের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পিটার রতন কোড়াইয়া, ক্রেডিট কমিটির সভাপতি সলোমন আই. রোজারিও, সুপারভাইজরি কমিটির সভাপতি জন গমেজ, সেক্রেটারি মানিক লরেন্স রোজারিও, সদস্য ষ্টেলা হাজরা, কাককোর প্রশিক্ষণ সম্প্রসারণ নিরীক্ষক রবার্ট গমেজসহ আরো অনেকে।
ষ্টেলা হাজরার প্রার্থনার মাধ্যমে প্রশিক্ষণের শুরু হয়।
প্রশিক্ষণ শেষে সকলের হাতে সনদ-পত্র প্রদান করেন অতিথিরা।
আরবি.এইচআর. ৩০ জুন ২০১৮