শিরোনাম :
কালিগঞ্জের মঠবাড়ীতে অনুষ্ঠিত হলো ঢাকা ক্রেডিটের আঞ্চলিক শিক্ষা সেমিনার
ডিসিনিউজ ।। কালীগঞ্জ
গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জের মঠবাড়ীতে অনুষ্ঠিত হলো ঢাকা ক্রেডিটের আঞ্চলিক শিক্ষা সেমিনার।
৮ নভেম্বর বিকেল ৫টায় ঢাকা ক্রেডিটের সহকারী মার্কেটিং ম্যানেজার ইনচার্জ সোহেল রোজারিও’র সঞ্চালনায় মঠবাড়ী ক্ষুদ্রব্যবসায়ী সমিতির চেয়ারম্যান সুরেন রিচার্ড গমেজের সভাপতিত্বে এ শিক্ষা সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা ক্রেডিটের পক্ষে সেমিনারের প্রতিনিধিত্ব করেন ঢাকা ক্রেডিটের সেক্রেটারি পংকজ গিলবার্ট কস্তা। তিনি সেমিনারের প্রধান উপস্থাপনা পেশ করেন।
তিনি বলেন, ঢাকা ক্রেডিট নতুন আইডিয়াকে ধারণ করে, তা লালন করে এগিয়ে যায়। যার ফসল হলো ৮ শ সদস্য সমিতির অভিভাবক কালব এবং ২৭ টি সমিতির অভিভাবক কাককো। এগুলো ঢাকা ক্রেডিটের ফান্ডেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সুতরাং ঢাকা ক্রেডিট নতুন কিছু সৃষ্টিতে সব সময় বদ্ধপরিকর।
সেমিনারে ঢাকা ক্রেডিটের সেক্রেটারি পংকজ গিলবার্ট কস্তা ঢাকা ক্রেডিটের প্রতিষ্ঠাকাল থেকে বর্তমান অবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন। এ সময় তিনি ঢাকা ক্রেডিটের কর্ম-এলাকা, প্রডাক্ট ও প্রকল্প নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে ঢাকা ক্রেডিটের বোর্ড অব ডিরেক্টর উইলসন রিবেরু বলেন, আপনাদের প্রার্থনা ও ভালবাসায় ঢাকা ক্রেডিটে ৯ বছর দায়িত্ব পালন করেছি। ঢাকা ক্রেডিট আমাকে একটি ভাল জায়গায় কাজ করার সুযোগ দিয়েছে। ঢাকা ক্রেডিট সমাজ জীবনে কী না করছে! প্রায় সাড়ে ৭ শ কোটি টাকার প্রতিষ্ঠান অসংখ্য প্রডাক্ট ও প্রকল্প নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। সমিতির সবচেয়ে বড় প্রকল্প ডিভাইন মার্সি জেনারেল হাসপাতাল মঠবাড়ীতে প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে। আরো রয়েছে আধুনিক রিসোর্ট ও ট্রেনিং সেন্টা। মঠবাড়ীতে ঢাকা ক্রেডিট এতকিছু করছে, তার জন্য আমরা মঠাবাড়ীবাসী কৃতজ্ঞতা জানাই। এরপরও কিছু মানুষ বিকৃত সমালোচনা করে। যা আমাদের জন্য লজ্জা ও দুঃখের। আজ যে শিক্ষা সেমিনার অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তার মাধ্যমে আপনারা ঢাকা ক্রেডিটের সম্পর্কে আরো অনেক কিছু জানবেন।
ঢাকা ক্রেডিটেরর প্রাক্তন সেক্রেটারি ও বাংলাদেশ খ্রীস্টান এসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল হেমন্ত আই. কোড়াইয়া বলেন, আমি মঠবাড়ীর যেকোনো দাওয়া পেলেই আসি। এটা আমার জন্য একটি ঐতিহাসি স্থান। কারণ যুদ্ধের সময় মঠবাড়ীর প্রাইমারী স্কুলে আমরা শরণার্থী ছিলাম। মঠবাড়ী এখন অনেক উন্নত হয়েছে, সাথে সাথে অনেক ঝুঁকিও বেড়েছে। এখানে অনেক ডেভলপার কোম্পানী চলে আসছে। সুতরাং এখানকার মানুষের বাপ-ভিটার সব জায়গা টিকিয়ে রাখা কষ্টকর। এটা ঝুঁকি হলেও আমাদের সমবায় প্রতিষ্ঠানের কাছে জমি বিক্রি করে আবার সেই টাকা আমাদের সমবায় প্রতিষ্ঠানে জমিয়ে রাখতে পারি। সুতরাং, আমাদের সচেতনভাবে সামনের দিকে আগাতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে সুরেন রিচার্ড গমেজ বলেন, ‘৪০ হাজার সমিতির আমরা গর্বিত মালিক। যারা স্থায়ী নিবাসে বাস করতো, তারা ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কিছু কিছু সমবায় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে খ্রিষ্টানদের সম্পত্তি হাতছাড়া থেকে রেহাই পেয়েছে। আমাদের উন্নয়নের জন্য শিক্ষার উপর জোর দিতে হবে। শিক্ষাই মানুষকে সচেতন করতে পারে। ঢাকা ক্রেডিটের সব প্রডাক্টের সুযোগ হয়তো আমরা নিতে পারবো না, কিন্তু যেসকল সুযোগ নেওয়া সম্ভব, তা আমাদের নিতে হবে। ঢাকা ক্রেডিটও আমাদের সর্বোচ্চ সুযোগ প্রদান করবে, সেই আশা করি।’
আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ক্রেডিটের বোর্ড অব ডিরেক্টর আগস্টিন প্রতাপ গমেজ, পাপিয়া রিবেরু, আলবার্ট আশিস বিশ্বাস, আনন্দ ফিলিপ পালমা, ক্রেডিট কমিটির চেয়ারম্যান সলোমন আই. রোজারিও, সদস্য ডমিনিক রঞ্জন গমেজ, অন্তর মানখিন, সুপারভাইজরি কমিটির চেয়ারম্যান জন গমেজ, সেক্রেটারি মানিক লরেন্স রোজারিও, সদস্য স্টেলা হাজরা, ঢাকা ক্রেডিটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন টি. রোজারিও, চীফ অফিসার সুদান গাইন, জোনাস গমেজ, মঠবাড়ী ক্রেডিটের প্রতিনিধি রতন ক্লেমেন্ট গ্রেগরী, দক্ষিণ ভাসানিয়া ক্রেডিটের সভাপতি সুবল যোসেফ গমেজ, তেজগাঁও প্যারিস কাউন্সিলের সদস্য রবি বার্ণার্ড রোজারিও, মঠাবাড়ী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি ডেবিড রোজারিও, খ্রীষ্টান হাউজিং সোসাইটির ডিরেক্টর জেমস্ ডি’রোজারিও, ভাসানিয়া সমিতির ম্যানেজার লিংকার্স রোজারিও, ভাসানিয়া জাগ্রত যুব সংঘের সভাপতি ডগলাস রোজারিও, মঠবাড়ী ক্রেডিটের ডিরেক্টর নিঝুম গমেজ ও সুবাস গমেজ, মঠবাড়ী যুব সংঘের সভাপতি ক্লিনটন পিটার গমেজসহ মঠবাড়ীতে অবস্থিত বিভিন্ন সমবায় সমিতি ও সংঘের প্রতিনিধি এবং প্রায় আড়াই শতাধিক সদস্য।
সেমিনারে অন্যান্য বক্তারা বলেন, ‘আমরা মঠবাড়ীবাসী খুবই খুশি, কারণ ঢাকা ক্রেডিটের সবচেয়ে বড় প্রকল্প ডিভাইন মার্সি জেনারেল হাসপাতাল এই মঠবাড়ীতে প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে। এর জন্য যেকোনো ধরণের সহযোগিতার প্রয়োজন হলে, আমরা করবো। আজ এখানে আমরা একত্র হয়েছি ঢাকা ক্রেডিট সম্পর্কে আরো বেশি জানতে এবং এর সুযোগ-সুবিধাগুলো যেন সঠিকভাবে গ্রহণ করতে পারি সেই ধারণা নিতে।’
তারা বলেন, ‘মঠবাড়ী পূর্বে পিছিয়ে থাকলেও, এখন অন্যান্য স্থানের চেয়ে এগিয়ে গেছে। আমরা আশা করি ঢাকা ক্রেডিট আমাদের জন্য আরো কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিবে। যখন শুনি কোনো খ্রিষ্টান সমিতি পুরস্কার পায়, তখন বুকটা গর্বে ভরে যায়, কিন্তু যখন দেখি সমিতির মধ্যে কিছু কিছু মানুষ বিকৃত সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠেছে, তখন বুকে ক্ষতের সৃষ্টি হয়।’
সেমিনারের শেষাংশে সদস্য ও অতিথিরা এক মুক্তালোচনায় অংশ নেয়।
শিক্ষা সেমিনার শেষে ঢাকা ক্রেডিটের ডিরেক্টর আগস্টিন প্রতাপ গমেজ সবাইকে ধন্যবাদ জানান।