শিরোনাম :
কোথায়, কতক্ষণ বেঁচে থাকে করোনাভাইরাস
করোনাভাইরাস নিয়ে মানুষের মাঝে আতঙ্ক ও বিভ্রান্তির শেষ নেই। সেই সাথে রয়েছে বিভিন্ন ধরণের গুজব ও অবৈজ্ঞানিক ব্যাখা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে, বিভিন্নভাবে অসংখ্য তথ্যের ছড়াছড়ি। করোনাভাইরাস কোথায় কতক্ষণ বেঁচে থাকে, তাই নিয়ে বিসিবিসি একটি প্রতিবেদন করেছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না যে, করোনা ভাইরাস মানবদেহের বাইরে কতক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে।
তবে কিছু গবেষণায় দেখা গেছে আরো যেসব করোনা ভাইরাস আছে, যেমন সার্স ও মার্স। এগুলো লোহা, কাঁচ এবং প্লাস্টিকের গায়ে ৯ দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। আবার কোনো কোনো ভাইরাস ঠাণ্ডা জায়গায় ২৮ দিনও বেঁচে থাকতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ হেলথের একজন ভাইরোলজিস্ট নিলৎজে ফান ডোরমালেন তার সহকর্মীদের নিয়ে গবেষণা চালিয়েছেন। সেখানে তিনি জানতে চেয়েছেন কোভ-২ বা সার্স ভাইরাস কতক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে।
তাতে দেখা গেছে, কাশি দেওয়ার পর থেকে ড্রপলেটের মধ্যে এই ভাইরাসটি তিন ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।
ক্ষুদ্র ড্রপলেটে, সার্স ভাইরাস কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকে। ক্ষুদ্র ড্রপলেটের আকার ১ থেকে ৫ মাইক্রোমিটার (মানুষের চুলের ৩০ গুন চিকন)।
তবে গবেষণায় দেখা গেছে কোভ-২ ভাইরাস কার্ডবোর্ডের মতো শক্ত জিনিসের ওপর ২৪ ঘণ্টা আর প্লাস্টিকের জিনিসের গায়ে দুই থেকে তিন দিনও বেঁচে থাকতে পারে।
গবেষণা বলছে, ভাইরাসটি দরজার হাতল, প্লাস্টিক ও লেমিনেটেড ওয়ার্কটপ এবং কঠিন বস্তুর ওপর দীর্ঘ সময় বেঁচে থাকতে পারে। আর কপারের কোন জিনিসে পড়লে এর মৃত্যু হতে চার ঘণ্টা সময় লেগে যেতে পারে।
দেখা গেছে করোনা ভাইরাস মল-মূত্রের মধ্যে আরো বেশি সময় বেঁচে থাকতে পারে। টয়লেট থেকে ফিরে ভাল করে হাত না ধুলে তার হাতের স্পর্শে আরো অনেক কিছুতেই এই ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়তে পারে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, কোভিড-১৯ এর জন্যে দায়ী ভাইরাসটি কতক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে তা নির্ভর করে এটি কোন ধরনের বস্তুর গায়ে পড়েছে তার ওপর।
দরজার শক্ত হাতল, লিফটের বাটন এবং কিচেন ওয়ার্কটপের মতো শক্ত জিনিসের গায়ে প্রায় ৪৮ ঘণ্টা টিকে থাকতে পারে।
তবে কাপড়ের মতো নরম জিনিসের গায়ে এটি এতো লম্বা সময় বেঁচে থাকতে পারে না। ফলে আপনি যে কাপড়টি পরেছেন, তাতে যদি ওই ভাইরাসটি থাকে, জামাটি একদিন বা দুদিন না পরলে সেখানে ভাইরাসটি জীবিত থাকার আর সম্ভাবনা নেই।
যুক্তরাষ্ট্রে সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন বলছে, ভাইরাসটি লেগে আছে এরকম কোন বস্তু স্পর্শ করার পর হাত দিয়ে যদি মুখ স্পর্শ করা হয় তাহলে ভাইরাসটি ছড়াতে পারে। তবে এটি এই ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার প্রধান উপায় নয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অন্যান্য কর্তৃপক্ষও বলছে যে, বার বার হাত ধুয়ে এবং একই সাথে যেসব জিনিস ধরা হচ্ছে সেগুলো বার বার জীবাণুমুক্ত করে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনা ভাইরাস এক মিনিটে নিষ্ক্রিয় হয়ে যেতে পারে। ৬২ থেকে ৭১ শতাংশ এলকোহল মিশ্রিত তরল পদার্থ দিয়ে কোনো জিনিস করোনামুক্ত করা যায়।
এছাড়া ০.৫ শতাংশ হাইড্রোজেন প্রিঅক্সাইড এবং ০.১ শতাংশ সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট মেশানো ব্লিচ দিয়েও করোনা নির্মূল করা সম্ভব।