শিরোনাম :
গণঅভ্যুত্থানের আগে-পরে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার তদন্ত ও বিচারের দাবি করছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ
ডিসিনিউজবিডি।। ঢাকা
বাংলাদেশের আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের আগে ও পরে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের হত্যা, উপাসনালয় এবং বাড়ি-ঘর ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, নারী নির্যাতন, জমি দখলের মতো ঘটনাগুলোর সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের দাবি করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।
১৯ সেপ্টেম্বর, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতারা এই দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি ও বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
রোজারিও তার লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ৪ আগস্ট থেকে ২০ আগস্ট, ২০২৪ সময়ে ২ হাজার ১০টি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটে এবং এর মধ্যে ১৯শ ৫টি পরিবারের সদস্যরা সরাসরি আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে সবচাইতে বেশি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন হয়েছে খুলনা বিভাগে।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সংবাদ সম্মেলনে দেয়া তথ্যমতে, উল্লেখিত সময়ে সংখ্যালঘু হত্যাকান্ড সংগঠিত হয়েছে ৯টি, ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ৬৯টি, নারী নির্যাতন-ধর্ষণ বা গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৮টি, সংখ্যালঘুদের বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে ৯শ ৫৩ টি।
এছাড়াও বসতবাড়ি দখল হয়েছে ১টি, জমি ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান দখলের ঘটনা ঘটেছে ২১টি এবং শারিরীক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ৩৮টি।
এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম মেম্বার রঞ্জন কর্মকার বলেন, ‘এই সকল ঘটনাকে কেউ কেউ রাজনৈতিক ঘটনা বলার চেষ্ট করা হলেও আমরা তদন্ত করে দেখেছি এগুলো সাম্প্রদায়িক হামলা।’ তিনি বলেন, যারা বলছে রাজনৈতিক হামলা তাদেরকে বলবো তদন্ত করে নিরুপন করুন।
নির্মল রোজারিও সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘অপ্রিয় হলেও সত্য যে, বিগত সামরিক-বেসামরিক কোনো সরকারের আমলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর সংগঠিত হাজারো নির্যাতন-নিপীড়নের ঘটনা কোনটিরই আজ পর্যন্ত বিচার হয়নি বা দোষীদের শাস্তির মুখোমুখি করা হয়নি।’ তিনি বলেন, এই হাজারো নির্যাতন-নিপীড়ন এবং বিচারহীনতার কারণেই ১৯৭০ সালে ১৯-২০ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা ২০২৪ সালে নেমে এসেছে প্রায় ৮.৬ শতাংশ।
সংবাদ সম্মেলন থেকে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রেছে নেতারা বলেন, অতীতের বিচারহীনতার সংস্কৃতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে আসা বর্তমান সরকারের আমলেও চলমান থাকবে না, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আর একটি লোককেও দেশত্যাগে বাধ্য হতে হবে না।
সংবাদ সম্মেলন থেকে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর, বিকেলে ঢাকাসহ সারা দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার চির অবসান, দোষীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়।