শিরোনাম :
গভীর শ্রদ্ধায় সি আর দত্ত বীরউত্তমকে স্মরণ
ডিসিনিউজ ॥ ঢাকা
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাবেক সভাপতি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল (অব) সি আর দত্ত বীরউত্তম-এর স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে ১৮ ডিসেম্বর বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠিত এই স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি উষাতন তালুকদার, অন্যতম সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক ও নির্মল রোজারিও, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের এলামনাইয়ের সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক স্বপন কুমার সাহা, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত, সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জী, শৈলেন্দ্রনাথ মজুমদার, অ্যাডভোকেট কিশোর রঞ্জন মন্ডল প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সি আর দত্ত ছিলেন একজন দেশপ্রেমিক। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে তিনি মুক্তিযুদ্ধে সাড়া দিয়ে সেক্টর কমান্ডার হিসেবে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি একজন সাহসী মানুষ ছিলেন। তিনি সব মানুষকে ভালোবাসতেন। তিনি অসাম্প্রদায়িক চিন্তা চেতনার মানুষ ছিলেন।’
তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, দেশে এখন পতিক্রিয়াশীলেরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আঘাত করার চেষ্টা করছে। তাঁদেরকে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করতে হবে।
নির্মল রোজারি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘চিত্ত রঞ্জন দত্ত ছিলেন একজন অত্যন্ত সাহসী ও দেশপ্রেমিক মানুষ। আপাদমস্তক তিনি অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ মানুষ ছিলেন। তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠাবান ও নির্ভরযোগ্যা মানুষ ছিলেন। তিনি সবসময় মানুষকে কাছে টেনে নিয়েছেন। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করাতে তিনি কিছুটা ক্ষুদ্ধ হয়েছেন।
তার ফলশ্রুতিতে হিন্দু বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদ গঠিত হয়েছিল। তাঁর প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধ।’
অন্যান্য বক্তারা বলেন, সি আর দত্ত ছিলেন দেশের হিরো। ৬৭ জন বীর উত্তমের মধ্যে তিনিও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তিনি সবসময় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে একসাথে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি মনে করতেন, ঐক্যবদ্ধ থাকলে সংখ্যালঘুরা তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। তাঁর অসাম্প্রদায়িকতার চেতনা নিয়ে আমরা যেন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাই এবং তাঁর আদর্শকে বাস্তবায়ন করার জন্য সক্রিয় থাকি।
১৯৮৮ থেকে অমৃত্যু সি আর দত্ত ঐক্য পরিষদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বিডিআর-এর প্রতিষ্ঠিাতা মহাপরিচালক ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের তিনি চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি চাইতেন, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, মুসলিম সবারই এদেশে সমান অধিকারে থাকবে। এখানে সকল ধর্মের মানুষের সমান মর্যাদা থাকবে। কেউ এখানে প্রথম শ্রেণি, দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হবে- কখনো এই চিন্তা তিনি করেন নাই।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের মহাসচিব ও ঢাকা ক্রেডিটের সেক্রেটারি হেমন্ত আই কোরাইয়াসহ ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।