ঢাকা ,
বার : সোমবার
তারিখ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ৮ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি গ্রামীণ উন্নয়নে তথ্য প্রযুক্তি সেবা

গ্রামীণ উন্নয়নে তথ্য প্রযুক্তি সেবা

0
915

ডিসি সংবাদ : বাংলাদেশের কিছু গ্রামে এখন দেখা যায় অন্যরকম এক দৃশ্য। সাইকেল চালিয়ে একটি তরুণী যাচ্ছেন মানুষের বাড়ি বাড়ি, তাঁর সাথে ল্যাপটপ, কম্পিউটার বা নেটবুক।

তিনি ইন্টারনেট ব্যবহার করে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন, কখনো গ্রামের মেয়েদের বা ছোট ছোট স্কুলের ছেলে-মেয়েদের শেখাচ্ছেন কিভাবে ব্যবহার করতে হয় কম্পিউটার। এদের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইনফো-লেডি’ বা ‘তথ্য-কল্যাণী’।তথ্যপ্রযুক্তি-ভিত্তিক সেবাকে তারা নিয়ে যাচ্ছেন সরাসরি গ্রামীণ জনগণের দোরগোড়ায়। সাইকেল, ল্যাপটপ আর চিকিৎসা যন্ত্রপাতি নিয়ে তথ্য-কল্যাণীরা গ্রামে ঘুরে ঘুরে লোকজনকে দিচ্ছেন ইন্টারনেট-ভিত্তিক নানা রকম সেবা।

এই ভ্রাম্যমান তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের একজন হলেন সুমনা আখতার লাবণী। গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার দু’টি ইউনিয়নের প্রায় ২০টি গ্রামে দু’বছর ধরে তথ্যপ্রযুক্তির সেবা দিচ্ছেন তিনি।tottho-02

কীধরণের সেবা দিচ্ছেন তথ্য-কল্যাণীরা

গর্ভবতী মহিলাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী বিতরণ, ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য-সেবা তথ্য বা চিকিৎসকদের পরামর্শ দেওয়া, এমনকি মানবাধিকার সংক্রান্ত তথ্য-পরামর্শ দেওয়া, এগুলোর সবকিছুই পড়ে তাঁর কাজের মধ্যে।

তারা এ কাজের জন্য প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য সহায়তা পেয়ে থাকেন ডি-নেট নামে একটি বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে।

তথ্য-কল্যাণীরা ইন্টারনেট থেকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য দেওয়া ছাড়াও অফলাইন সামগ্রী হিসেবে ডি-নেটের তৈরি করা চিকিৎসা-সেবা সংক্রান্ত সিডি বা ডিভিডি ব্যবহার করেন৻

একজন ডিগ্রিধারী চিকিৎসক না হয়েও তিনি অর্জন করেছেন স্থানীয় লোকদের, বিশেষত মহিলাদের আস্থা৻ সুমনা আখতার লাবণী বলছেন, মহিলারা তাঁর সাথে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে নিঃসংকোচে কথা বলতে পারেন, যা তারা একজন পুরুষ ডাক্তারের সাথে পারেন না।

স্বাস্থ্য সেবা ছাড়াও এই তথ্য-কল্যাণীরা কম্পিউটার আর ইন্টারনেটকে নিয়ে যাচ্ছেন শিশু আর কিশোর কিশোরীদের কাছেও। তাদের কাছ থেকে স্কুল পড়ুয়া শিশুরা শিক্ষামূলক কম্পিউটার গেম-এর মাধ্যমে অনেক কিছু শিখতে পারছে। গ্রামের কিশোর-কিশোরীরা জানছে কিভাবে কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হয়।

কত মানুষ এই সেবার আওতায়

কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রামীণ নারীদের জীবনে সূদুরপ্রসারী পরিবর্তন আনা সম্ভব।

অনন্য রায়হান

তথ্য কল্যাণীদের সেবা পাচ্ছেন বাংলাদেশের ৩৬টি ইউনিয়নের ৮০ হাজার মানুষ। তাদের প্রশিক্ষণ-দানকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ডি-নেটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অনন্য রায়হান বলছেন, জাতিসংঘের সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অনেকগুলোই নারীদের বিষয়ে এবং এই লক্ষ্যমাত্রাগুলো অর্জনের ক্ষেত্রে এবং নারীদের ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে এই ইনফো-লেডিরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

অনন্য রায়হান আরো বলেন যে, তাঁরা এই সেবা আরো সম্প্রসারিত করার পরিকল্পনা করছেন এবং কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রামীণ নারীদের জীবনে সূদুরপ্রসারী পরিবর্তন আনা সম্ভব।

তাছাড়া প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষদের কাছেও এরা ইন্টারনেট-ভিত্তিক সেবা পৌঁছে দিতে পারবেন এবং তথ্য প্রযুক্তির সাথে পরিচিত করে তুলতে পারবেন বলে তিনি জানান।

অল্প কয়েকবছর আগেও যেখানে গ্রামীণ জনগণের কাছে কম্পিউটার জিনিসটাই ছিল সম্পূর্ণ অজানা, এখন সেই মানুষদের জন্য তথ্য-কল্যাণীরা খুলে দিচ্ছেন প্রযুক্তি জগতের নতুন নতুন জানালা।

সূত্র : বিবিসি বাংলা

আরবি/ আরপি

৩১ অক্টোবর, ২০১৬