ঢাকা ,
বার : সোমবার
তারিখ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ৯ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা ফিচার চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ গ্রামে চলছে ভিটেমাটি হারানোর হাহাকার

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ গ্রামে চলছে ভিটেমাটি হারানোর হাহাকার

0
789

চট্টগ্রামের কর্ণণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণ প্রকল্পের সংযোগ সড়কের অধিগ্রহণ নিয়ে দুই দিন ধরে আনোয়ারার বৈরাগ গ্রামে চলছে বাড়ি-ঘর হারানোর হাহাকার।

জমি,বাড়ি-ঘর, অবকাঠামোর ক্ষতিপূরণ না পেয়ে অনেকে শূন্য হাতে ছেড়ে গেছেন যুগ যুগের বসতভিটা ও জমিজমা।

গতকাল পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে মাত্র ১১টি চেক বিতরণ করা হয়েছে।

শনিবার বিকাল থেকে উচ্ছেদ কাজ শুরু করা হয়। পরের দিন জেলা প্রশাসন ও টানেল কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ কাজ চালায়। বাড়িঘর ছেড়ে যেতে স্থানীয় অনেকে বিলাপ করে কেঁদেছেন।

স্থানীয়রা জানায়, অধিগ্রহণকৃত জমি দখলে নেয়ার সময়  উচ্ছেদকর্মীদের সঙ্গে স্থানীয়দের বাকবিতন্ডা হয়। প্রতিবাদের মধ্যেই আইন শৃংখলা বাহিনীর উপস্থিতিতে বন্দর জেলে পাড়া থেকে বৈরাগ খলিফাপাড়া পর্যন্ত বসতঘর, গাছপালা ও স্থাপনা গুড়িয়ে দিয়ে টানেল সড়কের অধিগ্রহণ কাজ চলতে থাকে। এ সময় স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান বলেন, ক্ষতিপূরণের চেক রোববার থেকে বিতরণ করা হচ্ছে। যাদের মামলা রয়েছে তাদের স্থাপনার টাকা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এবিষয়ে চিন্তার কারণ নেই। সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকবে। কাউকে হয়রানি করা হবে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, জেলা প্রশাসনের লোকজনের কথায় ও কাজে মিল নেই। বড় কর্মকর্তারা মিটিংয়ে এসে অনেক সুন্দর করে কথা বলেন। তাদের কথা শুনলে মনে হয়- আমাদের কোন সমস্যায় পড়তে হবে না। তারা সব সমাধান করবেন। কিন্তু অফিসে গেলে আমাদের হয়রানির শেষ থাকে না। ক্ষতিপূরনের কোন টাকা পাইনি। বাপ-দাদার চৌদ্দ পুরুষের বসতভিটা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছি। হাছিনা আক্তার (৭০) জানান, আমাদের পক্ষে কথা বলার জন্য দেশে কোন লোক নেই। এখন ছেলেমেয়ে, নাতি-নাতনি, অসুস্থ ও ছোট ছোট শিশুদের নিয়ে কোথায় যাব!

অনেক মহিলাকে বাড়ির উঠানে আহাজারি করতে দেখা যায়। তাঁরা আক্ষেপ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তো সবার কল্যাণে কাজ করছেন। এভাবে ক্ষতিপূরণ ছাড়া আমাদের তাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে, আমাদের কান্নার খবর কি তাঁর কাছে যায় না? সরকার  রোহিঙ্গাদের জন্য যদি  এত কিছু করতে পারে, আশ্রয় ও থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারে, তবে এদেশের নাগরিক হয়ে কি তাদের চেয়ে খারাপ হয়ে গেলাম !

উল্লেখ্য,চট্টগ্রামের কর্ণণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণ প্রকল্পের সংযোগ সড়ক নির্মাণকাজের জন্য আনোয়ারা উপজেলার প্রায় শতাধিক পরিবারের জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এতে পরিবারগুলো বাপদাদার ভিটেমাটি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। অনেকে এখনও বিকল্প বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন।