ঢাকা ,
বার : সোমবার
তারিখ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ৮ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা দেশ জনতার সেবায় থাকা বাবার প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা

জনতার সেবায় থাকা বাবার প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা

0
426

মার্টিন রোনাল্ড প্রামানিক ॥ ঢাকা

১৯৩৮ সালের ১০-ই ডিসেম্বর বগুড়া জেলার চেলোপাড়ায় আমার বাবা অমল প্রামানিক জন্মগ্রহণ করেন । শিমন প্রামানিক ও মা মরিয়ম প্রামানিকের ৭ ভাই ও ৩ বোনের মধ্যে বাবা ৫ম সন্তান। পরলোকগমন করায়  বাবার শৈশব ও কৈশর কেমন ছিল তা হয়তো আর কখনো নাও জানা যেতে পারে। ৮৩ বছরে পরোলাক গত বাবার সমসাময়িক কেউই আর ইহজগতে নেই।

আমার জানা মতে দৗর্ঘজীবী এই মানব সন্তান এর বেশীর ভাগ জীবন ছিলো বর্নাঢ্য ও রঙিন। সত্যের পথে, ন্যায়ের সাথে পথচলা এই পুরুষ কখনো জীবনে মাথানিচু করেন নাই। যেখানেই অনিয়ম সেখানে নিয়ম প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। অন্যায়ের প্রতিবাদী বিরুদ্ধে এই কন্ঠস্বরকে কখনো কোন ভয়ভীতি প্রলোভন প্রদর্শন করে তার পথচলাকে কেউ রোধ করতে পারে নাই।

ফরিদপুরে অবস্থিত খ্রীষ্টিয়ান ইন্ডাষ্ট্রিয়াল সেন্টার যা বাংলাদেশ ব্যাপ্টিস্ট চার্চ্চ ফেলোশিপ দ্বারা পরিচালিত ছিল, সেখান থেকে উড এন্ড কার্পেন্ট্রি এর হাতের কাজ শিখে যতদূর জানি গোপালপুর, নাটোর এর সুগারমিলে বাবা একজন ডাই ও প্যাটার্ন মেকার হিসেবে নিজের কর্মজীবন শুরু করেন। স্বাধীনচেতা এই মানুষ তার স্বভাবের কারণে চাকরির মধ্যেই তার জীবন সীমাবন্ধ রাখেন নাই, তাই অল্পসময় চাকরি করে, কোন পূঁজি হাতে না নিয়েই নিজের অর্জিত অভিজ্ঞতাকে পূঁজি করে নিজেই কিছু করার সিদ্ধান্ত নেন। কাজের দক্ষতা থাকার জন্য অতি অল্প সময়ে তৎকালীন বগুড়ার বাজারে নিজে একজন অপরিহার্য় প্যাটার্ণ মেকার রূপে আত্মপ্রকাশ করেন। ভৌগলিক অবস্থান এর কারণে বগুড়া, পাকিস্থান আমল থেকেই শিল্পনগরী রূপে পরিচিত ছিল। তাই এই শিল্পনগরীতে বাবার মতো একজন দক্ষ কারিগর নিজের দক্ষাতার পরিচয়ে সর্বজন পরিচিত হয়েছিলেন।

সময়ের প্রয়োজনে তিনি একজন অপরিহার্য কারিগর রূপে দিনরাত পরিশ্রম করে গেছেন। শুধু কাঠ দিয়ে প্যাটার্ণ মেকিং বা এ্যালুমিনিয়াম দিয়ে ডাই মেকিং এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থেকে, নিজেই লোহা ঢালাই করে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ বানিয়ে সেগুলো বাজারজাত করতেন। আমার বাবা পরিশ্রমী ছিলেন, গভীর রাতে বাসায় যখন ফিরতেন তখন আমরা চার ভাইবোন ঘুমিয়ে থাকতাম। উত্তর জনপদের শহর বগুড়া তখন কৃষি যন্ত্রপাতির তৈরী ও বাজারজাত করার এক অন্যতম প্রাণকেন্দ্র ছিল। সেই শহরেরর অনেক কর্মীর পাশাপাশি তিনিও নিজের বুদ্ধি ও টেকনিক খাটিয়ে কাজ করতেন, তাছাড়া বাবার নিজস্ব অনেক অবিষ্কার রয়েছে। কাজের ব্যাস্ততার মধ্যেই রাবিবারিক উপাসনা বা ধর্ম্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালনে তার আগ্রহের কোন কমতি ছিল না।

পাকিস্থান আমল থেকে শুরু করে নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত বগুড়া থেকে উৎপাদিত কৃষি যন্ত্রপাতি সমগ্র উত্তরবঙ্গ থেকে শুরু করে দক্ষিণবঙ্গের যে সমস্ত জেলা তখন সরাসরি বাস যোগাযোগ ছিল, সেই জেলাগুলোতে বাবার তৈরী যন্ত্রপাতি বাজারজাত করা হত। বাবার এই কাজের সাথে আমরা চার ভাই-বোনও নিজ হাতে কাজ করেছি। তাই তখন থেকেই ভবিষ্যতে একই কাজ করার ব্রত নিয়ে চলতে শুরু করি। বাবার ইচ্ছে ছিল আমাকে ডাক্তার বানাবেন। অমি যখন ১৯৮৭ সালে এইচএসসি পাশ করি, এবং তাই ভেলোর খ্রীষ্টিয়ান মেডিক্যাল কলেজের একটি ফর্ম আনেন এবং আমাকে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছিলেন। কিন্তু ছেলের মনে বাবার প্রতিরূপ হওয়ার স্বপ্ন হওয়াতে আমাকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে উদ্ধুদ্ধ করেছিলো। তাই তৎকালীন বি.আই.টি খুলনাতে (বর্তমানে KUET) ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ভর্তির সময় প্রথম পছন্দ যন্ত্রকৌশল (Mechanical Engineering)  দিয়েছিলাম। যেখানে সচরাচর পুরকৌশল (Civil Engineering)  ও বিদ্যুৎ কৌশলের (Electrical and Electronics Engineering)  পাশাপাশি যন্ত্রকৌশল ৩য় পছন্দ থাকতো। কিন্তু আমার ১ম পছন্দ ছিলো যন্ত্রকৌশল। বাবার কাজে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৯৩ সালে আমি যন্ত্রকৌশল বিভাগে স্নাতকোত্তর পাশ করে দেশের বিভিন্ন কল-কারখানায় কাজ করে, আমার বর্তমান প্রতিষ্ঠান মট্স এ ১৯৯৯ সাল থেকে আমার কর্মজীবন শুরু করি। সর্বশক্তিমানের কি ইচ্ছা তা আমরা কেউই জানি না। বাবা কতবড় একজন কৃষি যন্ত্রপাতির উদ্ভাবক ছিলেন, তা আমি যখন পত্রিকায় স্বীকৃতি দেখলাম তখন মনে হল ঈশ্বরের ইচ্ছায়ই বাবা যা করতেন তা আমিও আমার পেশায় এখনও করে যাচ্ছি।

আজকের ডিজিটাল এই বাংলাদেশে কৃষি আজ যান্ত্রিক রূপে আবির্ভূত। আমার কর্মস্থলের নাম মট্স এর পূর্ণ নাম, মিরপুর কৃষি কারখানা ও কারিগরি বিদ্যালয় (Mirpur Agricultural Workshop and Technical School)। যেখানে অনেক যান্ত্রিক কাজের পাশাপাশি কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদন ও বিপণন একটি অন্যতম সেবা। কতৃপক্ষের ইচ্ছায় আমি এখনও সেই সেবার সাথে জড়িত থাকতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি, এবং বাবার রেখে যাওয়া অবদানকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবার সংকল্প করি। আমার বাবা মার্টিন ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপের স্বত্বাধিকারী ছিলেন। আমার মনে আছে ছাত্রজীবনে পাওয়া স্টাইপেন্ড থেকে ১৯৯৪ সালে বাবার কাজের সহায়তার জন্য একটা পুরাতন লেদ মেশিন কিনে দিয়েছিলাম। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পর দেশে এই কাজের চাহিদা কম থাকায় হতাশ ছিলাম ২-১ বছর কিন্তু ভাগ্য আমাকে আবারও সেখানেই টেনে নিয়ে গিয়েছে। তাই সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা, তিনি যেন আমাকে এই কাজে রেখেই জীবন উৎসর্গ করতে সুযোগ দান করেন।

শৈশবে আমার হাতেখড়ি দিয়ে বাংলা বর্ণমালা রপ্ত করেছি আমার মায়ের কাছ থেকে। বাংলা বর্ণমালা একত্রিত করে শব্দে রূপান্তরিত করেছি বগুড়া মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা মন্ডলীর পরম সাহচর্যে। সেন্ট ফিলিপস হাই স্কুল, দিনাজপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে বিভিন্ন শব্দকে একত্রিত করে বাক্য গঠন করতে শিখেছি। একই সময়ে আমার নানীর কাছে থেকে চিঠি লেখা শিখেছি কারণ হাই স্কুল পড়েছি ক্যাথলিক হোস্টেলে থেকে আর প্রতি মাসে আমার নানী আমার হোস্টেলে থেকে পড়ালেখা চালিয়ে যাবার জন্য চিঠি লিখতে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। ছাত্র জীবনে অংকে আমার জানা মতে কোনদিনই ৮০ এর নীচে পাই নাই। আমি অংক শিখেছি আমার বাবার কাছ থেকে। বাবা বগুড়া খ্রিষ্টীয় মন্ডলী নিয়ে চিন্তা ভাবনা করতেন তাই প্রতি বছর মন্ডলীর বার্ষিক প্রতিবেদন, বাবার নির্দেশনায় আমি লিখে দিতে সহায়তা করেছি। আর সেই থেকে আমি ছাত্রজীবনে কবিতা লিখেতে শিখেছি। আমার শিক্ষার পেছনে বাবার এই অবদান চিরদিন আমি ঋণী হয়েই থাকলাম।

সমাজে ছিলেন বাবা একটি প্রতিবাদী কন্ঠস্বর। নিপিড়িত, নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে কখনও তিনি ভীত ছিলেন না। পরিচিতদের বিয়ে, জন্ম, মৃত্যুর সময়ে নিজের ধর্মের এবং অন্যের ধর্মের বন্ধুদের সমস্ত আয়োজনে বাবাকে দেখেছি এগিয়ে যেতে। বাবাকে নিজের হাতে রান্না করতে দেখেছি। মৃত্যদেহ সৎকারের জন্য নিনি মৃতদেহ ধোয়া ও কবর খোড়ার কাজ নিজে করেছেন। তাই তো ৩০ শে জুন, যখন দেশে বিশেষ লকডাউন চলছে, তার চার সন্তানের একজন আমার ছোট বোন মৃত্যুর আগে শেষ দিনগুলো তার পাশে থেকে নিজ হাতে তাকে সেবা দিয়ে গেছেন। তখন আমার বোন রুমা প্রামানিক ও আমার অসুস্থ মাকে কিছুই করতে হয় নাই। ৩০ তারিখ ছিলো জুন ফাইনাল, অফিসের কাজের চাপের কথা মাথায় রেখে অফিসেই অবস্থান করবো। আমিও প্রস্তুত ছিলাম অফিসেই রাত্রি যাপন করার, তাই আমার স্ত্রীকে বলে তল্পিতল্পাসহ অফিসে রাত্রি যাপন করার প্রস্তুতি নিয়ে অফিসেও এসেছিলাম, কিন্তু দুপুর ১.৩০ মিনিটে বাবার মৃত্যুর সংবাদ যখন পেলাম তখন শত প্রতিবন্ধকতার মাঝেও বাবাকে শেষবারের মতো দেখার জন্য অমাার পরিবার থেকে অন্য কেউ যেতে না পারলেও একাই যাবো বলে মনস্থির করেছিলাম। আমার স্ত্রীর যাবার প্রচন্ড ইচ্ছে থাকা সত্বেও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ঘরে থেকে মোমবাতি জ্বালিয়ে আমার শক্তি সাহস বৃদ্ধির জন্য জন্য প্রার্থনা করে কাটিয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার সেই রাতেসকল বাধা বিঘ্নতা উপেক্ষা করে ১লা জুলাই ভোর ৫.৫০ মিনিটে আমি যখন বাসায় পৌঁছাই, তখন কফিন বক্সে শুয়ে থাকা আমার বাবাকে একজন বীরপুরষ বলেই মনে হয়েছে। করোনাকালীন এই সময়ে প্রতিবেশীগণ বাবাকে সমাজের উপস্থিত অন্যান্য ব্যক্তিদের পাশাপাশি থেকে আমার আত্মীয় স্বজনেরা পাহারা দিয়ে সন্মান প্রদর্শন করেছেন। বাবা যেমন অনেকের জন্য কবর খুড়েছিলেন তাই প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যেও বাবার কবর খুড়তে আমাদেরও কোন কষ্ট হয় নাই।

স্বর্গীয়া ভায়েলা জিকোধারের নামে ১৯০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত বগুড়া খ্রীষ্টান মন্ডলীর রজত জয়ন্তী, ১৯৮০ সালে ধুমধাম করে পালন করা হয়। বাবাকে তখন দেখেছি নিজের কাজের পাশাপাশি মন্ডলীর এই আয়োজনে দিনরাত পরিশ্রম করতেন। আমি কাছে থেকে দেখেছি তার কাজ, বাবা সকাল বেলা প্রাতঃকালীন প্রার্থনায় অংশ গ্রহন করার পর নিজে গির্জা ঘর সংলগ্ন বাগানে কাজ করতেন। গির্জা ঘরের চারপাশ দিয়ে লাগানো মেহগণী গাছগুলো আমার বাবার নিজ হাতে লাগানো। এছাড়াও গির্জা ঘরের প্রবেশের মূল ফটক তৎকালীন সময়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতৃত্বের সাথে বিদ্রোহী হয়ে বাবার নেতৃত্বে এটা করা হয়, যা বর্তমানে সাধারণ খ্রীষ্টভক্তদের যাওয়া আসার একমাত্র রাস্তা। মন্ডলীর আয়ের কথা মাথায় রেখে রাস্তা সংলগ্ন গির্জা ঘরের জায়গায় বাবা দোকান করেছিলেন। পরবর্ততে যদিও তা রক্ষা করা সম্ভব হয় নাই। কালে পরিক্রমায় অনেক নদীর পানি গড়িয়েছে। বর্তমান প্রজন্ম আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত, ডিজিটাল যুগে আমরা অনেক দুর এগিয়ে গিয়েছি, কিন্তু আমার মনে হয় সমাজে একটি বড় অভাব রয়েছে, এই কালজয়ী পুরুষ আমার বাবা অমল প্রামানিকের।

আমার বাবা দীর্ঘদিন ধরে ঘরেই অবস্থান করতেন। ২০১৪ সালে তিনি Electrolyte Imbalance এ আক্রান্ত হয়ে শারিরীক ও মানসিক বিপর্যস্ত ছিলেন। আমার চাকরির ব্যস্ততার কারণে কাছে থেকে বাবা মার সেবা শুশ্রুষা করা সম্ভব হয় নাই বটে! আমার ছোট বোন ২০১৮ সাল থেকে বাবা মার সেবা করেছে। তার সাথে থেকে অনেকে তাকে সহযোগিতা করেছ। ২০২১ সালে জানুয়ারী মাসে ৬ তারিখে, আমাদের বাসায় প্রার্থনা সভার আয়োজন করেছিলাম। স্থানীয় পুরোহিত ফাদার লিমন রোজারিও সহ স্থানীয় ক্যাথলিক মন্ডলীর সদস্যদের উপস্থিতিতে খ্রিষ্টীয় রীতি অনুসারে ফাদার খ্রিষ্টযাগ উৎসর্গ করেছিলেন। বিকালে স্থানীয় বগুড়া খ্রিষ্টীয় মন্ডলীর পালক এর নেতৃত্বে প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। মহান এই আয়োজনে আমারা প্রামানিক বংশের বর্তমান প্রজন্ম একত্রিত হয়েছিলাম। মহান এই আয়োজন কে আমি ঈশ্বরের অশীর্বাদ রূপে মনে করছি। আমার মা গত ২০১৩ সাল থেকে পাঁজরের অপারেশন করার পর স্বাভাবিক চলাচল বন্ধ ছিলো। দীর্ঘদিন ওয়াকারে হাটার চেষ্টা করেও স্বাভাবিক হাঁটা চলা করতে পারেন নাই। এই দীর্ঘ সময় আমার বাবা পাশে থেকে মায়ের সেবা শুশ্রুষা করতেন। মাকে দেখাশুনা করার জন্য আমরা একজন সহকারী খোঁজ করছিলাম, কারণ বাবা ও বোন তারা পেরে উঠছিল না। তাই ৬ই জানুয়ারি সকল আয়োজন শেষে আমরা পরিবারের সকলে যখন বসে বিভিন্ন আলোচনা করছিলাম, তখন হঠাৎ করেই বর্তমানে আমাদের সাথে থাকা বোন রঞ্জিতাকে, আমরা পেয়ে যাই। রঞ্জিতা আসার কিছুদিন পর থেকেই বাবার শারিরীক অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকেই যাচ্ছিলো। প্রায় ছয়মাস আমার ছোট বোন বিপ্লবী, সহকারী বোন রঞ্জিতা আর সহকারী ভাই রহমানের প্রতি আমার অন্তরের অন্তস্থল থেকে কৃতγতা প্রকাশ করছি। এই সময়ে স্থানীয় পালক মি. গিলবার্ট মৃধা ও মি. সৌরভ বিশ্বাস কাকু বাবা মা কে প্রায়ই দেখতে আসতেন ও প্রার্থনা করতেন । আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

আমার বাবার জীবদ্দশায় অনেকের বিরাগভাজন হয়েছেন, হয়ত তিনি অনিচ্ছাকৃত অনেক ভুল ভ্রান্তি করেছেন। না জেনে অনেকের মনে কষ্টের কারণ হয়েছেন। এই সবকিছুর জন্য আমি সকলের কাছে বাবার জৈষ্ঠ পুত্র হয়ে ক্ষমা প্রার্থী। সকলকে আমার বাবার বিদেহী আত্মার চির শান্তি কামনার জন্য বিনীতভাবে প্রার্থনায় স্মরণ করার জন্য অনুরোধ করছি। নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।