ঢাকা ,
বার : মঙ্গলবার
তারিখ : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ৯ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা দেশ জাতীয় বাজেট থেকে সমবায়ের ১৫% আয়কর বাতিল করা হোক : নির্মল রোজারিও

জাতীয় বাজেট থেকে সমবায়ের ১৫% আয়কর বাতিল করা হোক : নির্মল রোজারিও

0
1791

বাংলাদেশে ২৯ ক্যাটাগরিতে ১ লক্ষ ৭৭ হাজার সমবায় সমিতি রয়েছে। এই সমস্ত সমবায় সমিতিতে ১ কোটি ১২ লক্ষের মতো সদস্য রয়েছেন। এসব সমিতির মূলধন মূলত আহরিত হয় সদস্যদের সঞ্চয় থেকে। আমাদের সদস্যরা তাদের সঞ্চয় সমিতিতে রাখে। এর মধ্য দিয়ে একটি বড় মূলধনের তৈরি হয়। সেই মূলধন থেকে আমরা সাধারণত সদস্যদের ঋণ দিয়ে থাকি। এই ঋণের টাকা সম্মানিত সদস্যরা কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধ করে থাকে। সদস্যদের মধ্যে দরিদ্র, মধ্যবিত্ত শ্রেণির সদস্য রয়েছেন।
সদস্যদের অনেকেই ঋণ নিয়ে ছোট ছোট ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করেন। অনেকে চাকরি করেন। সেই আয় থেকে তারা ঋণের টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতে অনেকের চাকরি নেই, অনেকে বেতন পাচ্ছেন না। অনেকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। যার ফলে তারা ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে পারছেন না।
সদস্যরা যখন সমিতিতে টাকা জমা করেন, সেই টাকা থেকে সদস্যদের ঋণ দেওয়া হয়। কিন্তু সদস্যরা যদি জমা বা ঋণ ফেরত না দেন, তাহলে সমিতিতে নগদ অর্থের সংকট হয়। বর্তমানে সমবায় সমিতিগুলোতে লেনদেন কোথাও সীমিত আকারে হচ্ছে, কোথাও হচ্ছে না। ফলে সমিতিতে নগদ অর্থের সংকট দেখা দিবে। সেখানে আমাদের বিশেষ সহযোগিতা প্রয়োজন। আমরা মনে করি সরকারের পক্ষ থেকে সমবায় সমিতিগুলোকে ভর্তুকি দিয়ে হোক, অনুদান দিয়ে হোক অথবা বিনা সুদে ঋণ দিয়ে হোক, সরকারকে বর্তমানে সমবায় সমিতিগুলোর পাশে দাঁড়ানো প্রয়োজন।
সমবায় সমিতিগুলো ব্যবস্থাপনায় ৯ লক্ষের অধিক মানুষ কর্মরত। সমিতিগুলোর আয় কমে যাওয়ায় কর্মচারীদের বেতন দেওয়া ও সমিতির অন্যান্য খরচ বহন করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এই মুহূর্তে সমবায় সমিতিগুলো সচল রাখা প্রয়োজন। এই বিষয়টি সরকারকে বিবেচনায় নিতে হবে। কারণ, সমবায়ে লক্ষ কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এই সব সমবায় সমিতিগুলোর মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের অনেক উপকার করার সুযোগ রয়েছে। ইতিমধ্যে উপকার করাও হয়েছে।
এখন সমবায় সমিতির মধ্যে একটি বড় সমস্যা রয়েছে। ২০১৩-২০১৪ অর্থ বছর থেকে এই সমবায় সমিতির যে আয়, এই আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ আয়কর ধার্য করা হয়েছে। যা অতীতে কখনোই ছিল না। সিডিএফ দিতে হয় এবং রিজার্ভ রাখতে হয় ১৫ ভাগ এবং কুঋণ তহবিলে জন্য ১০ ভাগ রিজার্ভ রাখতে হয়। আমাদের সমিতিগুলোতে যে ১৫ শতাংশ আয়কর দিতে হয়, তার ফলে সদস্যদের সামান্য রিবেট দেওয়া সম্ভব হবে না।
তাই আমি মনে করি আগামী অর্থ বছরের যে বাজেট পেশ হতে যাচ্ছে, সেখানে যেন সমবায়ের ১৫ শতাংশ আয়কর বাতিল করা হয়। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রীর নিকট অনুরোধ করছি, সমবায়ের ওপর অর্পিত এই ১৫ শতাংশ আয়কর যেন মওকুফ করা হয়।
সমবায়কে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সনে যখন আমাদের সংবিধান প্রণীত হয়েছিল, তখন মালিকানার দ্বিতীয় সেক্টর হিসেবে (সমবায়কে) গুরুত্ব দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখতেন, এই সমবায়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে একটি স্বাবলম্বী দেশ হবে; বৈষম্য দূর হবে। তিনি বাংলাদেশের গ্রাম পর্যায়ের মানুষকে একটি সুন্দর অর্থনীতি উপহার দিতে চেয়েছিলেন। সমবায়ের মাধ্যমে গ্রামীণ পর্যায় থেকে সঞ্চয় আহরণ করে জাতীয় মূলধন গঠন করার সুযোগ সমবায়ের মাধ্যমে রয়েছে। এই সুযোগ আমাদের ব্যবহার করা উচিত। চলমান এই করোনা মাহামারি সময় সরকারের প্রতি আবেদন, সমবায় সমিতিকে ভর্তুতি অথবা অনুদান দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য।
অনুলিখন: সুমন কোড়াইয়া