ঢাকা ,
বার : সোমবার
তারিখ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ৯ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা দেশ জিয়ার খুলি: সিঙ্গাপুরের হাসপাতালকেও দুষছে অ্যাপোলো

জিয়ার খুলি: সিঙ্গাপুরের হাসপাতালকেও দুষছে অ্যাপোলো

0
301
ছবি : বাংলানিউজ

প্রথম আলোর চিফ ফটোগ্রাফার জিয়া ইসলামের মাথার খুলি না পাঠানোর দায় কেবল নিজেদের ঘাড়ে না রেখে সিঙ্গাপুরের গ্ল্যানিগ্লেস হসপিটালকেও দুষছে ঢাকার অ্যাপোলো। বাংলাদেশি এই খরুচে হসপিটালটির দাবি, খুলি নেওয়া ব্যবস্থাই ছিলো না গ্ল্যানিগ্লেসের। (খবর: বাংলানিউজ)

তাই এ ব্যাপারে অভিযোগ করলে দুই হাসপাতালকেই দোষারোপ করতে হবে বলে জানিয়েছেন অ্যাপোলো হসপিটালের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার (মেডিকেল সার্ভিস) ড. আরিফ মাহমুদ।

রোববার (২৯ জানুয়ারি) সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরা শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) জিয়াকে নিয়ে যাওয়ার সময় খুলি নেওয়ার কোনো ব্যবস্থা রাখেনি।

আরিফ মাহমুদ বলেন, ব্রেনে চাপ পড়লে তা অত্যন্ত ফুলে যায়। ব্রেনকে জায়গা করে দিতেই খুলি খুলে রাখা হয়েছিল বোন ব্যাংকে। বোন ব্যাংকে তা ৬ মাস পর্যন্ত রাখা যায়।
সাধারণত এই ধরনের রোগীদের স্থিতি অবস্থায় ফিরে আসতে ২ থেকে ৩ মাস সময় লাগে। তখন আবার খুলির ওই অংশটি স্থাপন করা হয়।

তিনি বলেন, গ্ল্যানিগ্লেস হসপিটালে রোগীর সঙ্গে যেসব কাগজ দেওয়া হয়েছিল, সেখানে উল্লেখ ছিল খুলির ওই অংশটি অ্যাপোলো হসপিটালের বোন ব্যাংকে রাখা আছে। তবে, মৌখিকভাবে সেটি বলা হয়নি।

এছাড়াও সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরা খুলি নেওয়ার মতো কোনো বক্স বা পদ্ধতি নিয়ে আসেনি। যাতে করে খুলির ওই অংশ পাঠানো যায়। আর সাধারণত ওই অংশটি এখনই কাজে লাগারও কথা ছিল না। তবে, গ্ল্যানিগ্লেস হসপিটাল থেকে চেয়ে পাঠালে আমরা গত ২৬ জানুয়ারি খুলির ওই অংশ সিঙ্গাপুরে পাঠাই। বলেন ড. আরিফ।

আরিফ বলেন, সিঙ্গাপুর থেকে যে মেডিকেল টিম এসেছিল তারাও আমাদের কাছে ওই অংশটি চায়নি। দুইপক্ষের মধ্যে এই বিষয় নিয়ে কথা হয়নি ওই সময়।

জানা যায়, অধ্যাপক ডা. ম্যাথিও জে চ্যান্ডির অধীনে জিয়ার অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। ওই সময় খুলির একটি অংশ অ্যাপোলো হসপিটালের ফ্রিজে রাখা হয়। কিন্তু সিঙ্গাপুরে পাঠানোর সময় সেটা দিতে ভুলে যান সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা।

গত ৯ জানুয়ারি রাজধানীর পান্থপথে গাড়িচাপায় আহত হন মোটরসাইকেল চালক জিয়া। সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়। ১০ জানুয়ারি তাকে নেওয়া হয় অ্যাপোলো হসপিটালে। সেদিনই তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করে ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়।

পর্যবেক্ষণ শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্যে ১৩ জানুয়ারি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয় ফটো জার্নালিস্ট জিয়া ইসলামকে। ঢাকায় থাকতেই তার ফুসফুসে সংক্রমণ হলেও অ্যাপোলো হসপিটালের চিকিৎসকরা সেটি জানাতে পারেননি। সিঙ্গাপুরে নেওয়ার পর তা ধরা পড়ে।

জিয়ার ফুসফুসের সংক্রমণ নিরোধে গত ১৬ জানুয়ারি গ্ল্যানিগ্লেস হসপিটাল অ্যান্ড মেডিক্যাল সেন্টারে অস্ত্রোপচার করা হয়। এ সময় তার মাথার খুলির বাম পাশটা দেখতে পাননি চিকিৎসকরা। সিঙ্গাপুর থেকে বিষয়টি জানানো হলে ঢাকার অ্যাপোলো হসপিটাল খুলি পাঠানোর ব্যবস্থা করে।

বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত দৈনিক পূর্বকোণের সম্পাদক তসলিম চৌধুরীকে চিকিৎসার জন্যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। এই অ্যাম্বুলেন্সে জিয়ার খুলির বাকি অংশটি সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হসপিটালের নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক অসিত চন্দ্র সরকার জানান, মানুষের মাথায় আঘাত লাগলে ব্রেন ফুলে যায়। তখন বেশি জায়গার প্রয়োজন হয়। ফলে হাঁড়ের অংশ খুলে রাখা হয়। এই অংশটি শরীরের ভেতরেও রাখা যায়। আবার বাইরেও রাখা হয় অনেক সময়। সেটি চিকিৎসকরা নোটে টুকে রাখেন।

আরবি/এসএন/ ২৯ জানুয়ারি, ২০১৭