শিরোনাম :
ঢাকা ক্রেডিট আদর্শ ক্রেডিট ইউনিয়ন : ফাদার কমল কোড়াইয়া
ঢাকা ক্রেডিটকে আদর্শ ক্রেডিট ইউনিয়ন হিসেবে উল্লেখ করেন তেজগাঁও কাথলিক গীর্জার পাল-পুরোহিত ফাদার কমল কোড়াইয়া। আজ ঢাকা ক্রেডিটের ৬৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে তেজগাঁও গির্জায় সকালে পবিত্র খ্রিষ্টযাগে তিনি বলেন, ঢাকা ক্রেডিট দেশে সর্ব প্রথম যাত্রা শুরু করে, ঢাকা ক্রেডিটের পথ অনুসরণ করে আরো অনেক ক্রেডিট ইউনিয়ন শুরু হয়েছে, তাই পরিবারের বড় ভাইয়ের মত ঢাকা ক্রেডিটকে আরো দায়িত্বশীল হতে হবে।
প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা ক্রেডিটের প্রতিষ্ঠাতা ফাদার চার্লস জে. ইয়াং সিএসসি, প্রয়াত কর্মকর্তাসহ ২৪ জনের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি, অন্যান্য কর্মকর্তা, উপদেষ্টো এবং সদস্যগণ।
খ্রিষ্টযাগে প্রারম্ভিক প্রার্থনায় পাল-পুরোহিত ফাদার কমল সমিতির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত ফাদার চালর্স জে. ইয়াং সিএসসি, সকল প্রয়াত কর্মকর্তা, সদস্যদের অবদানের কথা স্মরণ করেন এবং বর্তমান কর্মকর্তাদের সুস্বাস্থ্য কামনা করেন।
বাণী সহভাগিতার ফাদার কমল কোড়াইয়া বলেন, ঢাকা ক্রেডিট উচ্চশিক্ষা, বিয়ের অনুষ্ঠান, বাড়ি-ঘর নির্মাণ, সমাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আর্থিকভাবে সাহায্যে করে যাচ্ছে এই সমিতি। খ্রিষ্টান সমাজ আজ ক্রেডিট ইউনিয়ন নিয়ে চিন্তা করছে এবং ক্রেডিট ইউনিয়ন-নির্ভর। ঢাকা ক্রেডিটের অর্থের পরিমাণ ব্যাংকের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। ঢাকা ক্রেডিট ছোট ছোট ঋণ প্রদানের মাধ্যমে সমাজের যে আর্থিক উন্নয়ন করেছে, তা একটি ব্যাংকও করতে পারেনি।
‘বাংলাদেশের সকল ক্রেডিট ইউনিয়নের আদর্শ ঢাকা ক্রেডিট, তাই অন্যান্য ক্রেডিট ইউনিয়নের উচিত ঢাকা ক্রেডিটকে ইতিবাচক পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করা। এই ক্রেডিট ইউনিয়ন খ্রিষ্টান মানুষের অর্থ সঞ্চয়ের একটি নিরাপদ স্থান। এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকান্ডের প্রতি নৈতিক সমর্থন জানাই’, উল্লেখ করেন তিনি।
সমাপনী প্রার্থনায় পাল-পুরোহিত ঢাকা ক্রেডিটের সকল কর্মকর্তা, কর্মী ও সদস্যদের জন্য বিশেষ আশীর্বাদ প্রদান করেন, ৬৪ বছররে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শুভেচ্ছা জানান ও শুভ কামনা করেন।
ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ গমেজ খ্রিষ্টযাগ শেষে ঢাকা ক্রেডিটের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এই প্রতিষ্ঠানটির শুরু থেকে যারা জড়িত ছিলেন, তাঁদের মধ্যে প্রতিষ্ঠাতা ফাদার চালর্স জে. ইয়াং সিএসসি, সকল প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি, কর্তকর্তা, কর্মচারী, যারা আর এই পৃথিবীতে নাই তাদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে তাঁদের স্মরণ করেন এবং তাঁদের আত্মার চিরশান্তি কামনা করেন।
এ দিন খ্রিষ্টযাগের পর সমিতির প্রেসিডেন্টসহ কর্মকর্তা ও কর্মীগণ তেজগাঁও কবরস্থানে যে সকল প্রয়াত কর্মকর্তাদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তারা হলেন- ফাদার চার্লস জে ইয়াং (প্রতিষ্ঠাতা), ডানিয়েল কোড়াইয়া (প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট), টি ডি রোজারিও (প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট), অরুণ বার্ণার্ড ডি’ কস্তা (প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট), অধ্যাপক গাব্রিয়েল মানিক গমেজ (প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট), আরনল্ড অরুণ গমেজ (প্রাক্তন ভাইস-প্রেসিডেন্ট), খ্রীষ্টফার গমেজ (প্রাক্তন সেক্রেটারি), এন্ড্রু ডি’ কস্তা (প্রাক্তন সেক্রেটারি), জন পি কস্তা (প্রাক্তন ম্যানেজার), আইজাক গমেজ (প্রাক্তন ট্রেজারার), স্ট্যানলী টেনু গমেজ (প্রাক্তন ট্রেজারার), আলেকজান্ডার রোজারিও (প্রাক্তন ডিরেক্টর) ও রবিন রোজারিও (প্রাক্তন সেক্রেটারি। এবং ওয়ারী কবরস্থানে যাদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তাঁরা হলেন- জোনাস গমেজ (প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট), পিটার পল গমেজ (প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট), পিটার এম কস্তা (প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট), অ্যাড. লাফন্ড গমেজ (প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট), আন্দ্রেজ গমেজ (প্রাক্তন সেক্রেটারি), জাখারিয়াস কস্তা (প্রাক্তন সেক্রেটারি), স্কলাষ্টিকা সুনীলা কস্তা (প্রাক্তন সেক্রেটারি), সিরিল রোজারিও (প্রাক্তন ম্যানেজার), রাফায়েল জে কোড়াইয়া (প্রাক্তন সেক্রেটারি), যোসেফ এইচ কস্তা (প্রাক্তন ভাইস-প্রেসিডেন্ট), স্বর্গীয় ইগ্নাসিয়াস এ গমেজ (মনু) (ক্রেডিট কমিটির চেয়ারম্যান)।
এ দিন খ্রিষ্টযাগে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ক্রেডিটের ভাইস-প্রেসিডেন্ট শীরেন সিলভেষ্টার গমেজ, সেক্রেটারি পংকজ গিলবার্ট কস্তাসহ বোর্ড অব ডিরেক্টরস, ক্রেডিট কমিটি ও সুপারভাইজরি কমিটির সদস্যগণ, বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের মহাসচিব হেমন্ত আই. কোড়াইয়া, প্রাক্তন কর্মকর্তা, উপদেষ্টা, কর্মী এবং সদস্যবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, ১৯৫৫ সালে সালের ৩ জুলাই খ্রিষ্টানদের আর্থিক উন্নয়নের জন্য ফাদার চালর্স জে. ইয়াং সিএসসি ঢাকার লক্ষ্মীবাজার চার্চে ৫০ জন সদস্য এবং ২৫ টাকা মূলধন নিয়ে ঢাকা ক্রেডিটের যাত্রা শুরু করেছিলেন। এটাই ছিল বাংলাদেশ সমবায় সমিতি আন্দোলনের প্রথম উদ্যোগ এবং বর্তমানে দেশের সর্ববৃহৎ সমবায় সমিতি।
এদিন ঢাকা ক্রেডিটের সারাদিনের কার্যক্রমে মধ্যে বিকাল ৫টায় রয়েছে ফার্মগেটের খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনষ্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে আলোচনা সভা, সমবায়ীদের সম্মাননা প্রদান এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।