শিরোনাম :
ঢাকা ক্রেডিটের প্রতিষ্ঠাতা ফাদার চার্লস জে. ইয়াং সিএসসি
তোমার রোপিত বৃক্ষ আজি,
ভরে আছে ফুলে-ফলে,
আছ হৃদয়ে, তুমি মম মোদের,
যাব নাকো তোমায় ভুলে’
হতাশাগ্রস্ত মানুষের হৃদয় তুমি দিয়েছ ভরি
আজি এই শুভক্ষণে কৃতজ্ঞচিত্তে
তোমায় মোরা স্মরি।
বাংলাদেশে ক্রেডিট ইউনিয়নের রূপকার মহৎপ্রাণ ফাদার চার্লস জে. ইয়াং! জন্ম ৩ মে ১৯০৪ খ্রিষ্টাব্দে আমেরিকার নিউ ইয়র্ক রাজ্যের রচেস্টারে। বাবা ডানিয়েল ইয়াং এবং মা মেরী জেনিংস। তিন ভাইবোনের মধ্যে ফাদার ইয়াং দ্বিতীয়। তিনি স্কুল জীবনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেন। ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে ফাদার চার্লস নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। তিনি সেখানকার মাইনর সেমিনারীতে থাকতেন। এরপরই তিনি নভিসিয়েটে যোগ দেন। ২ জুলাই, ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি পবিত্র ক্রুশ সম্প্রদায় থেকে প্রথম ব্রত গ্রহণ করেন। ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাটিনে বিএ পাস করেন। একই বছর ফাদার ইয়াং ওয়াশিংটনের ফরেন সেমিনারীতে যোগ দেন।
২৪ জুন, ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর সহপাঠীদের সাথে যাজক পদ লাভ করেন। একই বছর তিনি ঢাকায় আসেন। ফাদার ইয়াং ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে কানাডায় যান এবং ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বয়স্ক এবং ক্রেডিট ইউনিয়ন শিক্ষার ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়ে আসেন।
১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দের ৩ জুলাই তিনি ৫০ জন সদস্য নিয়ে লক্ষ্মীবাজারে মাত্র ২৫ টাকা মূলধন নিয়ে একটি ক্রেডিট ইউনিয়ন গঠন করেন। যা বর্তমানে দি খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিঃ, ঢাকা (ঢাকা ক্রেডিট) নাম নিয়ে সদর্পে খ্রিষ্টান সমাজে উন্নয়নের মডেল হিসেবে এগিয়ে চলছে।
১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর মাসের ১৪ তারিখ ঢাকার প্রেস ক্লাবের সামনে একটি গাড়ি তাঁকে ধাক্কা দেয়। এতে তিনি পড়ে যান এবং মাথায় বড় ধরনের আঘাত পান। তখনই তিনি জ্ঞান হারান। এরপর আর জ্ঞান ফিরে আসেনি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাত ১১.০৫ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ১৬ নভেম্বর ফাদার ইয়াংকে তেজগাঁও চার্চের সমাধিস্থলে সমাহিত করা হয়।
মানুষ বেঁচে থাকে তাঁর কর্মে, তাঁর রোপিত বৃক্ষের মাঝে ফল হয়ে। তেমনি ফাদার ইয়াংয়ের গড়ে তোলা সমিতি আজ সারা দেশের অনুকরণীয় প্রতিষ্ঠান। যখনই উচ্চারিত হয় ‘ঢাকা ক্রেডিট’, তখনই বেড়িয়ে আসে এর মহানায়ক ফাদার চার্লস জে. ইয়াং সিএসসি-এর নাম।