ঢাকা ,
বার : শনিবার
তারিখ : ০৪ জানুয়ারী ২০২৫
বাংলা : ২১ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা ঢাকা ক্রেডিট ঢাকা ক্রেডিটের প্রশংসা করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল

ঢাকা ক্রেডিটের প্রশংসা করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল

0
2348
ঢাকা ক্রেডিটের প্রশংসা করলেন স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল

ঢাকা ক্রেডিটের কার্যক্রম আমি যতই দেখছি, তত বেশি মুগ্ধ হচ্ছি। যোগ্য নেতৃত্বের কারণেই প্রতিষ্ঠানটি বিরাট আকার ধারণ করছে, সফল হচ্ছে এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখছে, বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
৩ জুলাই, বুধবার ফার্মগেটের খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালন করা হয় ঢাকা ক্রেডিটের ৬৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা ক্রেডিটের যোগ্যতম প্রেসিডেন্ট বাবু মাকুর্জ গমেজেকে দেখেছি এশিয়ার ওয়াইএমসিতে নেতৃত্ব দিতে, তার প্রতি সদস্যদের আস্থা, তার নেতৃত্বে আজকের ঢাকা ক্রেডিট একটি ভাল অবস্থায় আছে।’

আরো পড়ুন:ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ গমেজের সাক্ষাৎকার

তিনি বলেন যে, ২০০৯ সনের চেয়ে ঢাকা ক্রেডিট অনেক উন্নত হয়েছে।  তখন এর সদস্য ছিল ২০ হাজার, মূলধন ছিল ১০০ কোটি, বর্তমানে সদস্য আছে ৪০ হাজার, মূলধন আছে প্রায় সাড়ে ৭ শ কোটি। প্রেসিডেন্ট বাবু মাকুর্জ গমেজের পরিচালনার কারণেই আজ প্রতিষ্ঠানটি এত দূর এসেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ঢাকার আর্চবিশপ কাডির্নালের প্রশংসা করে স্বরাষ্টমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে যখন ক্রমাগত জঙ্গি হামলা হচ্ছিলো, আমি কার্ডিনাল মহোদয়ের সাথে কথা বলে বুঝেছি তাঁর জ্ঞানের কত গভীরতা। জঙ্গিবাদ রোধ তাঁর সহযোগিতায় বিভিন্ন ধর্মের ধর্মীয় নেতা নিয়ে এক মঞ্চে কাজ করেছি।’

ঢাকা ক্রেডিটের প্রশংসা করলেন স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল
অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার ঢাকার আর্চবিশপ কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও সিএসসি বলেন,আমরা শুধু নিজেদের জন্য বাস করি না। আমরা বাস করি সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য। বাংলাদেশ অর্থনীতিতে ঋণদান সমিতি খ্রিষ্টানদের অবদান। এই ঋণদান সমিতিগুলো বিরাট ভূমিকা পালন করছে। তিনি উল্লেখ করেন, দুইজন হলিক্রস ধর্মগুরু ঢাকা ক্রেডিট প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তাঁদের মরণোত্তর সম্মননা দেওয়া উচিত।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি দি সেন্ট্রাল এসোসিয়েশন অব খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভস্ (কাককো) লিমিটেডের চেয়ারম্যান নির্মল রোজারিও বলেন, ‘আমরা গর্বিত আমাদের পূর্ব-পুরুষদের কৃতিত্বে। আমাদের পূর্বপুরুষরা যে নেতৃত্ব দিয়েছেন তার ফলেই আজ ঢাকা ক্রেডিট এক মহীরূহ সমিতিতে পরিণত হয়েছে। সমবায় সমিতির মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়াই আমাদের লক্ষ্য।’
এই বিশেষ দিনে সমিতির প্রতিষ্ঠাতা ফাদার চার্লস জে ইয়াং সিএসসিকে স্মরণ করে ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট বাবু মাকুর্জ স্বাগত বক্তব্যে বলেন, সমিতির প্রতিষ্ঠাতা, নেতৃতবর্গ ও সদস্যদের অংশগ্রহণে এটি সম্ভব হয়েছে। তিনি তাদেরকে কৃতজ্ঞতা জানান।
তিনি ঢাকা ক্রেডিটের প্রয়াত সকল সদস্যদের আত্মার শান্তি কামনা করে বলেন, ঢাকা ক্রেডিট আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য ঋণের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকল্প- স্কুল, চাইল্ড কেয়ার এন্ড এডুকেশন সেন্টার, হাসপাতালসহ বিভিন্ন ধরনের কর্মোদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঢাকা ক্রেডিট জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সকল বিষয়ে সেবা দিয়ে আসছে।
ঢাকা ক্রেডিটের নেতৃবৃন্দের প্রশংসা করে সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধক ও মহাপরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, একটি প্রতিষ্ঠান ৬৪ বছর ধরে নীতি নৈতিকতার সাথে চলতে পারে এটা একটা অনন্য দৃষ্টান্ত। কবি নজরুল ইসলাম সমবায়ের জন্য ডাক দিয়েছিলেন, খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষ প্রথম সেই ডাক শুনেছিলেন।
অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার এমপি বলেন, ‘আমি ঢাকা ক্রেডিটের একজন গর্বিত সদস্য। এই সমিতি মানুষের শিক্ষা থেকে শুরু করে, চিকিৎসা, গাড়ি, বাড়ি করতে সহযোগিতা করছে। এই সমিতির শুভ কামনা করি।’
এ ছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দি মেট্রোপলিটান খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেড-এর ভাইস-চেয়ারম্যান রতন পিউরীফিকেশন, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ-এর অন্যতম সভাপতি হিউবার্ট গমেজ এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ঢাকা ক্রেডিটের সদস্যরা ঢাকা ক্রেডিটকে তাদের জীবনের জন্য আশির্বাদ হিসেবে উল্লেখ করেন। ডলি বটলেরু নামে একজন সদস্য ডিসি নিউজকে বলেন, ‘ঢাকা ক্রেডিট থেকে স্বল্প সুদে সহজে ঋণ পাওয়া যায়। এখান থেকে ঋণ নিয়ে চিকিৎসা করাতে পারি, জরুরি প্রয়োজনে টাকা তুলতে পারি, এই সমিতি আমার জীবনের জন্য আশির্বাদস্বরূপ।’

আরো পড়ুন:ঢাকা ক্রেডিট আদর্শ ক্রেডিট ইউনিয়ন : ফাদার কমল

এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ক্রেডিটের ভাইস-প্রেসিডেন্ট শীরেন সিলভেষ্টার গমেজ, সেক্রেটারি পংকজ গিলবার্ট কস্তা, ঢাকা ক্রেডিটের বোর্ড অব ডিরেক্টর, ক্রেডিট কমিটি ও সুপারভাইজরি কমিটির সকল কর্মকর্তা।
অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দ জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা, ঢাকা ক্রেডিটের পতাকা ও সমবায়ী পতাকা উত্তোলন করেন। এরপর বেলুন উড়িয়ে প্রতিষ্ঠাবাষির্কীর শুভ উদ্বোধন করেন।

এ দিন সমাজে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও সমবায়ে বিভিন্নভাবে অবদানকারী নয়জনকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

উল্লেখ্য, ঢাকা ক্রেডিট ১৯৫৫ সালের ৩ জুলাই পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে ফাদার চার্লস জে. ইয়াং শুরু করেন। মাত্র ৫০ জন সদস্য ২৫ টাকা মূলধন নিয়ে শুরু হওয়া ঢাকা ক্রেডিট এখন প্রায় ৪০ হাজার সদস্যের সাড়ে ৭ শ কোটির টাকার প্রতিষ্ঠান।

ঋণ কার্যক্রমের পাশাপাশি সামাজিক ও বিভিন্ন আয়মূলক প্রকল্প নিয়ে ঢাকা ক্রেডিট কাজ করছে। সমবায় বাজার, কমিউনিটি সেন্টার, রিসোর্ট ও ট্রেনিং সেন্টার, আন্তর্জাতিক মানের চাইল্ড কেয়ার এন্ড এডুকেশন সেন্টার, জিম, নির্মাণাধীন ৩০০ শয্যার হাসপাতাল,  মেডিকেল কলেজ, নার্সিং কলেজ, নার্সিং হোম ও নার্সিং ইনস্টিটিউটসহ নানা চলমান ও প্রক্রিয়াধীন প্রকল্প নিয়ে ঢাকা ক্রেডিট অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখছে।

অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে ঢাকা ক্রেডিটের ৬৪ বছরের কার্যক্রমের পর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
ঢাকা ক্রেডিটের অ্যাপ-এর উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেক কাটা হয়। অনুষ্ঠানের শেষাংশে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ঢাকা ক্রেডিট কালচারাল একাডেমি ও নারী কমিটির অংশগ্রহণ ছিল চমকপ্রদ।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সেক্রেটারি পংকজ গিলবার্ট কস্তা।

আরো পড়ুন:বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ঢাকা ক্রেডিটের ৬৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন