শিরোনাম :
ঢাকা ক্রেডিটের সহযোগিতায় বিদেশে পড়ার স্বপ্ন পূরণ শতাধিক শিক্ষার্থীর
ডিসিনিউজ ॥ ঢাকা
বর্তমান প্রজন্ম মানেই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার লড়াই। নিজেকে সবার মধ্যে যোগ্য করে তুলতে এই লড়াই করতে হয় আপদমস্তক। নিজেকে বাস্তবতায় ঢেলে সাজিয়ে তুলতে শিক্ষা থেকে শুরু করে প্রশিক্ষণ পর্যন্ত কোনোকিছুকেই বাদ দেওয়া যায় না। পান থেকে চুন খসলেই ভবিষ্যৎ অন্ধকার। তাই বর্তমান প্রজন্ম নিজেকে নতুন উচ্চতায় মেলে ধরতে সাত সমুদ্র তের নদী পাড় হয়েও বিদেশ গমন করছে।
কিন্তু কাল হয়ে দাঁড়ায় আর্থিক অসঙ্গতি। হন্যে হয়ে খুঁজতে হয় আর্থিক উৎস। দু একটা পেলেও হাজারো বিপত্তি। হয়তো মিথ্যে না হয় চড়া সুদ। পারত পক্ষে কাছের মানুষটিও এই বিষয়ে মুখ ফিরিয়ে নেয়। তখন স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়, সটকে পড়তে হয় মূলস্রোতধারা থেকে। আবার একটু বিচক্ষণভাবে চেষ্টা করলেই সমাধানের রাস্তা সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়। এমনই সব স্বপ্ন বুনে সত্যি করে তুলছে ঢাকা ক্রেডিট।
দি খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি:, ঢাকা (ঢাকা ক্রেডিট)-এর বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য স্বচ্ছলতা ঋণের মাধ্যমে ১২৯ জন খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের যুবক-যুবতী আমেরিকা, কানাডা, জার্মানী, ফ্রান্স, পোল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, চীনসহ বিভিন্ন উন্নত দেশে পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই এখন সেসব দেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। দেশে প্রেরণ করছেন রেমিটেন্স।
ঢাকা ক্রেডিটের অনেক সদস্য আছেন যারা চান তাদের সন্তানদের উন্নত দেশের কোনো বিশ^বিদ্যালয়ে সন্তানকে পড়াশোনা করাবেন। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় এম্বাসিতে আবেদনপত্রের সাথে আর্থিক স্বচ্ছলতা দেখাতে না পারার কারণে বিদেশে সন্তানকে পাঠাতে পারছেন না। সেসব সদস্যের কথা চিন্তা করে ঢাকা ক্রেডিট শুরু করেছে বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য স্বচ্ছলতা ঋণ।
ঢাকা ক্রেডিটের মেম্বারস ইনফরমেশন সার্ভিস বিভাগের কর্মী ইশা ক্যাথরিন ডিসিনিউজকে বলেন, অনেক শিক্ষার্থী আছেন যারা মেধাবী। কিন্তু তার পরিবার আর্থিকভাবে স্বচ্ছল না। বিদেশে গিয়ে পড়াশোনা করার জন্য ব্যাংকে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকা দেখানো তাঁর পরিবারের পক্ষে সম্ভব হয় না। পরিমাণ মতো ব্যাংকে টাকা না দেখালে শিক্ষার্থীর প্রত্যাশিত দেশে ভিসা পাওয়ার সম্ভবনা অনেক কম। এই সমস্যা সমাধান করতে পারে ঢাকা ক্রেডিটের বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য স্বচ্ছলতা ঋণ।
তিনি আরো জানান, কোনো শিক্ষার্থী শিক্ষিত ও আর্থিকভাবে স্বচ্ছল- এটা কাগজপত্রের মাধ্যমে প্রমাণ করতে পারলে তিনি উন্নত দেশে পড়াশোনা করতে যাওয়ার জন্য ভিসা পাবেন। পূরণ করতে পারবেন তার বিদেশে যাওয়ার স্বপ্ন। তিনি জানান, যারা এখন বিদেশে পড়াশোনা করছেন, তাদের সকলেই কফিশপে, রেস্টুরেন্টে, বিশ^বিদ্যালয় বা অন্য কোথাও খন্ডকালীন চাকরি করছেন। পড়াশোনা শেষে বেশিরভাগই স্থায়ীভাবে থাকার জন্য আবেদন করেন। বিদেশে উন্নত জীবনের সাথে খাপ খাইয়ে ফেলেন। নিজের ও পরিবারের আর্থসামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখেন।
কানাডার একটি বিশ^বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন ম্যাকলিন স্টেফানী গমেজ। তিনি বলেন, ‘আমার ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন ছিল বিদেশে পড়াশোনা করার। পেশাদারিত্বের মাধ্যমে সুন্দর জীবন গড়া যায়। ঢাকা ক্রেডিট খুব সুন্দর একটা আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এখান থেকে ঋণ নিয়ে বিদেশে উচ্চ শিক্ষাগ্রহণসহ নানা বৈষয়িক চাহিদা পূরণ করতে পারে। যারা অর্থের অভাবে বিদেশে পড়াশোনা করতে যেতে পারছেন না, তারা ঢাকা ক্রেডিটের বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য স্বচ্ছলতা ঋণের মাধ্যমে বিদেশে পড়াশোনা করতে পারেন।’
ঢাকা ক্রেডিট বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য স্বচ্ছলতা ঋণের জন্য সর্বোচ্চ ৫০ লক্ষ টাকা ঋণ দিয়ে থাকে। ঋণের মেয়াদ ৬ মাস ও মাসিক ঋণের সুদ শতকরা ১২ টাকা। যে সকল সদস্য এক মাস বা সর্বোচ্চ ৬ মাসের জন্য ঋণ নিবেন, তাদেরকে মাসিক ১২% হারে মেয়াদ অনুযায়ী মোট সুদের টাকা সঞ্চয়ী হিসাবে অগ্রিম প্রদান করতে হয়।
কানাডা যাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীকে তাঁর ব্যাংকে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকা দেখাতে হবে। এছাড়া কোর্স ফি, টিউশন ফি, থাকা-খাওয়ার খরচও সাথে রাখতে হয়।
ইশা ক্যাথরিন বলেন, বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য স্বচ্ছলতা ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো উন্নত দেশের কোনো বিশ^বিদ্যালয়ের অফার লেটার। এই ঋণটি ঢাকা ক্রেডিটের সব চেয়ে সহজ একটি ঋণ। এই ঋণ পেতে কোনো জামিন লাগে না। যে কাগজপত্রগুলো চাওয়া হয় শুধু মাত্র সেগুলো দিতে পারলেই এই ঋণ সহজে পাওয়া যায়।
ঢাকা ক্রেডিটের নির্দিষ্ট কয়েকটি ব্যাংক যেমন কাওরানবাজার শাখার ব্রাক ব্যাংক, পান্থপথ হাতিরপুল শাখার স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ও বিজয় স্মরণী শাখার এশিয়া ব্যাংকে লেনদেন করে। একাউন্ট খুলতে হয় শিক্ষার্থীর স্পন্সর (অভিভাবক) যিনি হবেন তার নামে। ডকুমেন্টগুলো হতে হবে শিক্ষার্থীর।
যারা স্বপ্ন দেখছেন বিদেশে গিয়ে পড়াশোনা করবেন তাঁদের প্রথমে উচ্চমাধ্যমিকে ভালো ফলাফল করতে হবে। আইইএলটিএস ৬ থেকে ৮ স্কোর প্রয়োজন হয়। ভালো বিশ^বিদ্যালয়ের জন্য অবশ্যই আইইএলটিএস ৮ স্কোর হতে হবে।
অভিভাবক যেদিন এই ঋণের আবেদন করবেন সেদিন তিনটি এমআইসিএস-এর চেক জমা দিতে হবে, ঢাকা ক্রেডিটের সঞ্চয়ী চেক এর এক কপি, নমিনির নামসহ প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে হয়।
ঋণ যখন পাশ হয় তখন টাকা সঞ্চয়ী হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। পাশকৃত টাকা ব্যাংকের নির্দিষ্ট একাউন্টে জমা হয়। সেই ব্যাংক থেকে স্টেটমেন্ট দেওয়া হয়।
এই ঋণ নেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীর অভিভাবক যেমন বাবা বা মাকে ঢাকা ক্রেডিটের সদস্য হতে হবে।
এই ঋণের সুবিধা পেতে যোগাযোগ করতে হবে ঢাকা ক্রেডিটের প্রধান কার্যালয়সহ সকল সেবা কেন্দ্রে।
আরো জানতে ক্লিক করুন: