ঢাকা ,
বার : রবিবার
তারিখ : ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ৮ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা প্রবন্ধ ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশে সমবায়ের অবদান

ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশে সমবায়ের অবদান

0
547

পংকজ গিলবার্ট কস্তা ।। ঢাকা

সমমনা ব্যক্তিবর্গ নিদিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্য সমঅধিকারের ভিত্তিতে সম্মিলিতভাবে ও স্বেচ্ছায় সমঝোতা ও সহযোগিতার মাধ্যমে যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে তাকে সমবায় সমিতি বলে। দেশের সমবায় বিভাগের মতে, সমশ্রেণি বা পেশাভুক্ত কতিপয় লোক একে অন্যের সাহায্যে নিজেদের আর্থিক ও সামাজিক অবস্থার উন্নতির লক্ষ্যে ও সংস্থা গঠন ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পরিচালনা করে তাকেই সমবায় সমিতি বলে।

সমবায় একটি আন্দোলন। এটি বিশ্বস্বীকৃত একটি জনবান্ধব অর্থনৈতিক কাঠামো। এটি একটি জনমুখী চেতনা ও আদর্শ। এটি এমন একটি অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান যা দুর্বলকে সবল হতে সাহায্য করে। সমবায় আন্দোলনের সাথে জড়িত হয়ে দেশের লক্ষ-কোটি মানুষের অর্থনৈতিক চাকা সচল রয়েছে। দারিদ্র বিমোচন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, পরিবেশের বিপর্যয় প্রতিরোধ, উদ্যোক্তা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে জোরালোভাবে কাজ করছে সমবায় আন্দোলন। এই আন্দোলন জন্ম থেকে মৃত্যু সব সময়ই বন্ধুর মতো পাশে থাকছে মানুষের।

১৮৫২ সনে হারম্রান স্লুইচ ডেলিটাজ্জ সর্ব প্রথম জার্মানীতে ক্রেডিট ইউনিয়ন আন্দোলন শুরু করেন। তাঁর সাথে যোগ দেন ফ্রেডরিক রাফাইসেন। মি. রাফাইসেন ছিলেন খুবই বুদ্ধিমান, বিচক্ষণ, দূরদর্শী ও জন-দরদী মানুষ। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন একে অপরের সহযোগিতা ছাড়া নিজেদের ভাগ্য উন্নয়ন সম্ভব নয়। ক্রেডিট ইউনিয়নের মাধ্যমে তাঁরা জার্মানীতে দরিদ্র মানুষের আশার আলো হতে পেরেছিলেন।

পঞ্চাশ দশকে তৎকালীন ঢাকার আর্চবিশপ লরেন্স লিও গ্রেনার সমবায়ের শক্তি উপলব্ধি করেন। তিনি আমেরিকান মিশনারি ফাদার চালর্স যোসেফ ইয়াং, সিএসসি’কে কানাডার কোডি ইনস্টিটিউটে পাঠন ১৯৫৩ সনে। ফাদার ইয়াং সমবায়ের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়ে ১৯৫৫ সনে দি খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি:, ঢাকা (ঢাকা ক্রেডিট) প্রতিষ্ঠা করেন। তৎকালীন সময় কাবুলীওয়ালেদের নিকট জিম্মি ছিলেন খ্রিষ্টান সমাজের অনেক মানুষ। সেই বিপদ থেকে ত্রাতারূপে হাজির হয়েছিলো ঢাকা ক্রেডিট। মাত্র ২৫ টাকা মূলধন ও ৫০ জন সদস্য নিয়ে শুরু করা ঢাকা ক্রেডিটের মাধ্যমে উক্ত সমিতির সদস্যদের জীবনমান পরিবর্তন হতে থাকে। বর্তমানে এই সমিতির সদস্য প্রায় ৪৩ হাজার এবং সম্পদ-পরিসম্পদের পরিমাণ ৮২০ কোটি টাকা। ঢাকা ক্রেডিট প্রতিষ্ঠার পরে ক্রমে ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশের প্রায় সব ধর্মপল্লীতে সমবায় সমিতি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। বর্তমানে সমিতিগুলোর কার্যক্রম সুনামের সাথে চলছে। এই সমবায় মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা ছাড়াও দুর্যোগ মোকাবেলায়, নেতৃত্ব বিকাশে, মান্ডলিক কাজে অবদান রেখে যাচ্ছে।

সম্পদ পরিসম্পদ: ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশের আওতায় ছোট বড় প্রায় ৭০টি সমিতি রয়েছে যার মোট সম্পদ পরিসম্পদের পরিমাণ প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এর মধ্যে শুধু মাত্র ঢাকা ক্রেডিট ও দি-মেট্রোপলিটন খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি অর্থাৎ দু’টি সমিতির সম্পদের পরিমান ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।

নিচে সংক্ষেপে ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশে সমবায়ের অবদান উল্লেখ করা হলো:

কর্মসংস্থান: খ্রিষ্টান সমবায় সমিতিগুলিতে সরাসরি কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ১২০০ লোকের। তাছাড়া খ্রিষ্টানদের মধ্যে যারা ব্যবসা করে থাকেন, তাদের প্রায় সকলেই ব্যবসার টাকা ঋণ হিসেবে নিয়ে থাকেন সমবায় সমিতিগুলো থেকে। আপনার ব্যবসার আইডিয়া আছে কিন্তু পুঁজি নাই, তাহলে আপনি ব্যবসা করতে পারবেন না। সেই ব্যবসার ধারণার সহজে বাস্তব রূপ দিচ্ছে ক্রেডিট ইউনিয়নগুলো। যাঁরা ব্যবসা করেন, তাঁদের প্রয়োজন হয় কর্মীর। নিজে স্বাবলম্বী হয়ে অন্যদেরও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছেন খ্রিষ্টান উদ্যোক্তাগণ।

পঞ্চাশ দশকে তৎকালীন ঢাকার আর্চবিশপ লরেন্স লিও গ্রেনার সমবায়ের শক্তি উপলব্ধি করেন। তিনি আমেরিকান মিশনারি ফাদার চালর্স যোসেফ ইয়াং, সিএসসি’কে কানাডার কোডি ইনস্টিটিউটে পাঠন ১৯৫৩ সনে। ফাদার ইয়াং সমবায়ের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়ে ১৯৫৫ সনে দি খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি:, ঢাকা (ঢাকা ক্রেডিট) প্রতিষ্ঠা করেন। তৎকালীন সময় কাবুলীওয়ালেদের নিকট জিম্মি ছিলেন খ্রিষ্টান সমাজের অনেক মানুষ। সেই বিপদ থেকে ত্রাতারূপে হাজির হয়েছিলো ঢাকা ক্রেডিট। মাত্র ২৫ টাকা মূলধন ও ৫০ জন সদস্য নিয়ে শুরু করা ঢাকা ক্রেডিটের মাধ্যমে উক্ত সমিতির সদস্যদের জীবনমান পরিবর্তন হতে থাকে।

শিক্ষা: সব সমবায় সমিতি সরাসরি শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে না। তবে শিক্ষার জন্য প্রয়োজন অর্থের। সমবায় সমিতিগুলো থেকে উচ্চশিক্ষা, বিদেশে শিক্ষা ও পেশাগত শিক্ষা নিতে প্রয়োজন হয় অর্থের। সেই অর্থের যোগন দিয়ে থাকে সমবায় সমিতি। যুবারা ঋণ নিয়ে উচ্চশিক্ষা নিচ্ছেন। উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে ভালো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন, কেউ করছেন ব্যবসা। সমবায় সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে যুবারা বিদেশে গিয়ে পড়াশোনা করছেন। বিদেশ থেকে রেমিটেন্স পাঠাচ্ছেন তাঁদের অনেকে। সহায়তা করছেন তাঁদের পরিবারকে। সমবায় সমিতি থেকে পেশাগত শিক্ষা নিয়ে, দক্ষতা অর্জন করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। নার্সিং ট্রেনিং, এমবিএ, ফটোগ্রাফি, ক্যাটারিংসহ বিভিন্ন কোর্সের জন্য ঋণ পাওয়া যায় সমবায় সমিতিগুলো থেকে এমন কি উচ্চতর ডিগ্রি পি.এইচ.ডি করার জন্য অনেকে ঋণ নিচ্ছেন। এ ছাড়াও সমবায় সমিতিগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ডোনেশন করাসহ স্কুল-কলেজ সংস্কারের জন্য অর্থ দিয়ে অনেক সময় সহায়তা করে থাকে।

বাসস্থান: এক সময় মানুষের বাড়ি ছিল টিনের। এখন তা হয়েছে ইটের। অনেকে বহুতল ভবনও করছেন। তবে এই নির্মাণ কাজ বেশির ভাগ মানুষই নিজের জমা করা টাকা দিয়ে বাড়ি নির্মাণ করা সম্ভব হয় না। বাড়ি নির্মাণ করেন সমবায় সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে। শুধু বাড়ি নির্মাণ নয়, শহরের বসবাসকারীরা সাধ্যের মধ্যে কিস্তিতে ফ্ল্যাটও কিনছেন উল্লেখযোগ্য মানুষ। সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে সেই অর্থের সংস্থান করছেন সদস্যরা।

চিকিৎসা: সুখ, দুঃখ, হাসি-কান্না নিয়েই জীবন। ষড় ঋতুর মতো মানুষের জীবনে পরিবর্তন আসে। হতে হয় অসুস্থ। অসুস্থ হলে বড় অপারেশন বা অন্যান্য চিকিৎসারর খরচের জন্য প্রয়োজন পড়ে অনেকে টাকার। সেই ক্ষেত্রে সমিতির সদস্যরা এই অর্থের সংকট কাটাতে দারস্ত হন সমবায় সমিতির নিকট। সেখান থেকে ঋণ নিয়ে নিজের চিকিৎসা খরচ বা স্বজনের চিকিৎসা খরচ মেটান। তাছাড়া অনেক সমিতিতে স্বাস্থ্য বীমা থাকায় সেই বীমার টাকা দিয়ে নির্দিষ্ট রোগের চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ করেন।

বিবাহ ও অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠান: সন্তানের বিবাহ বা নিজেও বিয়ের খরচের অর্থ সংস্থান করা হচ্ছে সমবায় থেকে। শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ সমবায় থেকে ঋণ করে বিয়ে করছেন। এখানে বলা বাহুল্য যে, বিয়ের জন্য অতিরিক্ত ঋণ করে ঋণ গ্রস্ত হচ্ছেন অনেকে। তাই বিয়ে যেহেতু অনুৎপাদনশীল খাত তাই সামর্থ্য অনুসারে বিয়ের জন্য ঋণ করা উচিত বলে মনে করি। বিয়ে ছাড়াও বিবাহের জুবিলি, শ্রাদ্ধসহ অন্যান্য সামাজিক কাজে ঋণ নিয়ে অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয়। কোন কোন সমিতিতে উৎসব ও বিবাহ সঞ্চয় চালু রয়েছে। এই প্রকল্পে জমানো টাকা দিয়েও অনেকে বিবাহসহ অন্যান্য উৎসব পালন করে।

দুর্যোগ মোকাবেলা: প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে-কয়ে আসে না। করোনাভাইরাস-এর কথা এক বছর আগেও আমরা জানতাম না। এই ভাইরাসের ফলে গোটা বিশ^ এখন সম্মুখীন স্বাস্থ্য যুদ্ধে। করোনার কারণে হাজার হাজার মানুষ কর্মসংস্থান হারিয়ে বেকার হয়েছেন। কারো কমে গেছে আয়। দুঃসময়ে দেশের সমবায় সমিতিগুলো সদস্যদের পাশে দাঁড়িয়েছে। চাল, ডাল, তেলসহ কোন কোন সমিতি নগদ অর্থ দিয়ে নিজেরা বা অন্য কোন সংগঠনের মাধ্যমে করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে।

মান্ডলিক কাজে অংশগ্রহণ: খ্রিষ্টয় সমাজে সমবায়ের যে মহীরূহ বৃক্ষ তার বীজ কিন্তু খ্রিষ্টমন্ডলীর এক ধর্মগুরুই এক সময় বপন করেছিলেন। ঢাকার আর্চবিশপ লরেন্স লিও গ্রেনার আমেরিকান মিশনারি ফাদার চালর্স যোসেফ ইয়াং, সিএসসি’কে কানাডা পাঠিয়েছিলেন সমবায়ের ওপর পড়াশোনা করার জন্য। ফাদার চার্লস ফিরে এসে সমবায় আন্দোলন শুরু করেন। ওপরে এই বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। আর্চবিশপ লরেন্স লিও গ্রেনার চিন্তার ফসল হচ্ছে আজকের সমবায় সমিতিগুলো। এখন সমিতিগুলোর নগদ অর্থ ও সম্পদের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় খ্রিষ্টমন্ডলীর কর্মকান্ডে সমবায় সমিতিগুলো অংশ নিচ্ছে। যেমন আর্চবিশপ ও বিশপ অধিষ্ঠান, ফাদার-সিস্টার-ব্রাদারদের অভিষেকের জন্য অনুদান প্রদান। গির্জা নির্মাণ বা মেরামত, কবরস্থানের জন্য জমি ক্রয় বা মেরামতসহ বিভিন্ন মান্ডলিক কাজে সমবায় সমিতিগুলো উদারভাবে এগিয়ে আসছে, যা খুবই ইতিবাচক।

নেতৃত্বের বিকাশ: ঢাকা ধর্মপ্রদেশে প্রায় প্রতিটি মিশনেই রয়েছে যুব সমিতি। এই যুব সমিতি গুলির নেতৃত্বে ও সাংস্কৃতিক বিকাশে ক্রেডিট ইউনিয়নগুলি সরাসরি অর্থ সহায়তা ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে থাকে। এই সমবায় প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার পাশাপাশি খ্রিষ্টীয় সমাজে বিকাশ ঘটেছে নেতৃত্বের। সমিতিগুলোর কর্মকান্ড পরিচালনায় বিকাশ ঘটেছে নেতৃত্বে। সমাজের উত্তম নেতারাই সমিতিগুলোর হাল ধরে সমাজের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটাতে সাহায্য করছে। এই সমিতিগুলোতে নেতৃত্ব চর্চার ফলে এক সময় সমবায়ী নেতারাই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অন্যান্য সংগঠনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন দক্ষতার সাথে।

জমি ক্রয়: জমি ক্রয় বা মাটি ক্রয়ের মতো বড় বিনিয়োগ আর কী হতে পারে? অনেকে নিজের নামে জমি কিনে সেখানে করছেন স্বপ্নের বাড়ি, খামার বা পুকুর। সমবায় সমিতি থেকে টাকা নিয়েই অর্থের সংস্থান করছেন সদস্যরা। খ্রিষ্টান সমাজের বেশির ভাগ মানুষই ঋণ নিয়ে তারপর জমি কিনে থাকে। গর্বিত হন নিজে জমি কিনে।

অভিবাসনে সহায়তা: দেশের প্রায় এক কোটি মানুষ উন্নত দেশগুলোতে বসবাস করেন। অনেকে অস্থায়ীভাবে চাকরির জন্য, অনেকে স্থায়ীভাবে ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডা, মিডিল ইস্টসহ বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। তাদের সেসব দেশে যাওয়ার টাকার সংস্থানও হয়ে থাকে ক্রেডিট ইউনিয়ন থেকে। একজন প্রথমে বিদেশে গিয়ে তাঁর অন্য আত্মীয়-স্বজনদেরও সে দেশে নিয়ে যেতে যাহায্য করছে। এভাবে একটি প্রজন্ম উন্নতির দিকে ধাবিত হচ্ছে।

বিবাহিত জীবনে সংশোধনে সহায়তা: খ্রিষ্টান সমাজে বিবাহ বিচ্ছেদ নাই। তবে রয়েছে বিবাহ বাতিল। সামাজিক সমস্যা বিবাহের বিচ্ছেদ বা দাম্পত্য সমস্যা নিরসনে কিছুটা ভূমিকা পালন করে সমবায় সমিতি। কাউন্সিলিং করার মাধ্যমে দম্পত্তিদের বুঝানো হয় বিবাহ বিচ্ছেদের নেতিবাচক প্রভাব। এছাড়া স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য জীবনে সমস্যা থাকলে তাদের সমিতি থেকে ঋণ পেতে সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়। এইসব সমস্যার সমাধান পেতে অনেক সমস্যাগ্রস্ত দম্পতি পুনরায় এক সাথে সংসার শুরু করে।

নেটওয়াকিং: আমেরিকার বিখ্যাত লেখক ব্যবসায়ী ও লেখক রবার্ট টি কিয়োসাকি বলেন, ‘আমার ধনবান বাবা বলতেন, ‘বিশে^র সবচেয়ে ধনবান ব্যক্তি নেটওয়ার্ক খোঁজে ও গড়ে, বাকিরা শুধুই কাজ খোঁজে।’ এই লেখকের কথার মধ্যে দিয়ে বুঝা যায়, কাজ খোঁজার চেয়ে নেওয়াকিং করাটা কতটা গুরুত্¦পূর্ণ। সমবায় প্রতিষ্ঠানগুলো এই নেটওয়ার্কিং করতে খুব সহায়তা করে। সদস্যরা সমিতির অফিসে যান, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে নানা পেশাজীবী মানুষের সংস্পর্শে আসার সুযোগ পান ও নিজেরা পত্যেক্ষ ও পরোক্ষভাবে লাভবান হন।

ওপরের বিষয়গুলো মোটাদাগে উল্লেখ করা হলো। এ ছাড়াও সমবায় সমিতির মাধ্যমে নারী ক্ষমাতায়ন, প্রতিভা বিকাশ, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কাজে অংশগ্রহণসহ বিভিন্নভাবে সমবায় সমিতিগুলো অবদান রেখে যাচ্ছে।

শেষ কথা: আনন্দের বিষয়, খ্রিষ্টানদের দ্বারা পরিচালিত এই বছর ঢাকা আর্চডায়োসিসের কমপক্ষে সাতটি সমবায় সমিতি জাতীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সরকারিভাবে পুরস্কার লাভ করেছে। সমিতিগুলো হলো দি মেট্রোপলিটান খ্রীষ্টান হাউজিং সোসাইটি লি:, তুমিলিয়া খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি:, হারবাদাই খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি:, ধরেন্ডা খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি:, মঠবাড়ী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, রাঙ্গামাটিয়া খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি: ও পাগাড় খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি:। সমিতিগুলো দৃশ্যমানভাবে ভালো কাজ করছে বলেই কাজের ও সেবার স্বীকৃতি পেয়েছে।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান সমবায় সমিতিগুলোতে মূলধন ক্রমে বাড়ছে। এই অর্থ রক্ষা করা সমবায়ীদের দায়িত্ব। তাই সমিতির সদস্যদের উচিত, সমবায়ে যাঁরা নেতৃত্ব দিবেন, যোগ্য ও সৎ ব্যক্তিদের যেন তাঁরা নির্বাচিত করেন। নয়ত ভবিষ্যতে সমবায় প্রতিষ্ঠানগুলো টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।

সহায়ক তথ্য সুত্র:
১. ড. ফাদার লিটন হিউবার্ট গমেজ, সিএসসি, কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন
২. সুবাস সেলেষ্টিন রোজারিও, সমবায় ঋণদান সমিতি: সেবাকাজে আনন্দ ও বেদনা
৩. বরার্ট কি কিয়োসাকি, রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড
৪. কাল্ব

লেখক : প্রেসিডেন্ট, ঢাকা ক্রেডিট।