শিরোনাম :
তেজগাঁও চার্চে জাতির পিতার জন্মদিন পালন
বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশন এবং খ্রিস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্টের আয়োজন তেজগাঁও গির্জায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার কল্যাণ কামনায় প্রার্থনা ও কেক কাটার মধ্য দিয়ে ৯৯তম জন্মদিন পালন করা হয়।
রবিবার (১৭ মার্চ) সকাল ৯টায় তেজগাঁও গির্জার জাতির পিতার জন্মদিন উপলক্ষে তাঁর আত্মার চিরশান্তি কামনায় খ্রীষ্টযাগ উৎসর্গ করেন পাল-পুরোহিত কমল কোড়াইয়া।
খ্রীষ্টযাগে বাণী সহভাগিতায় পাল-পুরোহিত বলেন, ‘জাতিসংঘে প্রথম বাংলা ভাষায় ভাষণ প্রদান করেন শেখ মুজিবুর রহমান। আজ বাঙালি জাতি পৃথিবীর সর্বত্র বিচরণ করছে এবং বাংলা ভাষায় কথা বলছে বঙ্গবন্ধুর আত্মদানের কারণেই।’
ফাদার কমল জাতির পিতার ৯৯তম জন্মদিনে দেশকে ভালবাসার এবং নতুন মানুষ হবার শপথ গ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানানা।
খ্রীষ্টযাগের পরে জাতির পিতার জন্মদিন উপলক্ষে গির্জার বাইরে কেক কাটেন বাংলাদেশে খ্রীষ্টান এসোসিয়েশসের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও, পাল-পুরোহিত কমল কোড়াইয়া, অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়ে ঝর্ণা সরকার এমপি শিশুদের নিয়ে। এরপর তেজগাঁও ক্যাথলিক প্রাথমিক বিদ্যালয় চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
কেক কাটার পরে অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার এমপি বলেন, ‘জাতির পিতার আত্মার কল্যাণের জন্য প্রার্থনা করেছি এবং প্রধানমন্ত্রীর জন্য প্রার্থনা করবেন, তিনি যেন জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন এবং সোনার বাংলা গড়ে তুলতে পারেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নারী ক্ষমতায়ন এবং উন্নয়নের জন্য কাজ করছেন।
তিনি সকল নারীদের সমাজে নেতৃত্বে অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান সংরক্ষিত আসনে এমপি মনোনয়নের জন্য এবং খ্রীষ্টান সমাজের সকলকে ধন্যবাদ জানান তার পাশে থাকার জন্য।
বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট এবং খ্রিস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্টের সচিব নির্মল রোজারিও বলেন, ১৯২০ সালে আজকের দিনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহান নেতা জন্মগ্রহণ করেন টুঙ্গিপাড়ায়। বঙ্গবন্ধুর জন্মের মধ্যদিয়ে আমরা এই স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। তাঁর আন্দোলন, সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের কারণেই আজ আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারছি।
অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র মুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে ছিলেন বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন কিন্তু পূরণ করতে পারেননি। তাঁর সুযোগ্য কণ্যা শেখ হাসিনা অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত বাংলাদেশ গড়ো তোলার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। একদিন বাংলাদেশ ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত বাংলাদেশে পরিণত হবে।
প্রেসিডেন্ট রোজারিও নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ মসজিদে জঙ্গির দ্বারা হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, জঙ্গিদের কোন ধর্ম নেই। ধর্ম কখনোই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে আশ্রয় দেয় না। এই নিরীহ মানুষের হত্যা-কান্ডের বিচার চাই্।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন এক সাধারণ পরিবারে। তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ধানমন্ডির নিজ বাসভবনে হামলার স্বীকার হয়ে স্বপরিবারে নিহত হন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এবং শেখ রেহেনা দেশের বাইরে থাকের কারণে প্রাণে ঁেবচে যান।
আগামী ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী। গত বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছেন, ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত বছরটিকে পালন করা হবে ‘মুজিব বর্ষ’ হিসেবে। এর মধ্যে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীও থাকবে।
‘তিনি নেই, তাঁর স্বপ্নের স্বাধীন বাংলাদেশ আছে। আর আছে তাঁর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্রের আদর্শ, তাঁর লেখা বইগুলো।’
সকাল ৯টায় তেজগাঁও হলি রোজারি চার্চে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আত্মার মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনা করা হয়, ১০.৩০ মিনিটে জাতির জনকের জন্ম দিন উপলক্ষে শিশুদের নিয়ে কেক কাটার পরই তেজগাঁও ক্যাথলিক প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে চারটি বিভাগে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। মোট ১৩৩জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশে খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ক্লেমেন্ট ঢালী, ভিক্টর রে, জন অরুনেশ বাড়ৈ, মলয় নাথ, সেবাষ্টিন বাড়ৈ, আন্তন হালদার, জেমস সুব্রত হালদার, যোসেফ ডি’সরকার, থিউফিল রোজারিও, ডানিয়েল শিকদার, ঢাকা ক্রেডিটের বোর্ড অব ডিরেক্টর রতন পিটার কোড়াইয়াসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের সংগ্রামী মহাসচিব হেমন্ত আই কোড়াইয়া।