শিরোনাম :
দি খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিঃ, ঢাকা স্বাস্থ্য নিরাপত্তা প্রকল্প নীতিমালা (সংশোধিত) (১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ খ্রীষ্টাব্দ থেকে কার্যকর)
০১। ভূমিকা ঃ
বিগত ১৩ জানুয়ারী, ২০১২ খ্রীষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত ৫১তম বার্ষিক সাধারণ সভায় উপস্থিত সদস্য-সদস্যাদের মাধ্যমে উপস্থাপিত সমিতির সদস্য-সদস্যাদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এবং অসুস্থ্যকালিন সময়ে চিকিৎসার জন্য নগদ অর্থের সংস্থানের জন্য সর্বসম্মতিক্রমে “স্বাস্থ্য নিরাপত্তা প্রকল্প” নামে একটি প্রকল্প করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় যা ৫৩তম বার্ষিক সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সকল সদস্য-সদস্যাদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়।
০২। উদ্দেশ্য ঃ
ক) অসুস্থ্যকালিন সময়ে চিকিৎসার জন্য নগদ অর্থের সংস্থান এবং সদস্য-সদস্যাদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ।
খ) সদস্য-সদস্যাদের স্বাস্থ্যগত সেবা প্রদানের মাধ্যমে সুখী ও সমৃদ্ধ জীবন গঠন করা।
গ) অসুস্থ্যকালিন সময়ে চিকিৎসার অর্থের জন্য অন্যের উপর থেকে নির্ভরশীলতা হ্রাস, আর্থিকভাবে নিজে স্বাবলম্বী থাকা এবং মানসিক শক্তি যোগানো।
৩। হিসাব খোলার যোগ্যতা ও নিয়মাবলী ঃ
১. হিসাব খোলার জন্য অবশ্যই সঞ্চয়ী হিসাবধারী হতে হবে এবং নিয়মিত মাসিক জমা থাকতে হবে।
২. প্রাপ্ত বয়স্ক সদস্য-সদস্যা এবং শিশুদের পক্ষে অভিভাবকগণ প্রকল্পের আওতায় নির্ধারিত আবেদন পত্রের মাধ্যমে হিসাব খুলতে পারবেন।
৩. প্রাথমিক সদস্যপদ গ্রহণের সময় সুস্থ্য ও স্বাভাবিক ব্যক্তিই এই প্রকল্পের সদস্য-সদস্যা হতে পারবেন।
৪. ইউনিয়ন কর্তৃক সরবরাহকৃত নির্দিষ্ট আবেদন পত্রের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।
৫. পাসপোর্ট সাইজ এর দুই কপি ছবি প্রদান করতে হবে।
৬. একজন সদস্য একটি হিসাব খোলতে পারবেন।
৭. হিসাব খোলার সময় যাদের বয়স ৪৫ বছরের উর্ধ্বে তাদের অবশ্যই স্বাস্থ্য সনদ (ঐবধষঃয ঈবৎঃরভরপধঃব) প্রদান করতে হবে এবং ভর্তি ফরমের চেকলিস্ট সমিতির ডাক্তার কর্তৃক যাচাই করতে হবে।
৪। প্রিমিয়ামের প্রকার/প্রকল্পে জমার পরিমাণ ঃ
(ক) ২৫ বছরের নীচে ঃ ৫০, ১০০ এবং ১৫০ টাকা।
(খ) ২৫-৪৫ বছর পর্যন্ত ঃ ৫০, ১০০, ১৫০, ২০০ এবং ৩০০ টাকা ।
(গ) ৪৬-৬৫ বছর পর্যন্ত ঃ ১০০, ২০০, ৩০০, ৪০০ এবং ৬০০ টাকা।
( উল্লেখ্য যে, ৭০ বৎসর পর্যন্তই পলিসি কার্যকর থাকবে।)
০৫। হিসাবের মেয়াদ ঃ
প্রকল্পের মেয়াদ হবে ৫ বছর। ৫ বছর পর নবায়ন করতে হবে। মেয়াদ পূর্তির ১৫ দিনের মধ্যে লিখিত আবেদনের মাধ্যমে পরবর্তী ৫ বছরের জন্য নবায়ন করতে হবে।
৬। প্রকল্পের সুবিধা ঃ
নিম্নে উল্লেখিত রোগের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করলে প্রকল্পের সুবিধা প্রদান করা হবে।
ক) মেজর অপারেশন বা মেজর ডিজিস এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্যঃ
১) হার্ট এ্যাটাক এর চিকিৎসা, ২) ক্যান্সার এর সার্জারী চিকিৎসা, ৩) ধমনী আক্রান্ত রোগ এর চিকিৎসা, ৪) স্ট্রোক ও পক্ষাঘাত এর চিকিৎসা
৫) একিউট রিনাল ফেইলর এর চিকিৎসা, ৬) মারাত্মক পোড়া (প্লাষ্টিক সার্জারী ব্যতীত), ৭) গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গসংস্থাপন, ৮) পিত্তথলির পাথর অপারেশন, ৯) অগ্নাশয়ের পাথর অপারেশন, ১০) এপেনডিক্স অপারেশন, ১১) জরায়ুর টিউমার অপারেশন, ১২) মেরুদন্ডের অপারেশন, ১৩) কিডনির পাথর/টিউমার অপারেশন, ১৪) থাইরয়েড অপারেশন ও ১৫) হার্টের বাইপাস অপারেশন।
খ) রোগ নির্ণয়ের জন্য পরীক্ষা কিন্তু চিকিৎসা গ্রহণ করে নাই সেই ক্ষেত্রে কোন ধরনের সুবিধা প্রাপ্য হবেন না।
গ) এনজিওগ্রাম, কেমোথেরাপী, রেডিও থেরাপী জনিত ক্যান্সার চিকিৎসায় কোন সুবিধা পাবেন না।
মাইনর অপারেশন বা মাইনর ডিজিস এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্যঃ
ক) নিম্ন লিখিত মাইনর অপারেশনের ক্ষেত্রে বয়স অনুযায়ী ৩০% সুবিধা প্রাপ্য হবেন।
১) পাইলস এর অপারেশন, ২) হার্নিয়া অপারেশন, ৩) চোখের ছানি অপারেশন, ৪) টনসিল অপারেশন, ৫) হিমোরয়েড অপারেশন, ৬) কানের পর্দার অপারেশন ও ৭) ফিষ্টুলা অপারেশন।
খ) Local anaesthesia দিয়া যে কোন ধরণের সার্জারী/অপারেশন মাইনর হিসেবে বিবেচিত হবে।
গ) ডেলিভারীর (নরমাল এবং সিজারিয়ান) জন্য কোন ধরণের সুবিধা বিবেচিত হবে না, তবে হাসপাতালে ভর্তি থাকাবস্থায় মা ও বাচ্চার প্রাণ নাশের আশংকা থাকলে বিবেচিত হতে পারে।
ঘ) উপরে উল্লেখিত বিষয়ে বোর্ডের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হিসেবে বিবেচিত হবে।
নিম্নোক্ত প্রিমিয়াম ‘ক’ ও ‘খ’ প্রকল্পের জন্য প্রযোজ্য
ক্রমিক নং মাসিক প্রিমিয়াম সুবিধা
০১। ৫০ টাকা হসপিটালে প্রকৃত খরচ (Actual Cost) অথবা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা
০২। ১০০ টাকা হসপিটালে প্রকৃত খরচ (Actual Cost) অথবা সর্বোচ্চ ১ লক্ষ টাকা
০৩। ১৫০ টাকা হসপিটালে প্রকৃত খরচ (Actual Cost) অথবা সর্বোচ্চ ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা
০৪। ২০০ টাকা হসপিটালে প্রকৃত খরচ (Actual Cost) অথবা সর্বোচ্চ ২ লক্ষ টাকা
০৫। ৩০০ টাকা হসপিটালে প্রকৃত খরচ (Actual Cost) অথবা সর্বোচ্চ ৩ লক্ষ টাকা
নিম্নোক্ত প্রিমিয়াম ‘গ’ প্রকল্পের জন্য প্রযোজ্য
ক্রমিক নং মাসিক প্রিমিয়াম সুবিধা
০১। ১০০ টাকা হসপিটালে প্রকৃত খরচ (Actual Cost) অথবা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা
০২। ২০০ টাকা হসপিটালে প্রকৃত খরচ (Actual Cost) অথবা সর্বোচ্চ ১ লক্ষ টাকা
০৩। ৩০০ টাকা হসপিটালে প্রকৃত খরচ (Actual Cost) অথবা সর্বোচ্চ ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা
০৪। ৪০০ টাকা হসপিটালে প্রকৃত খরচ (Actual Cost) অথবা সর্বোচ্চ ২ লক্ষ টাকা
০৫। ৬০০ টাকা হসপিটালে প্রকৃত খরচ (Actual Cost) অথবা সর্বোচ্চ ৩ লক্ষ টাকা
এই প্রকল্পে অর্ন্তভূক্ত হওয়ার ১২ মাস পর থেকে একজন সদস্য প্রকল্পের সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
স্কীমের মেয়াদ হবে ৫ বছর।
প্রিমিয়াম জমা প্রদানে ব্যর্থ হয়ে হসপিটালে ভর্তি হলে কোন সুবিধা প্রদান করা হবে না।
যেকোন একটি হাসপাতালের বিল এবং হাসপাতালে ভতির্ থাকাকালীন সময়ে ঔষধের বিল গ্রহণযোগ্য হবে। তবে চিকিৎসার ধরন অনুযায়ী অন্য হাসপাতালের বিল বিবেচিত হতে পারে।
চিকিৎসা গ্রহণের সর্বোচ্চ ৩ মাসের মধ্যে আবেদন করতে হবে। অন্যথায় আবেদনপত্র গ্্রহণযোগ্য হবে না।
সুবিধা গ্রহণের পর পলিসিটি বন্ধ হয়ে যাবে এবং তাকে আরেকটি পলিসি খুলতে হবে। তবে একই রোগের জন্য কোন সুবিধা দেওয়া হবে না।
দ্বিতীয়বার পলিসির সদস্য-সদস্যা হওয়ার জন্য সমিতির ডাক্তার কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে।
দ্বিতীয়বার পলিসির মূল্য হবে কমপক্ষে ১০০ টাকা। (নরমালের দ্বিগুণ)
দ্বিতীয়বার পলিসির সুবিধা হবে ৫০%।
দ্বিতীয়বার পলিসিতে অর্ন্ত ভুক্ত হওয়ার ১২ মাস পর থেকে প্রকল্পের সুবিধা প্রাপ্য হবেন।
সুবিধা গ্রহণের সময় পলিসি খোলার তারিখ অনুযায়ী বয়স বিবেচিত হবে এবং সুবিধা প্রদান করা হবে।
ইতিপূর্বে যারা সুবিধা পেয়ে পলিসি চালাচ্ছেন তারা এই নীতিমালার আওতায় ৫০% হারে সুবিধা প্রাপ্য হবেন।
স্বাস্থ্য নিরাপত্তা প্রকল্পের পলিসিতে উল্লেখিত রোগের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ৭২ ঘন্টার মধ্যে আবেদনকারী /আত্মীয়কে সমিতির ফোন নম্বরে ফোন করে প্রতিষ্ঠানকে অবহিত করতে হবে।
৭। সেবা গ্রহণের জন্য নির্ধারিত হাসপাতাল ঃ
সরকার কর্তৃক নিবন্ধনকৃত প্রতিষ্ঠিত হাসপাতাল।
দেশের বাহিরে চিকিৎসা করালে অতিরিক্ত কাগজপত্র হিসাবে ভিসা ও পাসপোর্টের ফটোকপি জমা দিতে হবে।
০৮। টাকা জমার নিয়ম ঃ
১. মাসিক, ত্রৈমাসিক, অর্ধ বার্ষিক, বার্ষিক হিসাবে জমা দেয়া যাবে।
৯। জরিমানা ঃ
১. জমা প্রদানে ব্যর্থ হলে চলতি মাসসহ বকেয়া মাসসমূহের প্রিমিয়ামের সাথে বকেয়া প্রিমিয়ামের ২০% টাকা জরিমানা হিসাবে প্রদান করে নিয়মিত হতে হবে।
২. নবায়নের ৮ মাস নিয়মিত জমাদানের পর সুবিধা প্রাপ্য হবেন।
১০। বোনাস প্রদান ঃ
মেয়াদ পূর্তিতে প্রকল্পে প্রদানকৃত প্রিমিয়ামের অর্থ প্রদান করা হবে না। তবে, প্রকল্প হতে কোন প্রকার সুবিধা গ্রহণ করা না হলে প্রদানকৃত মোট প্রিমিয়ারের উপর ৪০% বোনাস প্রদান করা হবে এবং এই বোনাসের অর্থ পরবর্তী মেয়াদের জন্য প্রদেয় প্রিমিয়ারের সহিত সমন্বয় করা হবে। সুবিধা গ্রহণ করে থাকলে কোন বোনাস প্রদান করা হবে না।
১১। প্রকল্প বন্ধ ঃ
৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত সদস্য-সদস্যাদের ক্ষেত্রে এই হিসাব বন্ধ করার কোন সুযোগ নেই তবে সদস্যপদ প্রত্যাহার জনিত কারণে সদস্যপদ বন্ধ করার প্রয়োজন হলে নি¤œলিখিত সুবিধা প্রাপ্য হবেন-
১. মেয়াদ পূর্তির পূর্বে ৬ নং ধারা অনুসারে সুবিধা গ্রহণ করা না হলে ২ বছরের নীচে কোন সুবিধা প্রাপ্য হবেন না এবং ২ বছরের উপরে মোট প্রদানকৃত প্রিমিয়ামের ২৫% প্রদান করা হবে ও মেয়াদ পূর্তিতে মোট প্রদানকৃত প্রিমিয়ামের ৪০% প্রদান করা হবে।
২. জমাকৃত প্রিমিয়ামের উপর কোন সুদ প্রদান করা হবে না।
৩. মৃত ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রদানকৃত প্রিমিয়ামের ১০০% প্রদান করা হবে তার দেওয়া নমিনী অথবা পরিবারের সদস্যকে।
১২। উপরোক্ত নীতিমালা দি খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি:, ঢাকা এর নির্বাচিত পরিচালক মন্ডলী কর্তৃক প্রণীত বিধায় ভবিষ্যতে কোন পরিবর্তন/পরিবর্ধন/সংযোজন/বিয়োজন সম্পূর্ণ ইউনিয়নের এখতিয়ার ভূক্ত।
(নীতিমালাটি সমিতির স্বাস্থ্য নিরাপত্তা প্রকল্প কমিটির সুপারিশক্রমে ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ খ্রীষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত ১২তম যৌথ সভায় গৃহীত ও অনুমোদিত এবং ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ খ্রীষ্টাব্দ থেকে কার্যকর)।