শিরোনাম :
নুসরাত হত্যায় ১৬ আসামির সবার মৃত্যুদণ্ড
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফেনীর সোনাগাজীতে আলোচিত নুসরাত হত্যা মামলায় ১৬জন আসামীর সবাইকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। আসামীদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে জানায় আদালত। এই রায় ঘোষণা করেছে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল।
বিচারক মামুনুর রশীদ এই রায় ঘোষণার আগে আসামীরা ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছে বলে জানান।
মামলার সাত মাসেরও কম সময়ের মধ্যে, ৬১ কার্যদিবস শুনানির পর এ রায় ঘোষণা করা হল।
বেলা ১১টার দিকে আসামীদের কাঠগড়ায় তোলার পর বিচারিক কাজ শুরু হয়।
আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের রায় ঘোষণাকে ঘিরে সোনাগাজী ও ফেনী সদর উপজেলায় কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে নুসরাত শ্লীলতাহানির অভিযোগ আনলে তার মা শিরিনা আক্তার বাদী হয়ে গত ২৭শে মার্চ সোনাগাজী থানায় যৌন হয়রানির মামলা করেন।
সেই মামলায় অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারপর থেকে মামলা তুলে নিতে নুসরাত এবং তার পরিবারের ওপর নানাভাবে চাপ আসতে থাকে।
৬ই এপ্রিল নুসরাত, মাদ্রাসা কেন্দ্রে আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে তাকে কৌশলে মাদ্রাসার প্রশাসনিক ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়।
পরদিন নুসরাত ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসকদের কাছে দেয়া জবানবন্দিতে অধ্যক্ষ সিরাজের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।
১০ই এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নুসরাত।
নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ই এপ্রিল সোনাগাজী থানায় মামলা করলেও পরে সেটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়।
নুসরাত হত্যার মামলটি প্রথমে সোনাগাজী থানার পরিদর্শক কামাল হোসেন তদন্ত করলেও; ওই থানার ওসিসহ পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নুসরাত হত্যাকাণ্ডের সময় গাফিলতির অভিযোগ ওঠায় তদন্তভার নেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই)।
গত ২৯শে মে পিবিআই ৩৩ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষে মাদ্রাসার অধ্যক্ষসহ ১৬ জনকে আসামী করে মামলার ৮০৮ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেট আদালতে দাখিল করে।
মামলায় গ্রেফতার ২১জন আসামীর মধ্যে ৫ জনকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
তার পরের মাসে ২০শে জুন অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ১৬ আসামির বিচারকাজ।
আসামীদের মধ্যে ১২জন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। ৯২ জন সাক্ষীর মধ্যে ৮৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়ার পর গত ৩০ সেপ্টেম্বর রায়ের দিন ঠিক করে আদালত।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৬জন আসামী হলেন: উম্মে সুলতানা ওরফে পপি (১৯)।
আবদুর রহিম শরীফ (২০)।
ইফতেখার উদ্দিন রানা (২২)।
ইমরান হোসেন ওরফে মামুন (২২)।
রুহুল আমিন (৫৫)।
মহিউদ্দিন শাকিল (২০)।
মোহাম্মদ শামীম (২০)।
সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা। (৫৭)
নুর উদ্দিন (২০)।
শাহাদাত হোসেন শামীম (২০)।
মাকসুদ আলম ওরফে মকসুদ কাউন্সিলর (৫০)।
সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের (২১)।
জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন (১৯)।
হাফেজ আব্দুল কাদের (২৫)।
আবছার উদ্দিন (৩৩)।
কামরুন নাহার মনি (১৯)।