ঢাকা ,
বার : সোমবার
তারিখ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলা : ৯ পৌষ ১৪৩১
Dcnewsbd Facebook
Dcnewsbd Twitter

শিরোনাম :

প্রথম পাতা Uncategorized পদ্মা বহুমুখী সেতুর শুভ উদ্বোধনে খ্রিষ্টানদের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন ও...

পদ্মা বহুমুখী সেতুর শুভ উদ্বোধনে খ্রিষ্টানদের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা

0
256

ডিসিনিউজ ।। ঢাকা

পদ্মা বহুমুখী সেতুর শুভ উদ্বোধনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন খ্রিষ্টান নেতৃবৃন্দ।

২৫ জুন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বপ্নের পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন করেন। পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেদের সক্ষমতার প্রতীক পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন।

সেতু উদ্বোধনে উচ্ছ্বাসে ভাসছেন দুই পারের বাসিন্দারা। সেতু চালুর মধ্য দিয়ে খুলে গেল দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অপরাপর অংশের সংযোগ, যোগাযোগ এবং সম্ভাবনার অনন্ত দুয়ার।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে মাওয়া থেকে জাজিরা—দুই প্রান্তেই আয়োজন করা হয় বিশেষ অনুষ্ঠানের। মাওয়া প্রান্তের সুধী সমাবেশ দিয়ে শুরু, মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা এবং শিবচরের কাঁঠালবাড়িতে জনসমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয় উদ্বোধনী পর্ব। সমাবেশে কয়েক লাখ মানুষ অংশ নেন।

পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে মাওয়া প্রান্তে আয়োজন করা হয় সুধী সমাবেশের। সকাল নয়টার আগে থেকেই সুধী সমাবেশে আমন্ত্রিত অতিথিরা মাওয়া প্রান্তের অনুষ্ঠানস্থলে আসতে শুরু করেন। ১০টার আগেই আসন গ্রহণ করেন অতিথিরা। সুধী সমাবেশে সরকারের মন্ত্রী, স্পিকার, রাজনীতিবিদ, কূটনৈতিক, শিক্ষাবিদসহ বিশিষ্টজনেরা অংশ নেন। ১০টায় অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সুধী সমাবেশের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেক বাধাবিপত্তি উপেক্ষা করে, ষড়যন্ত্রের জাল ছিঁড়ে আজ পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হয়েছে। এই সেতু শুধু সেতু নয়, শুধু ইট-সিমেন্ট-কংক্রিটের কাঠামো নয়, এই সেতু আমাদের অহংকার, আমাদের গর্ব। সক্ষমতার, মর্যাদার প্রতীক।’ তিনি পাশে থাকায় বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের ঐতিহাসিক দিনে যার যার অবস্থান থেকে দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করার শপথ নেওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

স্মারক ডাকটিকিট ও নোট উন্মোচন

দেশের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত পদ্মা সেতু প্রকল্পের জমকালো উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী স্মারক ডাকটিকিট, স্যুভেনির শিট, উদ্বোধনী খাম এবং বিশেষ সিলমোহর উন্মোচন করেন। এ সময় মঞ্চে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, ডাকসচিব খলিলুর রহমান এবং ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফয়জুল আজিম উপস্থিত ছিলেন। এরপর পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংকের ১০০ টাকার বিশেষ স্মারক নোট উন্মোচন করেন। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মঞ্চে সেতু–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তোলেন।পদ্মা সেতু উদ্বোধন, প্রথম টোল দিলেন প্রধানমন্ত্রী

সুধী সমাবেশস্থল থেকে প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর মাওয়া প্রান্তের সেতুর ফলকের স্থানে এগোতে থাকে। প্রথম যাত্রী হিসেবে টোল দিয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেলা ১১টা ৪৮ মিনিটে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে প্রধানমন্ত্রী নিজ হাতে টোল দেন। এরপর তাঁর গাড়িবহর সেতু উদ্বোধনের জন্য ফলকের স্থানে যায়।

প্রধানমন্ত্রীসহ অতিথিরা গাড়ি থেকে নামেন। সেখানে প্রথমে মোনাজাত করা হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম মোনাজাত পরিচালনা করেন। দুপুর ১২টার একটু আগে সুইচ টিপে সেতুর ফলক উন্মোচন করেন তিনি। সেতু উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মশিউর রহমান, সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, সাবেক সেতুসচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া প্রমুখ। প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদও এ সময় সঙ্গে ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী সেতুর ফলক উন্মোচনের পাশাপাশি ফলকের স্থানে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর ম্যুরাল উদ্বোধন করেন। এ সময় আকাশে রঙিন ধোঁয়া ওড়ানো হয়। প্রধানমন্ত্রী নিজে ‘জয় বাংলা’, ‘জয় বঙ্গবন্ধু’স্লোগান দেন। উপস্থিত সবাই হাততালি দেন।

উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী গাড়িবহর নিয়ে মাওয়া পয়েন্ট থেকে শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। এ সময় মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সঙ্গে ছিলেন। কাল রোববার সকাল থেকে টোল দিয়ে সাধারণ যানবাহন চলাচল শুরু করবে সেতু দিয়ে।

সেতুতে নামলেন প্রধানমন্ত্রী এবং পাড়ি দিলেন

জাজিরার দিকে যাওয়ার পথে দুপুর ১২টা ১২ মিনিটের দিকে গাড়ি থামিয়ে নেমে যান প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন পদ্মা সেতু অতিক্রম করেন, তখন বিমানবাহিনীর ছয়টি হেলিকপ্টার তাঁকে অভিবাদন জানায়। পদ্মা সেতুতে দাঁড়িয়ে তিনি বিমানবাহিনীর মহড়া দেখেন। এরপর দুপুর ১২টা ২৬ মিনিটের দিকে তিনি আবার গাড়িতে ওঠেন। সেখান থেকে তিনি জাজিরা প্রান্তে পৌঁছান। জাজিরা প্রান্তেও দুপুর ১২টা ৩৮ মিনিটের দিকে ফলক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে সেখানে মোনাজাত হয়।

মাওয়া প্রান্তে উদ্বোধনের পর পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে জাজিরা প্রান্তে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রধানমন্ত্রী জাজিরা প্রান্তে সেতুর ফলক উন্মোচন করেন। প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জাজিরা প্রান্তে পৌঁছায়। সেখানে মোনাজাত হয়। এরপর ‘পিতা ও কন্যা থিম’–এর ম্যুরাল-২ ও সেতুর ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী।

এই দিনে দেশের উন্নয়নের মডেল সৃষ্টিতে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট ও আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক উপকমিটির সদস্য পংকজ গিলবার্ট কস্তা ও ঢাকা ক্রেডিটের সেক্রেটারি এবং বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল ইগ্নাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়া। তাঁরা এক যুক্ত বিবৃতিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানান। ‘অনেক ত্যাগ এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এই স্বপ্নের প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। আজকের এই অর্জন বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের মাথা উঁচুতে তুলে দিয়েছে। আমরা কৃতজ্ঞচিত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই ও শুভেচ্ছা জানাই’ বিবৃতিতে উল্লেখ করেন তারা।

অপরদিকে বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশন স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানায়। এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও ও সেক্রেটারি জেনারেল ইগ্নাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়া এক বিবৃতির মাধ্যমে এই শুভেচ্ছা জানান। তারা উল্লেখ করেন, ‘বহু প্রতিক্ষীত স্বপ্নের পদ্মা সেতু আজ সকালে উদ্বোধন করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা,এমপি। স্বপ্ন পূরণ হয়েছে কোটি মানুষের। আজকের এই ঐতিহাসিক ঘটনা দেশ ও বিশ্ববাসীকে অবাক করেছে। দেশবাসীর সাথে বাংলাদেশের খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ও আনন্দে উদ্বেলিত, উচ্ছ্বসিত। বাংলাদেশের খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশন এই অসামান্য অবদানের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, এমপিকে অভিনন্দন, শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।’

‘এই সেতু নিছক একটি সেতু নয়, এই সেতু বাঙ্গালী জাতির গর্ব , আত্মমর্যাদা, অহংকার ও সাফল্যের প্রতীক। এই সেতু আমাদের মর্যাদা বহুগুণে বৃদ্ধি করেছে। গোট দেশবাসীকে সংযুক্ত করেছে এই সেতু। এই সেতু কেবলমাত্র যোগাযোগের মাধ্যমই হবে না, অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে এই বহুমুখী সেতু বাংলাদেশকে বহুদূর এগিয়ে নিবে। এই সেতু দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করে সাফল্যের এক রুপকথা; অনন্য সৃষ্টিকর্ম’ বলেন তারা।

নেতৃবৃন্দ তাদের বিবৃতিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ছাড়াও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী জনাব ওবায়দুল কাদের এমপিসহ এই সেতু বাস্তবায়নে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দেশী-বিদেশী যারা দিন রাত পরিশ্রম করেছেন তাদেরকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।