শিরোনাম :
পরিবারে মা হলেন সন্তানদের আদর্শ
একজন মা তার সংসার, কর্মক্ষেত্র, স্বামী-সন্তান সবকিছুকেই খুব গুরুত্বের সাথে দেখেন। এরপরই তিনি হয়ে ওঠেন একজন আদর্শ বা সফল মা!
পাবনা জেলার দিপালী রড্রিক্স, তেমনি একজন আদর্শবান সফল মা। চার সন্তানের জননী তিনি। সাধু ফ্রান্সিস জেভিয়ার জুনিয়র হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে দীর্ঘ আটাশ বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন। পাশাপাশি করে যাচ্ছে সমাজ সেবার কাজ। ফৈলজানা মিশনের বিভিন্ন সেবামূলক সংগঠনের সাথে তিনি নিবিড়ভাবে জড়িত।
শিশুদের আধ্যাত্মিক, মানসিক, নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধ গঠনে তিনি ফৈলজানা শিশু মঙ্গল সংঘের মাধ্যমে শিশুদের নিয়ে কাজ করেন। কাজ করছেন ‘কর্মজীবী মহিলা সংগঠনের মহিলাদের নিয়ে। সম্প্রতি তিনি কথা বলেন ডিসিনিউজের সাথে।
স্বামী একজন সামান্য কৃষক। দুই ছেলে, দুই মেয়ে। বড় মেয়ে বন্যা কস্তা মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতাল থেকে নাসিং ডিপ্লোমা করে বর্তমানে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে কর্মরত। মেঝ ছেলে পীযূষ কস্তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে অনার্স মার্স্টাস শেষ করেছে। সেঝ মেয়ে মৌসুমী কস্তা ঢাকা তেজগাঁও কলেজ থেকে ম্যানেজমেন্ট অনার্স শেষ বর্ষে পড়াশুনা করছে। ছোট ছেলে প্রিন্স কস্তা সেন্ট যোসেফস্ স্কুল এন্ড কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি পরীক্ষা লিখছে।
দিপালী বলেন, পরিবার হলো একটি বীজতলা। এখানে যদি ভালো বীজ বপন করা হয় তাহলেই ভালো ফল আশা করা যায়। পরিবারে মা হলেন তার সন্তানদের আর্দশ। মাকে হতে হবে আর্দশবান, ন্যায়পরায়ন, সৎবাদী ও প্রার্থনাশীল। একজন মায়ের মধ্যে এসব মূল্যবোধ না থাকলে মা আদর্শ পরিবার গঠনে ব্যর্থ হয়।যখন একজন মায়ের মধ্যে এসব মূল্যবোধ থাকবে তখন মা পরিবারকে মূল্যবোধের আর্দশে পরিচালনা করতে পারবে। পরিবার গঠনে মায়ের ভূমিকা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
দিপালী ডিসিনিউজকে বলেন, পরিবার হলো শিশুর প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখানে শিশু যা শিখে তাই তার পরবর্তী জীবনে কথায়, কাজে প্রকাশ পায়। এ বিদ্যালয়ে মা-ই হলেন শিশুর উত্তম শিক্ষিকা। শিশুরা মায়ের কাছে কথা বলা শিখে, মাকে অনুকরণ করে। এভাবে মা যদি শিশুকে ভালো শিক্ষা দেন তবে শিশু ভালো কিছু শিখবে। তাই মাকে প্রথমে আর্দশ হতে হবে।
বর্তমান সমাজ নিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান যুগ আধুনিক যুগ, তথ্য প্রযুক্তির যুগ।এ তথ্য প্রযুক্তির সাথে তাল মিলাতে গিয়ে মায়েরা অনেক সময় সন্তানদের খোঁজ খবর নিতে সময় পাচ্ছেন না।এতে করে মা ও সন্তানদের মধ্যে দুরত্ব বাড়ছে। মায়েরা এই আধুনিক যুগে থেকেও যেন তাদের সন্তানদের একটু সময় দিতে চেষ্টা করেন। তাদের সাথে বন্ধুর মতো মনোভাব নিয়ে মিশতে হবে।
ভারতীয় টিভি সিরিয়ালগুলো সন্ধ্যা থেকেই শুরু হয়। এ সময়টা সন্তানদের নিয়ে প্রার্থনা করা, পড়ার সময়। কিন্তু মায়েরা এসব না করে সিরিয়াল দেখায় ব্যস্ত থাকে। এতে করে মায়েদের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক অবনতি ঘটছে। এগুলোকে পরিহার করে নিয়মিত পারিবারিক প্রার্থনা করলে পরিবারে সুখ, শান্তি বজায় থাকবে।
মানুষ সারাদিন কর্মব্যস্ততার পর চায় একটু চিত্তবিনোদন। এ ক্ষেত্রে টেলিভিশন একটি অন্যতম উপায়। সন্ধ্যায় মায়েরা সন্ধ্যা প্রার্থনা , ছেলেমেয়েদের পড়ালেখা শেষ করে টিভি দেখবে এটাই করা উচিত।এতে নিজের এবং পরিবারের মঙ্গল হবে।
দিপালী একজন আদর্শ মায়ের প্রতিচ্ছবি। তিনি তার সারা দিনের ব্যস্ততা পরও সমাজসেবায় নিজেকে ব্যাস্ত রাখেন। কথিত নাম কামানো বা সুনামের জন্য তিনি কিছু করেন না কখনো। এতকিছুর পরও তিনি ছেলেমেয়েদের সময় দেন এবং পরিবারের যত্ন নেন। এই মা দিবসে প্রতিটা পরিবারের মায়েরা দিপালীর মতো একজন আদর্শবান মা হয়ে উঠুক।
আরবি/আরপি/ ১৪ মে, ২০১৭