শিরোনাম :
পানজোরায় সাধু আন্তনীর তীর্থোৎসব পালিত
ডিসিনিউজ || কালীগঞ্জ
ঐতিহ্যবাহী নাগরীর পানজোরায় আজ অনুষ্ঠিত হলো মহান সাধু আন্তনীর তীর্থোৎসব। এতে দেশ-বিদেশ থেকে ভক্তগণ সাধু আন্তনীর মধ্যস্থতায় ঈশ্বরের কৃপা যাচনা করেছেন। অনেকে ধন্যবাদ দিয়েছেন মানত পূরণ হওয়ার জন্য।
পর্বীয় মহাখ্রিষ্টযাগে উপস্থিত ছিলেন ঢাকার আর্চবিশপ বিজয় ডি’ ক্রুজ, অবসরপ্রাপ্ত বিশপ থিয়োটনিয়াস গমেজ সিএসসি, ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশের বিকার জেনারেল ফাদার গাব্রিয়েল কোড়াইয়া, প্রায় ১০০ জন ফাদার, উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ব্রাদার-সিস্টারসহ হাজার হাজার খ্রিষ্টভক্ত।
নাগরী ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত ও সাধু আন্তনীর তীর্থোৎসবের আহ্বায়ক ফাদার জয়ন্ত এস গমেজ তার ধন্যবাদ বক্তব্যে বলেন, সাধু আন্তনীর পর্ব উপলক্ষে বিদেশ থেকেও প্রবাসী বাঙালিরা পানজোরায় এসেছেন। অন্যান্য ধর্মের আন্তনী ভক্তরাও এসেছেন আন্তনীর মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদ নিতে।
তিনি আরো বলেন, বিগত নয়দিনে নভেনায় গড়ে পাঁচ হাজার আন্তনী ভক্ত উপস্থিত ছিলেন। প্রতিদিন দেড়শ খ্রিষ্টভক্ত পাপাস্বীকার করেছেন নভেনা চলাকালীন সময়। পাদুয়ার সাধু আন্তনীর তীর্থোৎসবের সময় মানুষ বিভিন্ন মানত করা ছাড়াও দেশে ও জাতির কল্যাণে প্রার্থনা করে থাকেন।
উপদেশ বাণীতে ঢাকার আর্চবিশপ বিজয় ডি’ ক্রুজ ওএমআই বলেন, সাধু আন্তনী ছিলেন আদর্শ ধর্মপ্রচারক। তার জীবন আদর্শ আমাদের সকলের মেনে চলা উচিৎ। ‘মন্ডলীতে যাঁরা দীক্ষিত, তাঁরা প্রেরিত। আমরা যাঁরা খ্রিষ্ট বিশ^াসী, যীশুকে গুরু রূপে গ্রহণ করেছি- আমাদের নিকট মন্ডলীর আহ্বান আমরা যেন প্রেরণ কর্মী হই। যীশু যা শিখিয়েছেন, তা যেন অন্যদের শিখাই।
‘আমি প্রতি বছর সাধু আন্তনীর পর্বে আসি। সাধু আন্তনীর মধ্যস্ততায় প্রার্থনা করে আমার পরিবারে শান্তি এসেছে। ছেলেরা ভালো চাকরি পেয়েছে। মেয়েদের ভালো ঘরে বিয়ে দিয়েছি। অসুস্থ হলে সাধু আন্তনীর মাধ্যমে প্রার্থনা করি এবং সুস্থ হই,’ বলছিলেন তীর্থে আসা শিউলী গমেজ (৬৭)।
‘সাধু আন্তনীর প্রতি ভক্তি এবং প্রার্থনার মাধ্যমে আমি কঠিন রোগের থেকে আরোগ্য লাভ করেছি। সাধু আন্তনী আমার কাছে মানত করে অনেকেই ফল পেয়েছেন, সেই ছোটবেলা থেকে মার মুখে শুনতাম সাধু আন্তনীর কাছে প্রার্থনা করার করে অনেকেই সুস্থ হয়েছেন, হারানো কিছু ফেরত পেয়েছেন, তাই প্রতি বছর বরিশাল থেকে ছুটে আসি সাধু আন্তনীর পর্বে।‘ বলছিলেন তীর্থে আসা মানিক জয়ধর (৫২)।
পানজোরা তীর্থে অন্যান্যদের মধ্যে অংশগ্রহণ করেছিলেন ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট ইগ্নাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়া, ভাইস প্রেসিডেন্ট পাপড়ি দেবী আরেং, সেক্রেটারি মাইকেল জন গমেজ, ট্রেজারার সুকুমার লিনুস ক্রুশ, ঢাকা ক্রেডিটের ব্যবস্থাপনা পরিষদের অন্যান্য সদস্যগণ, প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিষদের সদস্যগণ, বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও, ঢাকা ক্রেডিটের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ গমেজ এবং পংকজ গিলবার্ট কস্তা, ঢাকা ক্রেডিটের নারী নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় সংসদ মেহের আফরোজ চুমকী প্রমুখ।
পর্ব উপলক্ষে নাগরীবাসীর আতিথেয়তা ছিল চোখে পড়ার মতো। শুধু কাথলিক নয়; প্রটেস্টান, হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ সব ধর্মের ও মন্ডলীর আন্তনী ভক্তরা এসেছিলেন সাধু আন্তনীর আশীর্বাদ নিতে।