শিরোনাম :
ফাদার শ্যামল রেগো আর নেই
ফাদার রেগো আজ বুধবার রমনা ক্যাথিড্রালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৫৫ বছর।
১৯ জুন মঙ্গলবার রাতে যখন ফাদার শ্যামল রেগো অতিরিক্ত শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হন, তখন তাকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরিস্থিতির উন্নতি হলে তাকে রমনা ক্যাথিড্রালে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু আজ (বুধবার) ভোর ২টা ৪৫মিনিটে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে তিনি প্রাণ ত্যাগ করেন। তিনি বিগত একবছর যাবত বোনক্যান্সার ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছিলেন।
ফাদারের শেষ কৃত্যানুষ্ঠানে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানায় ঢাকা ক্রেডিটের ভাইস-প্রেসিডেন্ট শীরেন সিলভেষ্টার গমেজ, ক্রেডিট কমিটির সদস্য জেমস নিখিল দাস, সুপারভাইজারি কমিটির সেক্রেটারি মানিক লরেন্স রোজারিও, সিও সুইটি সি পিউরীফিকেশনসহ ঢাকা ক্রেডিটের কর্মীবৃন্দ।
বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের পক্ষে ফাদারকে শেষ শ্রদ্ধাঞ্জলির মাধ্যমে সম্মান প্রদর্শন করেন বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও, মহাসচিব হেমন্ত আই. কোড়াইয়া এবং বিসিএ-এর বিভিন্ন শাখার নেতৃবৃন্দ। দি মোট্রোপলিটান খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লি:-এর চেয়ারম্যান আগষ্টিন পিউরীফিকেশন, ম্যানেজার রতন এইচ.পিউরীফিকেশনসহ অন্যান্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দও ফাদারকে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করেন।
ফাদার শ্যামল লরেন্স রেগো ১৯৬৩ সালের ২৬ ফ্রেব্রুয়ারি কালীগঞ্জের নাগরী ধর্মপল্লীর ভুরুলিয়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৬৯ সালে তিনি নাগরী মিশনের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং ১৯৮০ সালে সেন্ট নিকোলাস উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন এবং একই সালে বান্দুরা সেমিনারীতে প্রবেশ করেন। রমনা সেমিনারী থেকে নটর ডেম কলেজে ১৯৮২ সালে ইন্টারমিডিয়েট এবং ১৯৮৪ সালে ডিগ্রী পাস করেন। তিনি ১৯৮৬-১৯৯১ সাল পর্যন্ত বনানী মেজর সেমিনারীতে পড়াশোনা করেন। যাজক হিসেবে অভিষিক্ত হন ১৯৮২ সালের ২৮ ডিসেম্বর নিজ ধর্মপল্লী নাগরীতে।
ফাদার শ্যামল যাজক হিসেবে সেবা দিয়েছেন তুমিলিয়া, রমনা ক্যাথিড্রাল, তেজগাঁও, ধরেন্ডা, শোলপুর, তুইতাল ও রাঙ্গামাটিয়া ধর্মপল্লীতে। যাজকীয় জীবনে একযুগ সহকারী পাল-পুরোহিত এবং এক যুগ পাল-পুরোহিত হিসেবে কাজ করেন। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে তিনি যাজকীয় জীবনের রজত জয়ন্তী পালন করেন।
তিনি ছিলেন ধার্মিক, কোমল হৃদয়, সাহায্যপরায়ন ও প্রকৃতিপ্রেমী। বাংলাদেশ কাথলিক মন্ডলীতে আহ্বান বৃদ্ধির জন্য ফাদার শ্যামলের অবদান অনেক।
আজ বিকাল পাঁচটায় রমনা ক্যাথিড্রালেই খ্রিষ্টযাগ উৎসর্গ করেন কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও সিএসসি এবং সহকারী বিশপ শরৎ ফ্রান্সিস গমেজ। এ ছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন প্রায় ৬০ জন যাজক, শতাধিক সিস্টার, এসপাইরেন্ট, সেমিনারীয়ানসহ ছয় শতাধিক খ্রিষ্টভক্ত।
আগামীকাল (২১ জুন) বিকাল ৪টা ৩০ মিনিটে তাঁর নিজ ধর্মপল্লী নাগরীতে তাঁর শেষ কৃত্যের খ্রিষ্টযাগ উৎসর্গ করা হবে এবং নাগরী কবরস্থানেই সমাহিত করা হবে।
এইচআর/আরপি/আরআর/২০জুন২০১৮